কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে রাতে খাবার দিতে আসা ‘ডেলিভারি এজেন্টের’ গাড়ির নম্বর-সহ বিভিন্ন তথ্য লিখে রাখছেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। নিজস্ব চিত্র
শহরের ব্যস্ত রাস্তা সুনীতি রোড তখন প্রায় ফাঁকা। হাতেগোনা কিছু যানবাহন যাতায়াত করছে। হরিশ পাল চৌপথি লাগোয়া ওই রাস্তার পাশেই কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। প্রধান ফটকের সামনে নিরাপত্তারক্ষীদের কারও দেখা মিলল না। অবাধেই ভিতরে যাতায়াত করা যাচ্ছে। প্রবেশ-পথের মুখেই এক দিকে রোগীর পরিজনদের বসার ব্যবস্থা। সেখানে তখন কেউ বিশ্রাম নিচ্ছেন, কেউ বসে রয়েছেন।
হাসপাতালের ভিতরে কারমাইকেল ওয়ার্ডের সামনেও তখন প্রায় ফাঁকা। জরুরি বিভাগের সামনে দু’জন নিরাপত্তারক্ষী বসে রয়েছেন। হাসপাতাল ভবনের ভিতরে ঢুকতে হলে যাঁদের অনুমতি লাগবে। কিন্তু অবাধে হাসপাতাল চত্বরে যাতায়াতের উপরে নজর রাখার যেন কেউ নেই। পিছনের দিকে বর্হিবিভাগের রাস্তা লাগোয়া চত্বরের ফটক শিকল দিয়ে তালা দেওয়া। পাশেই ফাঁকা রাস্তা, একা হেঁটে ঢুকতে সমস্যা নেই। তার কিছুটা অংশ অন্ধকারাচ্ছন্ন।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা নিয়ে হইচইয়ের আবহে রাতের কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে যাতায়াত হচ্ছে এমন ভাবেই। হাসপাতালের এক স্বাস্থ্যকর্মী বলছিলেন, ‘‘খাতায়-কলমে বজ্রআঁটুনি, বাস্তবে ফস্কা গেরো! এ ভাবেই চলছে।’’
প্রায় এক কিলোমিটার দূরে এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাস, ছাত্রাবাস, প্রশাসনিক ভবনের পরিকাঠামো। প্রায় ২৫ একর জমিতে তৈরি। বিবেকানন্দ স্ট্রিট হয়ে কৃষি ফার্মের রাস্তা হয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন কিছুটা এলাকা পার হতে হল। ক্যাম্পাসের এক দিকে প্রাসাদের আলো ঝলমলে ছবি, অন্য দিকে চষা খেতে অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থা। সেখানে প্রধান ফটকে নিরাপত্তারক্ষী, সিভিক কর্মীরা সতর্ক। অনলাইনে খাবার নিয়ে আসা সংস্থার মোটরবাইকের নম্বর লিখে ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কিছুটা দূরেই পড়ুয়াদের হস্টেল লাগোয়া এলাকার অন্য গেটে ততক্ষণে তালা ঝোলাতে ব্যস্ত এক রক্ষী। শিকল দিয়ে টেনে ঝোলানো হল তালা। কেউ থাকেন না গেটে? উত্তর এল, “ভিতরে সবাই থাকেন, মেন গেটেও রয়েছেন। এখানে তালাই ঝোলানো থাকে।”
তাঁদেরই একজনের কথায়, ‘‘হাসপাতাল থেকে কলেজ ক্যাম্পাসের অনেকটা এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় নেই। পাকা পাঁচিলের সমস্যাও রয়েছে কিছুটা অংশে। সুনসান রাতে মেডিক্যাল কলেজে যাতায়াতের প্রয়োজনে ‘অন কল’ হলে গাড়ি মেলে, কিন্তু সে রকম না হলে আবাদী খেত, ফাঁকা জমির মাঝবরাবর রাস্তায় অনেকেকে ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করতে হয়।’’ পুলিশ সূত্রে অবশ্য দাবি, রাতের রাস্তায় টহল হয় নিয়মিত।
কোচবিহারের ওই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ নির্মল মণ্ডল বলেন, “আরও কিছু সিসি ক্যমেরা দ্রুত বসানো হবে। নিরাপত্তায় অন্য খামতি থাকলে তা-ও মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে।” এমএসভিপি রাজীব প্রসাদ বলেন, “আরও কিছু রক্ষীর প্রয়োজন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।” হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশ, স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। আরও যা সমস্যা, তা মেটানো হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy