ছবি: সংগৃহিত।
নেওড়ার জঙ্গলে বাঘ আছে, এই নিয়ে সংশয় নেই। কিন্তু মে-জুন মাসে কি তা নেমে পাহাড়ি জঙ্গল লাগোয়া লোকালয়ের কাছে চলে আসে?এই প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব বন দফতরের কাছে এই মুহূর্তে নেই। দফতরসূত্রে বলা হচ্ছে, বর্ষায় যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে ফেব্রুয়ারি-মার্চে ট্র্যাপ ক্যামেরা খুলে ফেলা হয়। সে জন্য এই সময়টায় নজরদারি করা হয় না। অথচ, নেওড়া ভ্যালির কোথায় কখন বাঘ দেখা যাবে, তা বন দফতরের বিশেষজ্ঞরাও হলফ করে বলতে পারেন না।
কেন উঠছে এমন প্রশ্ন? বন দফতরেরই একটি অংশের বক্তব্য, আগে যে সব গ্রামে পর্যটকেরা ঢুকতেনও না, নেওড়া ভ্যালির জঙ্গলের ভিতরের সেই সব গ্রামে এখন হোম স্টে গড়ে উঠেছে। যার অধিকাংশই এখন পর্যটকদের পছন্দের জায়গা হিসেবে দ্রুত জনপ্রিয়তাও লাভ করেছে। ফলে একদা নির্জল এই সব জায়গা এখন পর্যটন মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এর মধ্যে কোলাখামের মতো জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র নেওড়াভ্যালি অভয়ারণ্যের মধ্যে।সেখানে ঢুকতে গেলে বন দফতরের অনুমতি নিয়ে সেখানে টাকা জমা করতে হয়। বন দফতরের একাংশ মনে করছে, এমন অবস্থায় বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। বিশেষ করে এর আগে যখন জঙ্গল ছাড়াও লাভা-কালিম্পং রাস্তায় বাঘ দেখা গিয়েছে। আর বাঘ বার হলে সেটা অতুৎসাহী পর্যটকদের জন্য বিপদের কারণও হতে পারে।
২০১৩ সালে কালিম্পং বন বিভাগের একটি বিরাট অংশ নেওড়া ভ্যালি জাতীয় উদ্যানেরসঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয়। তাকে আরও বড় এলাকা এই জঙ্গলের আওতায় চলে আসে। কিন্তু সেই অনুযায়ী বাড়েনি বনকর্মীর সংখ্যা। এমনই দশা যে, আজও গরুমারা জাতীয় উদ্যান থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরের নেওড়া ভ্যালি জাতীয় উদ্যানকে একটি বন বিভাগ বা ফরেস্ট ডিভিশনের অন্তর্গত করেই রাখা হয়েছে। ডিএফও এক জনই। তাঁর মূল দফতর নেওড়া ভ্যালি থেকে ১১০ কিমি দূরের জলপাইগুড়ি শহরে।
ডিএফও অংশু যাদব বলেন, ‘‘নেওড়া ভ্যালির কোর এলাকায় কোনও হোম স্টে নেই। আমরা তা হতে দেবও না।’’ কিন্তু কোর আর বাফার এলাকার ভেদ তো বাঘ বোঝে না। পরিবেশকর্মীদের দাবি, বাঘ লোকালয়ের খুব কাছে থাকতে অপছন্দ করে না। প্রাথমিক খাবার হিসেবে তাদের পছন্দ গৃহপালিত জন্তু। পর্যটকদের আনাগোনা থেকে হয়তো সামান্য দূরেই নীরবে সন্তপর্ণে সব কিছুর উপর সে খেয়াল রাখছে। এই পরিস্থিতি সামলাতে নেওড়াকে বাঘেদের অভয়ারণ্য করতেই হবে। না হলে ঢিলেঢালা মনোভাব বদলাবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy