Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

পর্যটনকে নতুন মাত্রা দেবে খেলা, আশায় ব্যবসায়ীরা

জঙ্গল, পাহাড়ে ঘুরতে আসা-যাওয়ার ফাঁকে শিলিগুড়ি আসেন অনেকেই। হোটেল-সহ পর্যটন ব্যবসার সেটাই মূলধন এই শহর তথা উত্তরবঙ্গের। বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থার প্রতিনিধি, হোটেল মালিকেরা তাকিয়ে থাকেন সে দিকেই।

রঙিন শিলিগুড়ি। মরসুমের প্রথম ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ ঘিরে উচ্ছ্বাসে মাতলো সমর্থকেরা।  ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

রঙিন শিলিগুড়ি। মরসুমের প্রথম ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ ঘিরে উচ্ছ্বাসে মাতলো সমর্থকেরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:০১
Share: Save:

গন্তব্য শিলিগুড়ি।

জঙ্গল, পাহাড়ে ঘুরতে আসা-যাওয়ার ফাঁকে শিলিগুড়ি আসেন অনেকেই। হোটেল-সহ পর্যটন ব্যবসার সেটাই মূলধন এই শহর তথা উত্তরবঙ্গের। বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থার প্রতিনিধি, হোটেল মালিকেরা তাকিয়ে থাকেন সে দিকেই। এ বার তাতে কি নতুন এক কারণ যোগ হল? গত দশ মাসের মধ্যে দু’টি ডার্বি, মহিলা সাফ ফুটবলের আসরের পরে এটাই এখন প্রশ্ন শিলিগুড়িতে। শুধু শিলিগুড়ি নয়, এ কথা ভাবাচ্ছে পাহাড়, ডুয়ার্সের হোটেল মালিক, বিভিন্ন পর্যটন সংস্থাকে। রবিবাসরীয় ডার্বিকে ঘিরে শহরে উৎসবের মেজাজের মাঝে সেই আশাটাও জেগে উঠেছে, বলছেন ওই সব সংস্থার প্রতিনিধিরা।

খেলা দেখতে শহরে এসেছেন কলকাতার পিকনিক গার্ডেনের ব্যবসায়ী অপু দত্ত, কার্তিক সরকারেরা। নিজেদের গাড়িতে শুক্রবার রওনা হয়ে শনিবারই শিলিগুড়ি পৌঁছন। শুধু ডার্বি নয়, পরিকল্পনা আরও লম্বা। রবিবার খেলা দেখে ডুয়ার্সের মূর্তি যাচ্ছেন সোমবার। সেখানে হোটেল বুক করা আছে। দু’দিন কাটিয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি ইস্টবেঙ্গল-লাজং ম্যাচ দেখে ফিরবেন শিলিগুড়িতে। ঘোরা-খেলা, এক যাত্রায় দুই-ই সেরে নিচ্ছেন।

কলকাতার দমদম এয়ারপোর্ট ১ নম্বর গেট এলাকার সুমন সরকারেরা চার বন্ধু শনিবার শিলিগুড়ি পৌঁছে স্টেশন থেকে সোজা মিরিক চলে যান। রবিবার দুপুরে শিলিগুড়ি ফেরেন ডার্বি দেখতে। কলকাতা থেকে বিভিন্ন বেসরকারি পরিবহণ সংস্থার তরফে সস্তায় ‘ট্যুর প্যাকেজ’ আয়োজন করা হয় ডার্বিকে ঘিরে। অরিন্দম চক্রবর্তী, চিরন্ম চৌধুরীরা জানান, কলকাতা থেকে অন্তত ১০টি বাসে দু’দলের প্রচুর সমর্থক এসেছেন। অনেকে এসেছেন ট্রেনে।

উদ্যোক্তাদের দাবি, কলকাতায় ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান ক্লাব থেকে অন্তত ৮ হাজার টিকিট বিলি করা হয়েছে। বাইরে থেকে খেলা দেখতে অন্তত দশ হাজার লোক এসেছেন শিলিগুড়িতে। গত দু’দিন ধরে মূলত তাঁদের দখলেই শহরের হোটেলগুলি। অনেকেই একেবারে লাজং ম্যাচ দেখে ফিরবেন। তার মাঝে ডুয়ার্স, পাহাড়ে ঘুরছেন। স্থানীয় বাজারে কেনাকাটাও সারছেন। বস্তুত, খেলাকে কেন্দ্র করে শিলিগুলি তথা উত্তরবঙ্গের পর্যটনে নতুন দিক খুলে যেতে পারে বলে আশাবাদী অনেকে। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে যত বেশি এমন খেলা হবে, তাকে ঘিরে ‘স্পোর্টস ট্যুরিজম’-এর মাধ্যমে এলাকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি হবে, আশা দেখছেন অনেকেই।

‘ইস্টার্ন হিমলয়া ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর’-এর কার্যনির্বাহী সভাপতি সম্রাট সান্যালের কথায়, ‘‘ডার্বিকে কেন্দ্র করে অনেকেই দু’চার দিন উত্তরবঙ্গ ঘোরার পরিকল্পনা করেছেন। তাঁরা ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন। ফুটবলকে কেন্দ্র করে শহরে এত লোক আসায় হোটেল, পরিবহণ, পর্যটন ব্যবসার উন্নতির সম্ভবনা রয়েছে।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘বিশাখাপত্তনম, মোহালিতে ক্রিকেট স্টেডিয়াম হওয়ার পরে সেখানে এমন উন্নতি হয়েছে। শিলিগুড়িতে ডার্বি বা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট-ফুটবলের আরও ম্যাচ হলে নিঃসন্দেহে তা ভাল ব্যাপার। শহরে একটা ভাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামও গড়ে উঠুক। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের পরিকাঠামো আরও ভাল করা হোক।’’

শহরের বাসিন্দা তথা রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী, ক্রীড়ামন্ত্রীও চান এখানে খেলাধুলার পরিকাঠামো উন্নত করতে। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের পরিকাঠামো আরও ভাল করে এখানে বিভিন্ন ম্যাচ করাতে। তাকে ঘিরে পর্যটনের প্রসার ঘটবে। শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িকে ঘিরে সেই পরিকল্পনাই রয়েছে।’’ তিনি জানান, জলপাইগুড়িতে বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গনও করা হয়েছে।

বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী কমিটির সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাস, শিলিগুড়ি হোটেল মালিকদের সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক উজ্জ্বল ঘোষেরাও জানান, এই ধরনের খেলার আয়োজনে শহরের অর্থনীতি চাঙা হতে পারে। তবে নিয়মিত যাতে খেলা হয়, সে দিকেও নজর রাখতে হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Tourism Football Derby Match
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy