জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে আসা বিদেশি অতিথিদের দেওয়া হবে রাজ্যের চার জেলা থেকে নির্বাচিত এই চার ধরনের বিশেষ উপহার। নিজস্ব চিত্র
দার্জিলিং জেলায় আসন্ন জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে বিদেশি প্রতিনিধি ও অতিথিদের উপহার বা স্মারক হিসাবে কেন্দ্রের তরফে এ রাজ্যের চারটি জেলার বিখ্যাত জিনিস বেছে নেওয়া হল। সরকারি সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে দেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত পদস্থ অফিসারদের নিয়ে তৈরি ‘জি২০ দল’ অতিথিদের জন্য চারটি উপহার নির্বাচন করেছেন। নির্বাচন করা হয়েছে কালিম্পং জেলার পাইন কাঠের বাক্সের গোলাপ আতর, মালদহের তিনটি সিল্কের রুমাল-ভরা বাক্স, বাঁকুড়ার ডোকরা শিল্পের মাছের আকৃতির লম্বা চাবি রিংয়ের মতো হুক এবং বর্ধমান জেলার কাঠের পেঁচা।
আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে শতাধিক উপহার জেলা থেকে সংগ্রহ করে শিলিগুড়িতে নিয়ে আসা হবে। কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের এক যুগ্ম সচিবের কথায়, ‘‘পর্যটন বিষয়ক সম্মেলন হচ্ছে। তাতে রাজ্যের কিছু বিশেষ জিনিসই উপহার হিসাবে অতিথিদের জন্য ভাবা হয়েছে।’’
কালিম্পং জেলায় কাঠের হস্তশিল্প জনপ্রিয়। রাজ্যে আতরের সুনামও বহু দিনের। বিভিন্ন ফুল, গাছের কাঠ থেকে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে এই আতর তৈরি হয়। পুরোটাই অ্যালকোহল-মুক্ত সুগন্ধি। ১৮২৪ সালের পর থেকে কলকাতার চিৎপুরের আতর মুঘল নবাবদের ইতিকথায় স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। সে আতর দৃষ্টিনন্দন পাইন কাঠের বাক্সে উপহার হিসাবে থাকছে। রয়েছে মালদহের রেশম শিল্পের উপস্থিতিও। মালদহের সিল্ক নবাবি আমলে বিখ্যাত ছিল। এখনও নানা সিল্কের পোশাক মালদহের বিভিন্ন গ্রামে তৈরি হয়। তিনটি রঙিন রেশমি রুমাল স্মারক হিসাবে রাখা হচ্ছে।
উত্তরবঙ্গের এই দুই জেলার পরে দক্ষিণবঙ্গের দুই জেলাকেও বাছা হয়েছে। বাঁকুড়ার ধাতুর ডোকরা শিল্প সুপ্রাচীন। ডোকরার ঘোড়া, মাছ, হাতি, ময়ূর, পেঁচার মতো নানা মূর্তি তৈরি হয়। অতিথিদের জন্য থাকছে মাছের আকৃতির ডোকরা হুক। বর্ধমানের পূর্বস্থলীর নতুনগ্রাম পুতুল শিল্পের জন্য বিখ্যাত। সেখানে ৫১টি পরিবারের ১২৬ জনের মতো কারিগর কাঠের পুতুল তৈরি করেন। দেশবিদেশে তা সমাদৃত। সেখানকার ছোট দু’টি রঙিন কাঠের পেঁচা অতিথিদের জন্য শিলিগুড়িতে আসছে।
জি২০ দলের অফিসারেরা জানান, সম্মেলনে ২০টি দেশের প্রতিনিধিরা আসবেন। তার সঙ্গে আরও অতিথি আসছেন। শতাধিক প্রতিনিধি ও অতিথিদের হস্ত বা কুটিরশিল্পের চারটি জিনিস দেওয়া হচ্ছে, যাতে এই অঞ্চলের হস্তশিল্প সম্পর্কে তাঁদের আগ্রহ তৈরি হয়। সম্মেলনে আগত প্রতিনিধিদের সূত্রে ভবিষ্যতে কোনও দেশ বা সরকারি সংস্থা আগ্রহ দেখালে লাভবান হবে রাজ্যের হস্তশিল্প।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy