Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Al Qaeda

Gangarampur: রাকিবের জঙ্গি-যোগ মানতে নারাজ পরিবার

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই থমথমে ভাব এলাকায়। পরিবার এবং গ্রামের মানুষ মানতে পারছেন না রাকিবের আল-কায়দা যোগের কথা।

উদ্বেগ: আউশা গ্রামের বাড়িতে আব্দুর রাকিবের বাবা, মা ও এক আত্মীয়। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

উদ্বেগ: আউশা গ্রামের বাড়িতে আব্দুর রাকিবের বাবা, মা ও এক আত্মীয়। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

শান্তশ্রী মজুমদার
গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২২ ০৭:২৬
Share: Save:

বালুরঘাট-মালদহ রোড থেকে কয়েক কিলোমিটার ভিতরে আউশা গ্রাম। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার এই গ্রামের বাসিন্দা বছর সাঁইত্রিশের আব্দুর রাকিব। বুধবার, উত্তর ২৪ পরগনার শাসনের খড়িবাড়ি থেকে আল-কায়দা যোগ সন্দেহে রাকিবকে আটক করেছে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। সে ঘটনায় রাতারাতি প্রচারের কেন্দ্রে আউশা।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই থমথমে ভাব এলাকায়। পরিবার এবং গ্রামের মানুষ মানতে পারছেন না রাকিবের আল-কায়দা যোগের কথা। রাকিবের মা আলিমন বিবির দাবি, ‘‘উল্টোপাল্টা অভিযোগে ধরা হয়েছে। আমার ছেলে একেবারেই এ রকম নয়। ওকে ফাঁসানো হয়েছে।’’

গ্রামে বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখা গেল, আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রাকিব। মাটির বাড়ি। টিনের চাল দেওয়া। ছেলের খবর পেয়েই মুষড়ে পড়েছেন আলিমন বিবি। তিনি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। রাকিবের স্ত্রী শিউলি কথা বলছেন না। রাকিবের বাবা রফিউদ্দিন সরকার কৃষিকাজ করতেন। এখন বয়সের ভারে আর পারেন না। মেজ ভাই আব্দুল হাকিম সরকার প্রাণসাগর আদর্শ বিদ্যাপীঠের শিক্ষক। ছোট ভাই আজিজ স্নাতকের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। কুমারগঞ্জ বিধানসভার এই পরিবার শিক্ষিত বলেই এলাকায় পরিচিত।

পরিবার জানায়, গ্রামে চতুর্থ শ্রেণি পাশ করে উত্তরপ্রদেশে চলে যান রাকিব। সেখানে মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন। পড়াশোনার শেষ দিকে আসাদউদ্দিন ওয়াইসির দল ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ বা এআইএমআইএম-এর সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। কয়েক বছর আগে, ‘মৌলানা’ উপাধি পান। বাড়ি ফিরে, হাই মাদ্রাসা থেকে ফাজিল পড়া শেষ করে, উত্তর ২৪ পরগনার একটি খারিজি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। বিভিন্ন মজলিশে বক্তৃতা করতেন। তৃণমূলের সংখ্যালঘু সংগঠনের সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন বলে দাবি তাঁর বাবা ও মেজো ভাইয়ের।

রাকিব প্রায় ১৪ বছর হল বিয়ে করেছেন। তাঁর স্ত্রী শিউলিও স্নাতক। তাঁদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। সপ্তাহখানেক আগে, গ্রামের বাড়ি থেকে উত্তর ২৪ পরগনায় যান রাকিব। চার দিন আগে রাকিবের শ্বশুরবাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের বীরনইয়ে হানা দিয়ে দু’টি মোবাইল বাজেয়াপ্তকরে পুলিশ।

জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে বলেন, ‘‘আমরা এসটিএফকে সাহায্য করেছি মাত্র।’’ তার পরে, বুধবার রাকিবকে আটক করে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। আউশা গ্রামের বাসিন্দা ওসমান মিয়াঁ বলেন, ‘‘রাকিব খুব ভাল ছেলে বলেই জানি। কারও সঙ্গে কোনও ঝামেলায় জড়াতে দেখিনি। কিন্তু কী থেকে কী হল, বুঝতে পারছি না!’’

বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের শাসক দলকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। কলকাতায় তাঁর দাবি, ‘‘বাংলা সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর হয়ে উঠেছে। ধৃতদের এক জন আমার লোকসভার বাসিন্দা। ‘এগিয়ে বাংলা’ মডেল। তাই এগিয়ে রয়েছে। এ রকম অনেক জঙ্গি পশ্চিমবঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’’

জেলা তৃণমূল সংখ্যালঘু সেল-এর সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন অবশ্য বলেন, ‘‘আব্দুর রাকিবকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনি না। সংগঠনের মিছিল-মিটিংয়ে দেখিনি।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি মৃণাল সরকার বলেন, ‘‘যাঁকে নিয়ে মন্তব্য করা হচ্ছে, তাঁকে চিনি না। আমাদের রাজ্যে এসটিএফ সক্রিয় রয়েছে বলেই জাতীয় সুরক্ষা ব্যাহত হয়নি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Al Qaeda gangarampur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy