ধ্বংস: শ্বেতিঝোরার কাছে ধস নেমে বন্ধ রাস্তা। নিজস্ব চিত্র
রাতভর টানা বৃষ্টি। সেই পাহাড়ের উপর থেকে জলের সঙ্গে মাটি কাদা, নুড়ি পাথর নেমে আসছিল। ভোরের আলো ফুটতেই বাসিন্দারা দেখেন, রাস্তায় কোথাও এক হাঁটু কাদা। কোথায় পাথর, ভাঙা গাছ। এই ভাবেই বৃহস্পতিবার সকালে সেবক এবং লাগোয়া এলাকায় পরপর ধসে বন্ধ হয়ে যায় শিলিগুড়ি থেকে ডুয়ার্সগামী ৩১ নম্বর এবং কালিম্পং, সিকিমগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। সেবক রেলগেট, বাজার থেকে ছোট বড় গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। প্রায় ছ’ঘণ্টার চেষ্টায় ধস সরিয়ে দুপুর নাগাদ ডুয়ার্সের রাস্তা খোলা গিয়েছে। সেবক কালীবাড়ির এবং করোনেশন সেতুর কাছে ধসও পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু কালীঝোরা লাগোয়া শ্বেতিঝোরায় ধস নামতে থাকায় রাস্তা খোলা সম্ভব হয়নি। তাতে ঘুরপথে চলছে সিকিম ও কালিম্পঙের সঙ্গে যোগাযোগ।
এ দিন সকাল থেকে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে সেবক আউটপোস্ট, সেবক কালীবাড়ি এবং মংপং এলাকায় ধস নামে। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের কালীঝোরা এবং শ্বেতিঝোরায় ধস নেমেছিল। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কটি আপাতত পরিষ্কার করা গেলেও প্রবল বৃষ্টিতে আবার ধসের আশঙ্কা থেকেই গিয়েছে। পূর্ত এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে তৈরি রাখা হয়েছে। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কটি আজ, শুক্রবারের মধ্যে খোলার চেষ্টা চলছে। কালীঝোরার ধস সামলানো গেলেও শ্বেতিঝোরায় পাথর পড়েই চলছে। ফলে পরিস্থিতি এখনও ভয়ঙ্কর।
দার্জিলিঙের জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়া বলেন, ‘‘ওই দুই জাতীয় সড়কে ধসের জেরে পথ খারাপ হয়েছে। আমরা পাথর, মাটি সরিয়ে রাস্তা খোলার চেষ্টা করছি। রাতদিন এলাকার নজর রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
সেবকেশ্বরী কালীমন্দির এলাকায় ধসের সঙ্গে পথ আটকে পড়ে প্রকাণ্ড গাছ। এর জেরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অবরুদ্ধ হয়ে রইল শিলিগুড়ি গামী ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক। সিকিম এবং ডুয়ার্স দুই প্রান্তেরই যাত্রীরা এর ফলে ভোগান্তির মুখে পরেন। একাধিক যন্ত্রের সাহায্যে দুপুর ২টো নাগাদ রাস্তা থেকে ধস ও গাছ সরিয়ে ফের যান চলাচল শুরু হয়।
নামচির চালক প্রেমা ভুটিয়া বলেন, ‘‘ভোরে শিলিগুড়ি থেকে ফিরছিলামা। তাতেই বিপাকে পড়ি।’’ মালবাজারে কাজে যাচ্ছিলেন শিলিগুড়ির বাসিন্দা সঞ্জয় দাস। তিনি বলেন, ‘‘টানা বৃষ্টিতে রাস্তা খারাপ হবে আঁচ করেছিলাম। কিন্তু এমন হবে ভাবিনি।’’
এ দিন বেলা বাড়তেই গাড়ির চালকেরা কোনওক্রমে গাড়ি ঘুরিয়ে ঘুরপথে ডুয়ার্স, কালিম্পং-গ্যাংটক যাওয়া শুরু করেন। শিলিগুড়ির বিভিন্ন স্ট্যান্ডে খবর পৌঁছে যাওয়ায় সব গাড়ি ঘুরপথে চলতে থাকে। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিঙের জোরবাংলো হয়ে তিস্তাবাজারে এসে কালিম্পং, গ্যাংটক যাওয়া শুরু হয়। আবার গজলডোবা, ওদলাবাড়ি দিয়ে ডুয়ার্স যাওয়া শুরু হয়। তাতে যাত্রীদের প্রচুর টাকা বেশি গাড়ি ভাড়া দিতে হয়েছে।
অন্য দিকে, কার্শিয়াং, মিরিকেও ছোট ছোট ধস নেমেছে। তবে রাস্তা বন্ধ হয়নি। কার্শিয়াঙে একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শন করে বাসিন্দাদের ক্ষতিপূরণ এবং রাস্তা সারাই করার দ্রুত আশ্বাস দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy