মশা তাড়াতে স্প্রে। নিজস্ব চিত্র
গত কয়েক দিন ধরে এলাকায় যে হারে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছিল, তাতে করে বিভিন্ন মহলে আশঙ্কার মেঘ তৈরি হয়েছিল। অবশেষে সেই আশঙ্কাকে সত্যি প্রমাণ করে এ বছর জয়গাঁয় প্রথম ডেঙ্গির বলি হল পঞ্চম শ্রেণির স্কুল ছাত্রী গুণী বর্মণ (১০)। মঙ্গলবার রাতে শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
আলিপুরদুয়ারের উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে গুণী ও তার বোন কয়েক দিন আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি ছিল। পরে গুণীর ছোট বোন সুস্থ হয়ে ওঠে। গুণীকে তার বাড়ির লোকেরা শিলিগুড়িতে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে বলা হয়, ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েই গুণীর মৃত্যু হয়।
সীমান্তের ওপারেই ফুন্টসিলিংয়ে এ বছর ব্যাপক ডেঙ্গি হচ্ছে। সেখান থেকেই জয়গাঁয় ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে বলে দাবি। খোদ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, রোজই জয়গাঁয় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, জয়গাঁর ভানুভক্ত টোল এলাকায় বাড়ি গুণীর। স্থানীয় একটি বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী সে। গত ১০ অগস্ট গুণী ও তার থেকে দেড় বছরের ছোট বোন শর্মিষ্ঠা একসঙ্গে জ্বরে আক্রান্ত হয়। এলাকার চিকিৎসকদের পরামর্শ শুনে দু’দিন পর দু’বোনকেই আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গুণীর পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, শুরুতে গুণীর চেয়ে শর্মিষ্ঠার জ্বর বেশি ছিল। তাকে আইসিইউ-তে পর্যন্ত রাখতে হয়। তার পর শর্মিষ্ঠা ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলেও গুণীর জ্বর বাড়তে থাকে। রবিবার শিলিগুড়ি নিয়ে যাওয়ার আগে গুণীকেও আইসিইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়। ওই দিনই সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে যায় শর্মিষ্ঠা।
গুণীর ঠাকুমা টুলি বর্মণের অভিযোগ, ‘‘আমাদের প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল গুণীর ডেঙ্গি হয়েছে। কিন্তু জেলা হাসপাতালের ডাক্তারদের বারবার বলা সত্ত্বেও তাঁরা বিষয়টি নিয়ে কিছু বলেননি। শিলিগুড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে এই নিয়ে আমরা নিশ্চিত হই। তার পরও নাতনিকে বাঁচাতে পারলাম না।’’ জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা অবশ্য জানিয়েছেন, জেলা হাসপাতালে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েই গুণীর চিকিৎসা করা হয়েছে।
গুণীর মৃত্যু ডেঙ্গির কারণেই কি না তা নিয়ে বুধবার দিনভর নানা মহলে জল্পনা চলতে থাকে। সূত্রের খবর, গুণীর মৃত্যুর শংসাপত্রে মৃত্যুর কারণ হিসেবে রিফ্রেক্টরি সেপটিক শকের কথা উল্লেখ করেছেন শিলিগুড়ির বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তবে রাতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে মেনে নেওয়া হয়, ডেঙ্গিই মৃত্যুর কারণ।
দিন দুয়েক আগে জয়গাঁয় জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এক কিশোরীর মৃত্যুর কারণও ডেঙ্গি বলে কোনও কোনও মহল থেকে দাবি করা হয়। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের তরফে সাফ জানান হয়, ওই কিশোরী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হননি। তবে গুণীর মৃত্যুর প্রেক্ষিতে বুধবার জয়গাঁ উন্নয়ন পর্ষদের দফতরে এলাকার বেসরকারি স্কুলের প্রধানদের ডেকে বোঝানো হয়, ডেঙ্গি মোকাবিলায় তাদের কী করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy