Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Forest department

হাতি তাড়াতে ‘চিরাচরিত’ পদ্ধতিই, সিদ্ধান্ত বন দফতরের

জলপাইগুড়ির বন্যপ্রাণী বিভাগের বনাধিকারিক দ্বিজপ্রতীম সেন বলেন, “উত্তরবঙ্গে হুলা পার্টি নেই। মশাল বা অগ্নি-শলাকাও নেই।

জঙ্গলে হাতির পাল।

জঙ্গলে হাতির পাল। —ফাইল চিত্র।

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:২২
Share: Save:

কখনও আলিপুরদুয়ারের কালচিনির চা বাগানে, কখনও জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গল লাগোয়া ধানের পাকা খেতে হাতির দল চলে আসছে। পাকা ধান হাতির বড্ড প্রিয়। ধানের খেতে হাতি ঢুকলেই গ্রামবাসীরা তেড়ে যাচ্ছেন। বন দফতরের তরফেও ধান কাটার মরসুমে হাতি তাড়াতে একাধিক স্কোয়াড নামানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হাতি তাড়ানো নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্য সরকার। বিশেষত, অগ্নি-শলাকা দিয়ে হাতি তাড়ানো নিয়ে। উত্তরের বনকর্তারা জানাচ্ছেন, উত্তরবঙ্গে হাতি তাড়াতে বন দফতরের কোনও ‘হুলা পার্টি’ নেই। তাই আগুন নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনও কারণ দেখছেন না বনকর্তারা। তবু কিছু কিছু বনবস্তি এলাকায় হাতি ঢোকার খবর পেলে মশাল জ্বালানোর প্রবণতা রয়েছে বলে দাবি। বন দফতরের সিদ্ধান্ত, উত্তরবঙ্গের ‘চিরাচরিত’ পদ্ধতি অর্থাৎ, ক্যানেস্তারা পেটানো বা বাজি ফাটানো ছাড়া, হাতিকে লোকালয় থেকে তাড়ানোর অন্য কৌশলে অনুমোদন দেওয়া হবে না। যেহেতু শব্দবাজি ফাটানোতেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, সে ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হচ্ছে সাইরেন এবং জোরালো আলো ব্যবহারে।

জলপাইগুড়ির বন্যপ্রাণী বিভাগের বনাধিকারিক দ্বিজপ্রতীম সেন বলেন, “উত্তরবঙ্গে হুলা পার্টি নেই। মশাল বা অগ্নি-শলাকাও নেই। উত্তরবঙ্গের নিজস্ব চিরাচরিত প্রথায় হাতিদের জঙ্গলে ফেরত পাঠানো হয়। বাসিন্দাদের সুরক্ষাও দেখতে হয়।”

জলপাইগুড়িতে মহালয়ার ভোরে বাজি-পটকা পোড়ানোর রেওয়াজ রয়েছে। এই রেওয়াজ উত্তরবঙ্গের সর্বত্র দেখা যায় না। কথিত আছে, এই রেওয়াজের পিছনেও রয়েছে হাতির লোকালয়ে ঢুকে পড়ার বৃত্তান্ত। মহালয়ার ভোরে জলপাইগুড়ির রাজা বা জমিদারেরা তিস্তার পাড়ে তর্পণ করতে যেতেন। জঙ্গল থেকে তিস্তাপারে হাতির দল প্রায়শই ঢুকে পড়ত। তর্পণে যাতে বিঘ্ন না ঘটে সে কারণে লোকালয় থেকে হাতির দলকে দূরে রাখতে বাজি-পটকা ফাটানো হত। এখনও বন দফতরের তরফে জঙ্গল লাগোয়া বিভিন্ন বনবস্তিতে বাজি-পটকা দেওয়া হয়। তবে সে প্রবণতাও কমছে বলে দাবি। বাজি-পটকার পরিবর্তে বন দফতর সাইরেন বাজানোয় বেশি জোর দিয়েছে। বন্যপ্রাণী স্কোয়াডের গাড়ির সাইরেন অথবা ব্যাটারি-চালিত হাত সাইরেন বাজিয়ে হাতি তাড়ানো হয়। সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আলো।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে আরও একটি চিরাচরিত প্রথাকে সর্বত্র ফিরিয়ে আনতে চাইছে বন কর্তাদের কেউ কেউ, সেটি হল ক্যানেস্তারা পেটানো। জঙ্গল থেকে হাতি বেরনোর খবর পেলেই ক্যানেস্তারা বা টিন বাজানোর প্রবণতা রয়েছে জলপাইগুড়ির রামসাই, পানবাড়ি, কালীপুরের বিভিন্ন এলাকায়। সে সব এলাকাতেও আলো এবং সাইরেন দিয়েছে বন দফতর।

বন দফতরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বন্যপ্রাণী স্কোয়াড চালানো একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে ভিক্টর বসু বলেন, “এখন শুধু আলো এবং সাইরেন ব্যবহার করে হাতিদের লোকালয় থেকে জঙ্গলে ঢোকানো হয়। বাজি-পটকা দেওয়ার প্রবণতাও এখন কমে গিয়েছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

elephant attack Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy