Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকেও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা গ্রামে

প্রশাসনের সঙ্গেই আগুনে বিপর্যস্ত মালদহের রতুয়ার দুই গ্রামের দুর্গত বাসিন্দাদের ত্রাণ বিলি করল প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৬ ০২:০১
Share: Save:

প্রশাসনের সঙ্গেই আগুনে বিপর্যস্ত মালদহের রতুয়ার দুই গ্রামের দুর্গত বাসিন্দাদের ত্রাণ বিলি করল প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর।

শুক্রবার দুপুরে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে রতুয়ার ওই দুটি এলাকা চাঁদপুর ও হঠাৎপাড়া কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। রাত থেকেই জরুরি ভিত্তিতে দুর্গতদের জন্য রান্না করা খাবারের বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। ত্রাণের ত্রিপলও দেওয়া হয়েছিল। তারপর এ দিন বিডিও ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এলাকায় যান মহকুমাশাসক। দুর্গতদের স্টোভ, রান্না করার হাঁড়ি, কড়াই, থালাবাসন দেওয়া হয়।

আর্থিক সাহায্য ছাড়াও প্রশাসনের তরফেও রান্নার সামগ্রী ছাড়াও পোশাক, জলের পাউচ প্যাকেট দেওয়া হয়েছে। পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে বসানো হয়েছে ১৮টি নলকূপও। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরেই প্রশাসন তত্পর হওয়ায় ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ না থাকলেও সর্বস্ব খুইয়ে কবে ফের তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন তা ভেবেই দিশেহারা রতুয়ার ওই দুর্গতরা।

চাঁচলের মহকুমাশাসক পুষ্পক রায় বলেন, দুর্গতদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা প্রশাসনের তরফে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের পাশাপাশি প্রশাসনের তরফেও ওদের আরও কী ভাবে সাহায্য করা যায় তা দেখা হচ্ছে।

শুক্রবার দুপুরে রান্নাঘর থেকে আগুন ছড়িয়ে ভস্মীভূত হয়ে যায় চাঁদপুর ও হঠাৎপাড়া এলাকাদুটি। প্রশাসনের হিসেবেই ৫৬টি পরিবারের ঘরদোর আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পথে বসেছেন ৫৬টি পরিবারের প্রায় আড়াইশো বাসিন্দা। পরনের পোশাক ছাড়া কিছুই নেই বাসিন্দাদের। আগুন নেভানোর সময় অল্পবিস্তর আহত হয়েছেন প্রায় ২০ জন বাসিন্দা। তাদের চিকিত্সার ব্যবস্থা-সহ রাতেই স্থানীয় একটি প্রাথমিক স্কুলে শিবির করে দুর্গতদের খাওয়ানো হয়। এ দিনও একইভাবে খাওয়ানো হয়েছে দুর্গতদের।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ৫৬টি পরিবারের প্রত্যেককেই ৩৬০ টাকা করে অর্থসাহায্য করা হয়েছে। এ ছাড়া বাসিন্দারা যাতে বাড়িতে নিজেদের মতো করে রান্না করে খাওয়া-দাওয়া করতে পারেন, সেজন্য তাঁদের রান্নার সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছে। শাড়ি, ধুতি, শিশুদের জামা-কাপড় ছাড়াও পরিবারপিছু এক কিলোগ্রাম করে সর্ষের তেলও দেওয়া হয়েছে। রতুয়া-১ ব্লকের বিডিও বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেন, দুর্গত বাসিন্দারা ত্রাণ শিবিরের থেকে বাড়িতে রান্না করে খেতে চাইছেন। তাই বাড়িতে রান্না করে খাবারের ব্যবস্থা করতে যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে জন্য সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভ না থাকলেও ঘটনার পরদিনও গোটা এলাকা শোকে স্তব্ধ। সর্বস্ব হারিয়ে কী ভাবে তাঁরা ফের ঘুরে দাঁড়াবেন সেই দুশ্চিন্তা পেয়ে বসেছে তাঁদের।

দুর্গতদের তালিকায় রয়েছেন বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান আজিজুর রহমানও। তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসন যেটুকু করছে তা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু আমার মতোই সবারই ঘরদোর-সহ সর্বস্ব পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।’’ ক্ষুদ্র কৃষক সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘মজুত শস্য, এমনকী জমানো কিছু টাকাও পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। এখন পথে বসা ছাড়া উপায় নেই।’’ সদ্য বিএ পাশ করা যুবক সফিকুল আলম বলেন, ‘‘মার্কশিট, অ্যাডমিট কার্ড-সহ সব নথি পুড়ে গিয়েছে। এখন কী হবে কে জানে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy