Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Jalpaiguri Sadar Hospital

‘নিরাপদ’ নয় ছাত্রী হস্টেল, প্রসূতি বিভাগও

নার্সিং ট্রেনিং স্কুলের হস্টেলের জনাকয়েক ছাত্রী উঁকি দিয়েই ভয়ে জানালা বন্ধ করে দিচ্ছেন। খানিকক্ষণ পরে পরিচয় পেয়ে কয়েকজন ছাত্রী বাইরে এসে কথা বললেন।

গার্লস হোস্টেলের সামনে রাত্রিবেলা মহিলা পুলিশের নজরদারি উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ক্যাম্পাসের ভিতরে।

গার্লস হোস্টেলের সামনে রাত্রিবেলা মহিলা পুলিশের নজরদারি উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ক্যাম্পাসের ভিতরে। ছবি বিনোদ দাস।

অর্জুন ভট্টাচার্য  
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৪ ০৯:৩২
Share: Save:

রাত তখন সওয়া ৯টা। জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের জেলা সদর হাসপাতাল চত্বরের নার্সিং ট্রেনিং স্কুলের ছাত্রী হস্টেলের প্রধান ফটক খোলা। ফার্মাসি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের ছাত্রদের পরিত্যক্ত হস্টেলের পাশেই জলপাইগুড়ি নার্সিং ট্রেনিং স্কুলের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীদের হস্টেল। হস্টেল লাগোয়া এলাকায় চারপাশে ঘন ঝোপ-জঙ্গল। ফার্মাসি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের খেলার মাঠে তৈরি হচ্ছে মেডিক্যালের শিক্ষক চিকিৎসকদের আবাসন। নির্মাণ শ্রমিকেরা আশ্রয় নিয়েছেন ফার্মাসির ছাত্রদের পরিত্যক্ত হস্টেলে। ঘন ঝোপ-জঙ্গল লাগোয়া নার্সিং ট্রেনিং স্কুলের ছাত্রীদের হস্টেলে যাতায়াত করতে হয় জল-কাদায় থিক থিক করা মেঠো পথ দিয়ে। সব মিলিয়ে গা ছমছমে একটা পরিবেশ।

নার্সিং ট্রেনিং স্কুলের হস্টেলের জনাকয়েক ছাত্রী উঁকি দিয়েই ভয়ে জানালা বন্ধ করে দিচ্ছেন। খানিকক্ষণ পরে পরিচয় পেয়ে কয়েকজন ছাত্রী বাইরে এসে কথা বললেন। তাঁদের কথায়, এক জন নিরাপত্তারক্ষী রাতে থাকেন। জানালেন, ভয় তো তাঁদের প্রতি রাতের সঙ্গী। জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ কয়েক মাস আগেই বন্ধ করে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তবে ২৪ ঘণ্টা এক জন নার্সিং স্টাফ থাকেন জরুরি বিভাগে। রাতে এক জন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞও এই জরুরি বিভাগে থাকেন বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। কিন্তু এখানেও রাতে সব সময় নিরাপত্তারক্ষীর দেখা মেলে না বলে কর্তব্যরতরা জানিয়েছেন। রোগীদের বাড়ির লোকেদের প্রতীক্ষালয়েও নেই কোনও নিরাপত্তারক্ষী। এই হাসপাতালের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবের অন্তঃসত্ত্বাদের ঘরের জানালা দিয়ে অবাধে বাড়ির লোকেরা উঁকি দিচ্ছেন।

জেলা সদর হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবন চত্বরেও নিরাপত্তারক্ষীর দেখা মেলেনি। দেখা মেলেনি কর্তব্যরত নৈশপ্রহরীরও। উন্মুক্ত পরিবেশে এই চত্বরে রাতে অসামাজিক কাজকর্মের আসরও বসে বলে অভিযোগ। জেলা সদর হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর না থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। এই হাসপাতালে প্রয়োজনের তুলনায় নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা যথেষ্টই কম বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। মেডিক্যালের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে বেসরকারি সংস্থার তিন জন নিরাপত্তারক্ষী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রধান গেটে থাকেন। জরুরি বিভাগে রাতে এক জন পুলিশ কনস্টেবলও থাকেন। তবে সব ওয়ার্ডে নিরাপত্তারক্ষী থাকার কথা থাকলেও কার্যত রাতে সব ওয়ার্ডে নিরাপত্তারক্ষীদের দেখা পাওয়া যায়নি।

দুই হাসপাতালেই নিরাপত্তার অভাব যে খানিকটা রয়েছে তা স্বীকার করেছেন কর্তৃপক্ষ। নেই পুলিশ ফাঁড়িও। তবে আরজি করের ঘটনার পর থেকে রাতে মাঝে মধ্যে পুলিশি টহলদারি বাড়ানো হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রবীরকুমার দেব বলেন, ‘‘নিরাপত্তার অভাব তো খানিকটা রয়েছে। জেলা সদর হাসপাতাল চত্বরের নার্সিং ট্রেনিং স্কুলের ছাত্রীদের হস্টেলের নিরাপত্তা বাড়ানো খুবই জরুরি। দুই হাসপাতালের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy