গ্রামগঞ্জে থাকা তৃণমূল নেতাদের বলা হচ্ছে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে যেতে।
শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে তৃণমূলের যুব নেতাদের একাংশকে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সমস্যা দেখা দিয়েছে। দলের নেতাদের একাংশই জানাচ্ছেন, এর মধ্যে কলকাতায় সরাসরি প্রশান্ত কিশোর বা পিকের অফিসে ফোন করে বলা হয়েছে, নানা অভিযোগ বা আপত্তি থাকা নেতাদের দিয়ে ওয়ার্ডে কর্মসূচি করানোটা দলের লোকজনই মেনে নিচ্ছেন না। কাউন্সিলর থেকে স্থানীয় নেতাদের একাংশ প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ঘনিষ্ঠমহলে ওই নেতাদের নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছেন। বলা হয়েছে, একাংশ নেতার নামে নানা অভিযোগ শোনা যায়। সম্প্রতি এক যুব নেতার বিরুদ্ধে লিফলেট প্রকাশ করা হয়েছে। এমন লোকজনকে নিয়ে ওয়ার্ডের মানুষদের মধ্যে গেলে প্রশ্ন উঠতে পারে। তাই এদের বদলে অন্যদের নিয়ে কর্মসূচি করানো যায় কি না, সেটাও দেখতে অনুরোধ করা হয়েছে।
ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (পিকে) দফতর থেকে ফোন করে রাজ্যের ব্লকে, শহরে, গ্রামগঞ্জে থাকা তৃণমূল নেতাদের বলা হচ্ছে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে যেতে। প্রথম দিকে উত্তরবঙ্গের বহু ছোট মাপের নেতাই নিজেদের এই কর্মসূচি থেকে দূরে রাখতে চাইছিলেন। এমন মনোভাব যেমন দক্ষিণ দিনাজপুরে দেখা গিয়েছে, তেমনই শিলিগুড়ির আশপাশে বা কোচবিহার, জলপাইগুড়িতেও এর চিহ্ন মিলেছে। যদিও পিকের অফিস থেকে নির্দেশের কথা জানানোর পরে বেশির ভাগই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। তবে অনিচ্ছুকদের অনেকের বক্তব্য, শাসকদলের বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ, তার ধাক্কা সামলাতে হতে পারে ওই নেতাদের।
এ বারে শিলিগুড়িতে দলের তরফে যা জানানো হল, তার মধ্যেও সেই আশঙ্কাই লুকিয়ে রয়েছে। দলের একটি সূত্রের বক্তব্য, যে নেতাদের প্রতি মানুষের ক্ষোভ রয়েছে, তাঁদের নিয়ে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। দলীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের পর বুধবার ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি বাতিল করতে হয়েছে৷ ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডেও আপত্তি উঠেছে দায়িত্বপ্রাপ্ত যুব নেতাকে নিয়ে। বিষয়টি দলীয় স্তরে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন জেলা সভাপতি তথা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেছেন, ‘‘কোথায় কী সমস্যা হচ্ছে দেখছি। প্রয়োজনে অন্যরা কর্মসূচিটি করবেন।’’
মঙ্গলবার যুবর জেলা সভাপতি বিকাশ সরকারের নামে নানা অভিযোগ তুলে একটি লিফলেট বাজারে ছাড়া হয়। তাঁকে সামনে রেখে এ দিন ২১ নম্বর ওয়ার্ডের অনুষ্ঠান বাতিল করেন দলেরই একাংশ নেতা-কর্মী। ওই ওয়ার্ডের যুব সভাপতি দীপঙ্কর সরকার বলেন, ‘‘বিকাশবাবুর নামে নানা অভিযোগ শোনা গিয়েছে। তাই ওঁকে নিয়ে আমরা মানুষের মাঝে যেতে চাই না। কলকাতায় তা জানিয়েছি।’’ যদিও বিকাশবাবুর দাবি, ‘‘ভিত্তিহীন সব অভিযোগ নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’’
একই ভাবে ৩৬ এবং ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্ব ৫ নং টাউন যুব সভাপতি সন্তোষ সাহার উপর। তাঁকে নিয়ে আপত্তি থাকায় দুটি ওয়ার্ডেই এখনও কর্মসূচি হয়নি। ৩৬ নম্বরের তৃণমূল কাউন্সিলর অলোক ভক্ত বলেন, ‘‘আগাম না বলায় আমি ছিলাম না।’’ ৩৮ নম্বরের তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল দত্ত বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি। দিনক্ষণ ঠিক হয়েছে বলে জানি না।’’ সন্তোষবাবু অবশ্য দাবি, ‘‘সবার সঙ্গে কথা বলছি। কলকাতায় সব জানিয়েছি।’’
দলের একটি অংশ অবশ্য জানাচ্ছে, যূব তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এই সমস্যা হয়েছে। তাই যুব, জেলা ও কাউন্সিলর সব মিলিয়ে টিম তৈরির চেষ্টা চলছে কলকাতায়। তাঁরাই শহরে এই কর্মসূচি করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy