আইআইটি খড়্গপুর। —ফাইল চিত্র।
দ্বাদশ শ্রেণিতে ‘ফেল’ করেও লড়াই করে আইপিএস হয়েছেন, সেই গল্প জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপারের মুখে শুনে এক ছাত্রী হলঘরের শেষ আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলেছিল, “স্যার, আমিও পড়তে চাই।”
ছাত্রীকে পড়ানোর আর্থিক সঙ্গতি ছিল না পরিবারের। মাস পাঁচেক আগের সেই অনুষ্ঠানের খবর আনন্দবাজার পত্রিকায় পড়েছিলেন সল্টলেকের সেক্টর ওয়ানের বাসিন্দা আইআইটি খড়গপুরের প্রাক্তনী। তার পরেই তিনি যোগাযোগ করেছিলেন জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার উমেশ গণপত খণ্ডবহালের সঙ্গে। প্রস্তাব দিয়েছিলেন, দুঃস্থ পড়ুয়াদের জন্য কিছু করতে চান। জেলা পুলিশ থেকে পাঁচজন পড়ুয়ার বিবরণ পাঠানো হয় পেশায় ইঞ্জিনিয়র এবং বেসরকারি সংস্থার কর্ণধার আইআইটির প্রাক্তনী রতিকান্ত ঘোষকে। মাস তিনেক হল প্রতি পড়ুয়াকে দেড় হাজার টাকা করে পাঠাচ্ছেন তিনি। এ বার জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ থেকে যোগাযোগ করে রতিকান্ত ঘোষকে আমন্ত্রণ জানানো হয় জলপাইগুড়িতে আসার।
শুক্রবার জলপাইগুড়িতে এসেছিলেন রতিকান্ত ঘোষ। শহরের তিস্তা উদ্যানে পাঁচ দুঃস্থ পড়ুয়া এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করলেন তিনি। পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে বললেন, “তোমরা জীবনে পড়াশোনা করে স্বনির্ভর হলে সেটাই আমার উপহার। সৎ থেকো। যাকে ইচ্ছে করবে চিঠি লিখো, চিঠিতে মনের কথা জানানো যায়।” পুলিশের তরফেও পড়ুয়াদের কিছু উপহার দেওয়া হয়। যাওয়ার আগে রতিকান্তবাবু পড়ুয়াদের বলেন, “মন দিয়ে পড়াশোনা করো, আবার আসব।” পাঁচজনও ঘাড় নেড়ে সম্মতি দেন।
জেলা পুলিশ সুপার উমেশ গণপত খণ্ডবহাল বললেন, “আন্তরিকতার সঙ্গে নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকো, সাফল্য আসবেই। বিশ্বটা তোমাদের মতো, আমাদের মতো সবার জন্যই।’’
দ্বাদশ শ্রেণিতে ফেল করে পড়াশোনা ছেড়ে বাবার সঙ্গে দুধের ব্যবসা শুরু করেছিলেন মহারাষ্ট্রের মহীরাবনী গ্রামের ছেলে উমেশ খণ্ডবহালে। এক বছর পরে মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে ফের পড়াশোনা শুরু করে আইপিএস হন তিনি। সম্প্রতি ‘টুয়েলভথ ফেল’ সিনেমা মুক্তির পরে উমেশ খণ্ডবহালের জীবনের গল্প নিয়েও চর্চা শুরু হয়। গত জুলাই মাসে জলপাইগুড়িতে এক অনুষ্ঠানে পড়ুয়াদের নিজের জীবনের লড়াইয়ের কাহিনি শুনিয়েছিলেন পুলিশ সুপার। সেই অনুষ্ঠানে এক পড়ুয়ার পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার আর্তির কথা জেনে কলকাতার রতিকান্ত ঘোষ যোগোযোগ করেছিলেন পুলিশ সুপারের সঙ্গে।
জেলা পুলিশ সুপার বলেন, “আমরা পাঁচজন দুঃস্থ ছাত্রীদের বেছে দিয়ে তাঁদের পড়াশোনার ভার নেওয়া যেতে পারে বলে জানাই, রতিকান্ত ঘোষ রাজি হন। এক ছাত্রীর আর্জি কাগজে পড়ে এ ভাবে সাড়া দেওয়াকে জেলা পুলিশও সম্মান জানায়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy