আনাজের পসরা বালুরঘাটের মণিমেলা বাজারে। ছবি: অমিত মোহান্ত।
শীত পড়েছে। গৌড়বঙ্গের মালদহ ও দুই দিনাজপুরের বেশিরভাগ এলাকায় কুয়াশার দাপটও শুরু হয়েছে। সাধারণত, শীত পড়লেই বাজারগুলি ফুলকপি, বাঁধাকপি-সহ শীতকালীন আনাজে ছেয়ে যায়। দামও নামে। কিন্তু এ বার শীত পড়লেও বাজারগুলিতে আনাজের জোগান যেমন কম, তেমনই দামও চড়া। পাইকারি বাজারে চেয়ে খুচরো বাজারে আনাজের দামেও বিস্তর ফারাক থাকছে। ন্যূনতম ৪০ টাকা কেজির নীচে কোনও আনাজই মিলছে না গৌড়বঙ্গের তিন জেলায়!
আর সেই আনাজ কিনতে এই শীতে গৃহস্থের হাতে কার্যত ছেঁকা লাগছে। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, আনাজের দাম চড়া থাকলেও টাস্ক ফোর্সের দেখা নেই কেন? তিন জেলার প্রশাসনের অবশ্য দাবি, টাস্ক ফোর্স নিয়মিতই বাজারগুলিতে নজরদারি চালাচ্ছে। আর ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, ৭ দিনের মধ্যে বাজার আনাজে ছেয়ে যাবে। দামও নামবে।
রবিবার সাতসকালেই চাদর মুড়ি দিয়ে মালদহের রথবাড়ি বাজারে যান পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক রতন সরকার। সেখানে শাক-আনাজের দাম শুনেই মুখ বেজার তাঁর। রতন বলেন, “প্রতি বছর এই সময়ে ১০০ টাকার আনাজ কিনলে থলে ভরে যায়। কিন্তু এ বার সব কিছুরই দাম বেশি।” একই ছবি মালদহ সদরের মকদুমপুর, চিত্তরঞ্জন, ঝলঝলিয়া, ২ নম্বর গভর্নমেন্ট কলোনির বাজারেও। মকদুমপুর বাজারের এক খুচরো আনাজ বিক্রেতা বলেন, “আমরা পাইকারি বাজার থেকেই বেশি দামে আনাজ কিনি। লাভ রেখে বিক্রি করলে দাম বেশি পড়ে।” পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, “পাইকারি বাজারে আনাজের দাম কমেছে। কিছু খুচরো ব্যবসায়ী বেশি ফায়দা লুটতে দাম বেশি রাখছে।”
রবিবার আনাজের বাজারে উপচে পড়া ভিড় থাকে। এ দিন রায়গঞ্জের মোহনবাটী বাজার, এফসিআই বাজার, ইটাহারের চৌরাস্তা বাজার-সহ উত্তর দিনাজপুরের বিভিন্ন বাজারে আনাজের দোকানে ভিড় দেখা যায়নি। বিভিন্ন বাজারের আনাজ ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, পুরোদমে শীত পড়লেও আনাজের দাম নিয়ন্ত্রণে আসছে না। ফলে, জেলার আনাজের বাজারগুলিতে ক্রেতাদের ভিড় কমছে। রায়গঞ্জের মোহনবাটী বাজারের খুচরো আনাজ ব্যবসায়ী কমলেশ সাহা বলেন, “একে বাইরে থেকে বিভিন্ন আনাজ আসছে। তার উপর স্থানীয় চাষিরাও শীতকালীন বিভিন্ন আনাজের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। ফলে খুচরো বাজারে দাম বাড়ছে।”
সপ্তাহান্তে বাড়িতে আত্মীয়। থলে হাতে বালুরঘাটের পাওয়ার হাউজ বাজারে এসেছিলেন রামকৃষ্ণপল্লির তন্ময় মণ্ডল। কিন্তু বাজারে সিম ৭০ টাকা কেজি। কাঁচা লঙ্কা, ক্যাপসিকাম, মটরশুঁটি, গাজরে হাত ছোঁয়ানো দায়। পেঁয়াজকলিও দেড়শো টাকা। শীতের মরশুমের এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখে তন্ময় বলেন, “শীতে এত দামে আনাজ আগে কিনিনি।” দক্ষিণ দিনাজপুরের সাহেবকাছারির আনাজ ব্যবসায়ী সজল সরকার বলেন, “শীতের আনাজ বাইরে থেকে আসছে। তাই দাম বেশি পড়ছে।”
তথ্য: জয়ন্ত সেন, গৌর আচার্য, শান্তশ্রী মজুমদার
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy