Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Road Accident

‘খাওয়াদাওয়া ছিল রাতে, ওরা আর ফিরবে না!’

স্বপন জানিয়েছেন, কিছু দিন আগে তাঁর মা পারুলের গুরুদেব প্রয়াত হন। এ দিন নবদ্বীপের বাঁশবাড়িতে গুরুদেবের শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠান ছিল।

শোকার্ত পরিজন। নিজস্ব চিত্র

শোকার্ত পরিজন। নিজস্ব চিত্র

গৌর আচার্য 
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২২ ০৯:৪০
Share: Save:

ভাইফোঁটা উপলক্ষে শুক্রবার রাতে নানা পদে খাওয়াদাওয়ার প্রস্তুতি ছিল পরিবারের। তবে সে খাওয়াদাওয়া আর হল না। নদিয়ার নাকাশিপাড়ায় এ দিন ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনায় দুই শিশু-সহ চার জন ছাড়াও, তাঁদের এক আত্মীয়ের মৃত্যুর ঘটনায় নেমে এল শোকের ছায়া।

উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ থানার জামবাড়ি এলাকার বাসিন্দা মৃতেরা হলেন, বিদ্যুৎ রায় (৩৮), পারুল রায় (৬৮), আয়ুষ্মান রায় (৪) ও অর্কপর্ণ রায় (১২)। পারুল বিদ্যুতের মা। আয়ুষ্মান ও অর্কপর্ণ বিদ্যুতের দুই ছেলে। ওই দুর্ঘটনায় বিদ্যুতের মামা মুকুল সরকারেরও (৫৬) মৃত্যু হয়েছে। তাঁর বাড়ি রায়গঞ্জের কসবা এলাকায়। সেখানেই তিনি অ্যালুমিনিয়ামের বাসনপত্র বিক্রির ব্যবসা করতেন।

নদিয়ার নাকাশিপাড়ায় এ দিন বিদ্যুতের ছোটগাড়ির সঙ্গে একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তাতেই গাড়ির আরোহী ওই পাঁচ জন মারা যান। ঘটনার কথা শোনার পর থেকেই বিদ্যুতের স্ত্রী কৃষ্ণা শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। বিদ্যুতের দাদা স্বপন বলেন, “শুক্রবার রাতের মধ্যেই ওদের সবার বাড়ি ফেরার কথা ছিল। বৃহস্পতিবার এলাকায় খাসির মাংস না পাওয়ায়, শুক্রবার রাতে বাড়িতে ভাইফোঁটার খাওয়াদাওয়ার অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল।”

জামবাড়ি এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে, বাড়ির সামনেই বিদ্যুতের হার্ডওয়্যার, নির্মাণসামগ্রী ও গোডাউনের ব্যবসা রয়েছে। বিদ্যুতের স্ত্রী কৃষ্ণা গৃহবধূ। আয়ুষ্মান রায়গঞ্জের একটি বেসরকারি ইংরেজিমাধ্যম স্কুলে নার্সারিতে পড়ত। অর্কপর্ণ শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল। বিদ্যুতের একমাত্র দাদা স্বপনও হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী। তাঁদের বাবা ফণিভূষণ বছর আটেক আগে মারা গিয়েছেন।

স্বপন জানিয়েছেন, কিছু দিন আগে তাঁর মা পারুলের গুরুদেব প্রয়াত হন। এ দিন নবদ্বীপের বাঁশবাড়িতে গুরুদেবের শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠান ছিল। সে অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই শুক্রবার ভোর ৩টে নাগাদ বিদ্যুৎ, মা পারুল, দুই ছেলে ও মামা মুকুলকে নিয়ে ছোট গাড়িতে করে প্রয়াত গুরুদেবের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। গাড়িটি বিদ্যুতের। তিনিই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন।

স্বপন বলেন, “আমার ছেলে নেই। আমার বড় মেয়ে সুমি আয়ুষ্মান ও অর্কপর্ণকে ভাইফোঁটা দেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার সকালেই গাজলের শ্বশুরবাড়ি থেকে আমার বাড়িতে আসে। কত আনন্দ, হইচই করে সুমি ও আমার আরও দুই মেয়ে সম্পূর্ণা ও সুকন্যা ওদের খুড়তুতো ভাই আয়ুষ্মান ও অর্কপর্ণকে ভাইফোঁটা দেয়। হঠাৎই সব এলোমেলো হয়ে গেল!”

অন্য বিষয়গুলি:

Road Accident raiganj nakashipara
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy