শুভেন্দু চৌধুরী স্টেডিয়াম। -নিজস্ব চিত্র।
মালদহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার ভিআইপি গ্যাল্যারির নামকরণ বির্তকে জড়ালেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। নিজের দাদা প্রয়াত শুভেন্দু নারায়ণ চৌধুরীর নামে সুপ্রাচীন জেলা ক্রীড়া সংস্থার ভিআইপি গ্যালারির নামকরণের ফলে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে মালদহের ক্রীড়ামহলে।
কয়েক মাস আগে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক শুভেন্দু চৌধুরী প্রয়াত হন। এর পরেই সংস্থার হাল ধরেন কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী। শুরু হয় জেলা ক্রীড়া সংস্থার গ্যালারি, মাঠ সংস্কারের কাজ।
স্টেডিয়ামের মাথায় বড় বড় হরফে লেখা হয়েছে ‘শুভেন্দু চৌধুরী স্টেডিয়াম’। এ নিয়েও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এতদিন এটি ডিএসএ স্টেডিয়াম বলেই পরিচিত ছিল। রাতারাতি প্রাক্তন মন্ত্রীর দাদার নামে স্টেডিয়াম হওয়া নিয়ে জেলাজুড়ে ক্রীড়া মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।সমালোচনা শুরু করেছেন বিজেপি, কংগ্রেস ও বামদলের নেতারা।
১৯৬২সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিধান চন্দ্র রায় মালদহ ক্রীড়া সংস্থার উদ্বোধন করেন। এখন ছয়টি স্টেডিয়াম রয়েছে। প্রায় ১৫ হাজার দর্শক স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে পারে। এতদিন স্টেডিয়ামগুলির কোন নামকরণ ছিল না। সম্প্রতি নামকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিগতদিনের প্রয়াত খেলোয়াড়দের নামে স্টেডিয়ামের নামকরণ হবে বলে ঠিক হয়। তাতে জেলার প্রসিদ্ধ খেলোয়াড় কমলাপতি অধিকারী, সিরাজউদ্দিন, যোগন চৌধুরী, নাসিরুদ্দিন চৌধুরী, সজল মিশ্রর নাম যেমন থাকবে, তেমনই চুনী গোস্বামী, পিকে ব্যানার্জীর নামও থাকবে, এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্টেডিয়ামের ১০টি কক্ষেরও নামকরণের সিদ্ধান্ত হয়। এই অবস্থায় ভিআইপি স্টেডিয়ামে কৃষ্ণেন্দুবাবুর দাদার নামে করা নিয়ে শুরু হয়েছে চরম বির্তক।
জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি অজয় গাঙ্গুলী বলেন রাজ্যের মন্ত্রী থাকাকালীন কৃষ্ণেন্দুবাবু নিজের ক্ষমতাবলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক করেছিলেন শুভেন্দু নারায়ণ চৌধুরীকে। ক্রীড়াবিদ হিসাবে জেলার মানুষ তাঁকে চেনেন না বা জানেন না। সকলেই দাপুটে ঠিকাদার হিসাবেই তাঁর পরিচয় জানেন। এহেন ব্যাক্তিত্বের নামে ক্রীড়া সংস্থার ভিআইপি স্টেডিয়ামের নামকরণ লজ্জার।
কংগ্রেস দলের জেলা সম্পাদক মোস্তাক আলম জানান জেলার ক্রীড়ার মান বাড়ানোর জন্য প্রয়াত কংগ্রেস নেতা এবি গণি খান চৌধুরী তাঁর সাংসদ কোটার অর্থ ব্যয় করেছেন। জেলার রূপকার তিনিই। তাঁর নামে স্টেডিয়াম হলে ভালো হত। সিপিআই(এম)এর জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র জানান জেলার প্রখ্যাত ক্রীড়াবিদের নামে হলে ভালো হত।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি তথা জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি জানতে পেরে অবাক হয়েছেন। তিনি বলেন বিষয়টি তাঁর জানা নেই। খতিয়ে দেখা হবে।
কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী জানিয়েছেন, আমার দাদা এর আগে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক ছিলেন। তিনি প্রয়াত হওয়ার পর আমি এই দায়িত্ব পেয়েছি। কারা কী অভিযোগ করছে জানি না। তবে প্রতিটি গ্যালারি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে করার একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে কোন বিতর্ক হওয়ার কথা নেই। মানুষের কাছে কোন কারনে ভুল বার্তা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, স্টেডিয়ামের নাম বদল করা হয়নি। গ্যালারির নাম দেওয়া হয় শুভেন্দু চৌধুরির নামে। মানুষের কাছে ভুল বার্তা দিয়ে কালিমালিপ্ত করা হচ্ছে তাকে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রাক্তন সম্পাদক শুভাশিস সরকার জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই অনৈতিক কাজকর্ম করা হচ্ছে।কোনোরকম রেজুলেশন মানা হচ্ছে না। নির্বাচন ছাড়া এবং প্রশাসনিক নির্দেশ না মেনে কীভাবে প্রাক্তন মন্ত্রী নিজে থেকেই ওই সংস্থার সম্পাদক হয়ে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এখন শুনতে পাচ্ছি ডিএসএর নাম বদলে একজন ব্যক্তির নামে করে দেওয়া হয়েছে। এটা বেআইনিভাবে করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy