উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন এসএফআই ও ডিএসও-র ডাকা ছাত্র ধর্মঘট নিয়ে উদ্বেগে পরীক্ষার্থী, অভিভাবকেরা। সোমবার ডিএসও-র ডাকা ছাত্র ধর্মঘট ঘিরে পুলিশও তৎপর রয়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। অভিভাবকদের অনেকেরই দাবি, পুলিশ-প্রশাসন যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়, যাতে কোনও ভাবেই পরীক্ষার্থীদের বিপাকে পড়তে না হয়। ডিএসও-র তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, ছাত্র ধর্মঘটের আওতার বাইরে থাকবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষার্থীদের কোনও সমস্যা হোক, তা তারাও চায় না বলে আশ্বস্ত করেছে সংগঠনটি।
শিলিগুড়ি থেকে ডিএসও-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর অন্যতম অপূর্ব মণ্ডল বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কোনও সমস্যা হবে না। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের ধর্মঘট চলবে।’’ টিএমসিপি-র তরফে জানানো হয়েছে, ছাত্র ধর্মঘটের বিরোধিতায় সংগঠনের নেতা-কর্মীরা রাস্তায় থাকবেন। পরীক্ষার্থীদের যাতে সমস্যা না হয়, সে দিকে নজর রাখা হবে।
তবে পুলিশ কোনও ঝুঁকি নিয়ে চায় না। উত্তরের বিভিন্ন জেলায় জাতীয় ও রাজ্য সড়কে অতিরিক্ত পুলিশ ও ট্র্যাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। মূলত, যানজট মোকাবিলা ও পরীক্ষার্থীদের সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিতে ওই উদ্যোগ। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার উমেশ খণ্ডবহালে বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠু ভাবে সঠিক সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারে, সে দিকে পুলিশ নজর রাখবে।’’ দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তল, আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী জানান, পুলিশ প্রস্তুত। কোথাও অবরোধ হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। পরীক্ষার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারে, সে দিকে নজর রাখা হবে।
তবে, কিছুটা হলেও উদ্বেগে রয়েছেন পরীক্ষার্থী, অভিভাবকেরা। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের দেবী চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘মেয়ের প্রথম দিনের পরীক্ষা। তিলন হাইস্কুলে সিট পড়েছে। কিন্তু ছাত্র ধর্মঘটের কথা শুনে একটু উদ্বেগে রয়েছি।’’ ময়নাগুড়ির বাসিন্দা শুভেন্দু মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে, তুফানগঞ্জের বাসিন্দা রঞ্জিত সেনের মেয়েও উচ্চ মাধ্যমিক দেবেন। তাঁরাও উদ্বেগে। শুভেন্দু বলেন, ‘‘জানি না, পথের পরিস্থিতি কী হবে। তবে পরীক্ষাকেন্দ্রে তো পুলিশ থাকবেই। আশা করছি, কোনও সমস্যা হবে না। তবে উদ্বেগ তো থাকেই।’’ রাস্তায় যাতায়াত নিয়ে চিন্তা রয়েছে বলে জানান রঞ্জিতও।
উত্তরবঙ্গে ৫৫৬টি কেন্দ্রে প্রায় ১ লক্ষ ২৯ হাজার ৭৫৭ জন পরীক্ষার্থী রয়েছেন। প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধায় উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার তরফে অতিরিক্ত বাস চালানোর কথা জানানো হয়েছে। বনাঞ্চল এবং লাগোয়া এলাকায় নজরদারি চালাবে বন বিভাগ। প্রয়োজনমতো তারাও গাড়ি করে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)