২০০৩ সালে তলিয়ে যাওয়া পঞ্চানন্দপুরের েসই গঙ্গাভবন। ছবি: সেচ দফতর মালদহ ডিভিশন
একটা সময়ে মালদহের গৌড়, আদিনা, পান্ডুয়ার ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত স্থাপত্য শৈলীর সঙ্গে পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু ছিল পঞ্চানন্দপুরের গঙ্গা পাড়ে থাকা ‘গঙ্গাভবন।’ সেই গঙ্গাভবন ও সংলগ্ন এলাকা থেকে গঙ্গার সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগের অমোঘ আকর্ষণে ছুটে যেতেন মালদহ জেলা তো বটেই দুই দিনাজপুর এবং মুর্শিদাবাদেরও অসংখ্য বাসিন্দা। ওই ভবনকে ঘিরেই সেখানে গড়ে উঠেছিল পিকনিক স্পট। তবে মালদহের ‘রূপকার’ বলে পরিচিত তৎকালীন সেচ মন্ত্রী প্রয়াত বরকত গনি খান চৌধুরীর প্রচেষ্টায় তৈরি সেই গঙ্গা ভবনটি মাত্র ২৮ বছরেই ভাঙনের কবলে পড়ে গঙ্গাগর্ভেই বিলীন হয়।
তার ঠিক ১৮ বছর পর মালদহের পর্যটন বিকাশে ফের পঞ্চানন্দপুরের গঙ্গার ধারেই নতুন করে একটি ‘গঙ্গা ভবন’ তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছেন এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের সেচ ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। সূত্রের খবর, নতুন এই গঙ্গা ভবনকে ঘিরে তৈরি হবে একটি ইকো পার্ক, আলোকময় হবে এলাকা। বাঁধানো হবে পঞ্চানন্দপুরের গঙ্গা ঘাট। থাকবে লঞ্চে করে গঙ্গা গঙ্গা বক্ষে ভ্রমণের ব্যবস্থাও। পাশেই থাকা পাগলা নদীকে পুনরুজ্জীবিত করতে পঞ্চানন্দপুরেই গঙ্গার সংযোগস্থলে তৈরি হবে স্লুইস গেট। সূত্রের খবর, এ বারের রাজ্য বাজেটে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের খাতে এই গঙ্গা ভবন ও ইকো পার্ক তৈরির প্রকল্প তালিকাভুক্ত হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে এই প্রকল্পে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৫ কোটি টাকা।
জানা গিয়েছে, ১৯৭৫ সালে কালিয়াচক ২ ব্লকের পঞ্চানন্দপুরে ৫ একর জায়গা নিয়ে তৈরি হয়েছিল গঙ্গা ভবন। গনি খানের ‘মানসকন্যা’ বলে পরিচিত প্রায় দু’হাজার স্কোয়ার ফিটের দোতলা সেই ভবনের নীচতলায় ছিল একটি বেড রুম, প্রশস্ত ডাইনিং রুম, রিসেপশন কাউন্টার, রান্নাঘর। উপরে দু’টি বেড রুম, প্রশস্ত বারান্দা ও কাঁচ দিয়ে ঘেরা লন আকারের ব্যালকনিও ছিল। সেচ দফতরের লঞ্চ ‘সুখচরে’ করে গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণের ব্যবস্থাও ছিল। কিন্তু ২০০৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাত দুটো নাগাদ ভয়ঙ্কর ভাঙনে গঙ্গাভবনকে গ্রাস করে নেয় গঙ্গাই।
এ দিকে, নতুন করে গঙ্গাভবন গড়ার উদ্যোগে রীতিমতো আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছেন পঞ্চানন্দপুর তথা মোথাবাড়ির মানুষ। তাঁরা বলছেন, ‘গনি খানের পর এমন একজন মন্ত্রী এলেন যিনি এলাকার মানুষের আবেগকে মর্যাদা দিচ্ছেন।’ মন্ত্রী সাবিনা বলেন, ‘‘নতুন গঙ্গা ভবন তৈরি আমার স্বপ্নের প্রকল্প। আমি তা করবই।’’ যা শুনে অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক শক্তিপদ পাত্রের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আবার গঙ্গাভবনে দাঁড়িয়ে গঙ্গার প্রাকৃতিক শোভা উপভোগ করব শুনেই নস্ট্যালজিক হয়ে পড়ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy