Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Governor CV Ananda Bose Visits to Dinhata

বিরোধী দলগুলির সঙ্গে কথা বলার পর দিনহাটা রওনা রাজ্যপালের, বোস-সাক্ষাতে সন্তুষ্ট নিশীথ

গত কয়েক দিন ধরে অশান্ত কোচবিহার জেলার বিভিন্ন এলাকা। রাজনৈতিক সংঘর্ষে প্রাণহানিও হয়েছে। এই আবহে রাজ্যপাল বোস যাচ্ছেন উপদ্রুত এলাকাগুলিতে। ইতিমধ্যে তিনি দিনহাটার দিকে রওনা হয়েছেন।

Governor CV Ananda Bose meets with BJP, CPM and Congress leaders and goes to see injured persons in pre poll violence in Cooch Behar

কোচবিহার সার্কিট হাউসে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (মাঝখানে)। তাঁকে ঘিরে বিজেপির প্রতিনিধি দল। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৩ ১২:৪৯
Share: Save:

কোচবিহারে পৌঁছেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জানান, যে কোনও রাজনৈতিক দলের জন্য তাঁর দুয়ার অবারিত। শনিবার সকালে দেখা গেল রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য কোচবিহার সার্কিট হাউসের সামনে ভিড় বিরোধীদের। তার মধ্যে যেমন বিজেপি বিধায়কদের প্রতিনিধি দল ছিল, তেমনই ছিলেন ‘আক্রান্ত’ বিজেপি কর্মীও। ছিলেন কংগ্রেস এবং সিপিএমের নেতারাও। তাঁরা একে একে শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান রাজ্যপালকে। তাঁরা সবাই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার পর সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কোচবিহার সার্কিট হাউস থেকে বেরিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকও জানালেন তাঁরা রাজ্যপালের কথায় আশ্বস্ত হয়েছেন। আশা করছেন, পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক হিংসা বন্ধ হবে। অন্য দিকে, রাজ্যপালের ভূমিকায় রাজনীতি দেখছে শাসকদল তৃণমূল। এর মধ্যে ‘অশান্ত’ দিনহাটার উদ্দেশে রওনা দেন রাজ্যপাল বোস।

কোচবিহার সার্কিট হাউসে বিজেপি, বাম এবং কংগ্রেস প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলার পর রাজ্যপাল প্রথমেই চলে যান জেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে রাজনৈতিক সংঘর্ষে আহত বিজেপি কর্মীরা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে দিনহাটার দিকে ছোটে রাজ্যপালের গাড়ি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে রাজ্যপালের আশপাশে জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপার থেকে শাসকদলের কোনও প্রতিনিধিকে শনিবার দেখতে পাওয়া যায়নি।

গত ২ জুন নিজের বাড়িতেই দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন বিজেপি কর্মী প্রশান্ত রায় বসুনিয়া। দিনহাটা যাওয়ার পথে পুটিমারিতে প্রশান্তের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ বলেন, ‘‘সমগ্র কোচবিহার জুড়ে যে ভাবে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে শাসকদল তৃণমূলের গুন্ডারা অত্যাচার করছে, তা আগে এই জেলার মানুষ দেখেননি। তৃণমূল পরিষ্কার ভাবে বুঝে গিয়েছে যে, তাদের পায়ের তলার জমি এখানে সরে গিয়েছে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার বার আগমন ঘটছে জেলায়। কিন্তু কোচবিহারে ওঁদের কোনও মূল্য নেই। এই জন্য মুখ্যমন্ত্রী তার পুলিশ দিয়ে দমনপীড়ন করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এই সব কথা আমরা রাজ্যপালকে জানিয়েছি।’’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘কোচবিহারের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আমরা চাই, তাঁরা সুষ্ঠু ভাবে ভোটটা (পঞ্চায়েত ভোট) দিন। যে দলকেই তাঁরা সমর্থন করুন, যেন নিজের ভোটটা নিজে দিতে পারেন। কোচবিহারের এই পরিস্থিতি বদল হোক।’’ নিশীথ দাবি করেন, রাজ্যপাল বোস তাঁদের সমস্ত কথা শুনেছেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন। মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন, এই বিষয়ে বোস আশ্বাস দিয়েছেন।

যদিও এই গোটা বিষয়টিকে আমল দিতে নারাজ তৃণমূল। তাদের দাবি, জেলায় শাসকদলের নেতা-কর্মীরাও আক্রান্ত হয়েছেন। কয়েক দিন আগেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক তৃণমূল কর্মীর। কিন্তু তাঁকে পাচারকারী বলে দাগিয়ে দিয়েছেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তৃণমূল মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘বিএসএফও কোচবিহারের সীমান্তবর্তী এলাকায় তৃণমূলকে ভোটপ্রচারে বাধা দিচ্ছে। সে নিয়ে রাজ্যপালের ভূমিকা কী হবে?’’ তৃণমূল নেতার দাবি, যুক্তরাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে ভেঙে ফেলতে চায় বিজেপি। কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে নানা ভাবে তৃণমূলকে হেনস্থার চেষ্টা হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে রাজ্যপালের ‘সক্রিয়তা’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy