স্বজনহারা: ধ্বংস হয়ে যাওয়া টোটো দেখছেন মৃত চালক মহম্মদ ইলিয়াস শেখের দাদা মতিউর রহমান। নিজস্ব চিত্র
ভিন্ রাজ্যে কাজে ছিল অনীহা। ঋণ নিয়ে বছর তিনেক আগে কিনেছিলেন টোটো। সেই টোটোতেই বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হলেন কালিয়াচকের সুজাপুরের বক্ষ্মত্তর গ্রামের মহম্মদ ইলিয়াস শেখ (২৪)। ওই ঘটনার কথা ভেবেই শিউরে উঠছেন পরিবার-পরিজন, পাড়া-পড়শিরা। শোকের মধ্যেও বিস্ফোরণের কারণ দ্রুত সামনে আনার দাবিতে সরব হয়েছেন তাঁরা।
আড়াই বছর আগে কালিয়াচকের বাখরপুর গ্রামের ফাতিজা বিবির সঙ্গে বিয়ে হয় ইলিয়াসের। তাঁদের ছ’মাসের মেয়ে রয়েছে। তিন ভাইদের মধ্যে ইলিয়াস ছোট। গ্রামে শান্ত, নিরীহ স্বভাবের ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। তাঁর বাবা আতাবুল শেখ বলেন, “ছেলে আমাদের ছেড়ে থাকতে পারত না। তাই কখনও ভিন্ রাজ্যে কাজে যেতে চায়নি। ঋণ নিয়ে টোটো কিনে সংসার চালাত। আমাদের দেখভাল করত। সেই ছেলেই চিরকালের জন্য দূরে চলে গেল।”
বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ ইংরেজবাজার শহরের ঘোড়াপীর সংলগ্ন ঘোষপাড়া এলাকায় চলন্ত টোটোয় বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় চালকের দেহের একাংশ। প্রথমে টোটোচালকের নাম পরিচয় জানা যায়নি। সংবাদমাধ্যমে হইচই হতেই বিষয়টি নজরে পরে পরিবারের লোকেদের। তার পরেই পরিবারের লোকেরা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
প্রশ্ন কোথায়
• টোটোচালকের আসনের নীচের ব্যাটারি বিস্ফোরণ হলে মৃতের দেহের নিম্নাংশ কী ভাবে অক্ষত থাকল?
• টোটোর উপরের দিক দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে। অথচ, নিচে তেমন ক্ষতি হয়নি।
• টোটোয় প্লাইউড, সানমাইকা, কোনও তরলের জার যাত্রীর আসনে ছিল। তবে কি সেখানেই লুকিয়ে রহস্য?
প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, টোটোর ব্যাটারি থেকে বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে। তবে সেই তত্ত্ব মেনে নিতে পারছেন না পরিবারের লোকেরা। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সুজাপুর থেকে ১৪ দিন আগে টোটোর জন্য নতুন চারটি ব্যাটারি কিনেছিলেন ইলিয়াস। টোটোর নিয়মিত যত্ন করতেন। নিয়ম মেনে টোটো চার্জ দেওয়া থেকে শুরু করে খুঁটিনাটি সমস্ত বিষয় দেখতেন।
মৃতের বড় দাদা মতিউর রহমান বলেন, “তিন বছর ধরে ভাই টোটো চালাচ্ছে। কালিয়াচকেও হাজার হাজার টোটো চলাচল করে। টোটোয় এ ভাবে বিস্ফোরণ হয়ে এক জন ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে তা ভাবা যায় না। আমরা চাই ঘটনার সিবিআই তদন্ত করা হোক।” সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন মৃতের কাকা মহম্মদ খলিল শেখও।
বৃহস্পতিবার মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে বিকেলে বক্ষ্মত্তর গ্রামে পৌঁছয় ইলিয়াসের দেহ। গ্রামে উপচে পড়ে ভিড়। পুলিশ জানিয়েছে, জেলা পুলিশের পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের বিশেষ দলও ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy