Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Maldah Flood

গঙ্গা-ফুলাহারের জল ঢুকে প্লাবিত মালদহের বিস্তীর্ণ এলাকা, অমিল ত্রাণ, পানীয় জলের হাহাকার

মালদহের জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ মজুত আছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে দ্রুত বিডিওকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি তাঁর।

গঙ্গা, ফুলাহারের জল ঢুকেছে মালদহের একাধিক গ্রামে।

গঙ্গা, ফুলাহারের জল ঢুকেছে মালদহের একাধিক গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:৫৬
Share: Save:

গঙ্গা-ফুলাহারের জলে প্লাবিত মালদহের বিস্তীর্ণ এলাকা। ইতিমধ্যেই জলের তলায় রতুয়া ১ নম্বর ব্লকের মহানন্দটোলা ও বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তত ২০টি গ্রাম। জলবন্দি কয়েক হাজার মানুষ। সরকারি সাহায্য বা ত্রাণ না মেলার দাবি মানুষের। ত্রাণ না পৌঁছনোর কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মহানন্দটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। বিডিওকে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া নির্দেশ মালদহের জেলাশাসকের।

গত এক সপ্তাহ ধরে ক্রমশ বাড়ছে গঙ্গা আর ফুলাহারের জলস্তর৷ রবিবার গঙ্গা বিপদসীমা পেরিয়ে যায়৷ দুই নদীর জলস্তর বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এক সপ্তাহ আগে থেকেই জল ঢুকতে শুরু করেছিল বিভিন্ন নিচু এলাকায়৷ গত দু’দিন ধরে প্রবল বেগে জল ঢুকছে ওই সমস্ত এলাকায়৷ বিলাইমারির রুহিমারি, গঙ্গারামটোলা, দ্বারকটোলা, শিসাবন্না, হাটপাড়া-সহ ১০টি গ্রামে জল ঢুকেছে৷ মহানন্দটোলার সম্বলপুর, কোতুয়ালি, জিয়ারামটোলা, বঙ্কুটোলা, বোধনটোলা-সহ ১০টি গ্রাম এখন জলের তলায়৷ শুধু কৃষিজমি নয়, জল ঢুকতে শুরু করেছে অনেক বাড়িতেও৷ সে সব বাড়ির লোকজন নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে শুরু করেছেন৷ তবে এলাকা ছেড়ে কেউ ত্রাণকেন্দ্রে যেতে নারাজ৷

মহানন্দটোলা পঞ্চায়েতের বাসিন্দা হিমাংশু মিশ্র বলেন, ‘‘৮-১০ দিন ধরে জল ক্রমশ বাড়ছে। বাড়িতে নদীর জল ঢুকে পড়েছে৷ এই পঞ্চায়েতের ১০টি গ্রাম এখন জলের নীচে৷ বিলাইমারি পঞ্চায়েতেরও ১০টি গ্রাম এই মুহূর্তে জলে ভাসছে৷ আমরা শুকনো খাবার খেয়ে বেঁচে আছি৷ এখনও পর্যন্ত সরকারি সহায়তা পাইনি৷ নৌকার ব্যবস্থাও করা হয়নি৷ এক গলা জল ভেঙেই যাতায়াত করতে হচ্ছে৷’’

কোতুয়ালি গ্রামের আরতি মণ্ডল বলেন, ‘‘অন্যের উঁচু জায়গায় আশ্রয় পেয়েছি৷ শুকনো খাবার খাচ্ছি৷ প্রশাসনের কেউ আসেনি৷ একটা পলিথিনও জোটেনি৷ সবচেয়ে বড় সমস্যা, গবাদি পশুর৷ কী করে গরুগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার ব্যাপারে। কী হবে, জানি না৷’’

গ্রামের একটি আমবাগানে ত্রিপল টাঙিয়ে রয়েছেন সম্বলপুরের অর্জুন মণ্ডল৷ তিনি বলেন, ‘‘চার দিন আগে ঘরে জল ঢুকেছে৷ তাই আমবাগানে এসেছি৷ একটা ছেঁড়া ত্রিপল ছিল৷ সেটাই মাথার উপর টাঙিয়েছি৷ এখনও প্রশাসনের কেউ এলাকায় আসেনি৷ ত্রাণও জোটেনি৷’’

মহানন্দটোলা পঞ্চায়েতের প্রধান কৃষ্ণা সাহা বলেন, “গঙ্গা আর ফুলাহারের জল এক সপ্তাহ ধরে বেড়ে চলেছে৷ আমার পঞ্চায়েত এখন জলের তলায়৷ যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন৷ এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা পানীয় জলের৷ গোখাদ্যেরও সমস্যা প্রচণ্ড৷ পানীয় জল, শুকনো খাবার আর ত্রিপলের জন্য বিডিওকে জানিয়েছি৷ বানভাসি মানুষের জন্য দুটো ফ্লাড সেন্টার খোলা হয়েছে৷ কিন্তু মানুষ বাড়িতে জিনিসপত্র, গরু-বাছুর ছেড়ে যেতে চাইছেন না৷ গোটা বিষয়টি বিডিওকে জানিয়েছি৷ ব্লক প্রশাসনের কাছে ত্রাণ সামগ্রীরও আবেদন জানানো হয়েছে৷’’

মালদহের জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ মজুত আছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে দ্রুত বিডিওকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি তাঁর।

অন্য বিষয়গুলি:

Maldah Flood The Ganges Fulahar River flood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy