প্রতীকী চিত্র।
দুই জায়গার দূরত্ব কম করেও তিনশো কিলোমিটার। তার পরেও কালিয়াগঞ্জ বিধানসভায় তৃণমূলের জয়ের ভাগীদার কোচবিহার। কোচবিহারের প্রাক্তন সাংসদ তৃণমূলের পার্থপ্রতিম রায় যে মাটি কামড়ে পড়েছিলেন কালিয়াগঞ্জে। এনআরসি-র বিপদ নিয়ে ঘরে ঘরে ঢুকে প্রচার করেছেন। পার্থপ্রতিম রাজবংশী সম্প্রদায়ের নেতা। কালিয়াগঞ্জে রাজবংশী ভোট ৬২ শতাংশ। পার্থপ্রতিম রাজবংশী পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে প্রচার করেছেন রাজবংশী ভাষাতেই। রাজবংশীদের আস্থা অর্জন করেছেন। ঘরের ভাষায় তুলে ধরেছেন এনআরসি-র বিপদ। অসম লাগোয়া কোচবিহারের বাসিন্দা পার্থপ্রতিমের মুখ থেকে কালিয়াগঞ্জ শুনেছে, রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষের নামও নাগরিক পঞ্জি থেকে বাদ গিয়েছে। তৃণমূলের অন্দরের খবর, পার্থপ্রতিমের এই ভূমিকায় লোকসভা ভোটে বিজেপির বিরাট মার্জিন পার করে উপনির্বাচনে জয়ে অনেকটাই সাহায্য করেছে।
তৃণমূলের একাংশ নেতার বক্তব্য, পার্থপ্রতিমকে দিয়ে এই প্রচার করানোর কৌশলটি ছিল নমুনা পরীক্ষা। এই সাফল্য এ বারে কোচবিহারেও কাজে লাগাতে ছক কষতে শুরু করেছে রাজ্যের শাসক দল। পার্থ নিজে বলেন, “এই জয় দিদির জয়। মানুষ দিদির সঙ্গে রয়েছেন।”
কালিয়াগঞ্জের মতো কোচবিহারেও ভোটারদের একটি বড় অংশ রাজবংশী সম্প্রদায়ের। দুই জায়গার মানুষের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধনও রয়েছে। এ বারে লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার তথা গোটা উত্তরবঙ্গেই ভরাডুবি হয় তৃণমূলের। কোচবিহার আসন রাজ্যের শাসক দলের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি।
সমীক্ষায় নেমে টিম পিকে দেখতে পায়, তফসিলি জাতি ও উপজাতি বিশেষ করে রাজবংশী সম্প্রদায় অধ্যুষিত এলাকায় তৃণমূলের ভোট কমে গিয়েছে। যা নিয়ে উদ্বেগে পড়ে যান দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অবস্থার পরিবর্তন করতে গিয়েই একাধিক পদক্ষেপ নেন তৃণমূল নেত্রী। দলের নেতাদের গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। তেমনই রাজবংশী নেতা পার্থপ্রতিমকে কালিয়াগঞ্জে প্রচার চালানোর নির্দেশ দেন।
এ দিন ফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে পার্থপ্রতিমের বাড়ির অফিসে উল্লাসে মাতেন তৃণমূল কর্মীরা। দল মনে করছে, এনআরসি-র প্রকৃত চিত্র কালিয়াগঞ্জে তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে বলেই মানুষ বিজেপি থেকে সরে গিয়েছে। এ বারে কোচবিহারেও গ্রামে গ্রামে ঢুকে সেই চিত্র তুলে ধরার পরিকল্পনা করছে তৃণমূল। রাজ্যের শাসক দলের এক নেতার কথায়, “কোচবিহারে আমরা এনআরসি নিয়ে প্রচার শুরু করেছি। তা আরও তথ্য দিয়ে তুলে ধরা হবে। প্রত্যেকটা মানুষের কাছে তা পৌঁছে দিতে হবে। বিজেপি ঠিক কী করেছে বা কী করছে তা মানুষ জানলে কেউ তাদের সঙ্গে থাকবেন না।”
বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা অবশ্য দাবি করেন, ‘‘উপনির্বাচনের ফলের প্রভাব কোচবিহারে পড়বে না।’’ তিনি বলেন, “এনআরসি নিয়ে মানুষকে তৃণমূল ভুল বুঝিয়েছে। আগামী অধিবেশনেই নাগরিকত্ব বিল পেশ হবে সংসদে। তার পরে আর তৃণমূলকে পাওয়া যাবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy