ফাইল চিত্র।
পর্যটকদের জন্য আলাদা কোনও বিধিনিষেধ নেই। কিন্তু পরপর গন্ডার মৃত্যুর প্রেক্ষিতে পরোক্ষ কিছু কারণে আজ, রবিবার থেকে জলদাপাড়ায় কয়েকদিনের জন্য হাতি সাফারি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন বনকর্তারা।
গন্ডার-মৃত্যুর জেরে হাতিদের শরীরেও কিছু প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। সেইজন্যই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন বন দফতরের কর্তারা। তবে আগামী বৃহস্পতিবার থেকেই ফের সাফারি শুরু করা যাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
পুজোর সময় থেকে শুরু করে মার্চ-এপ্রিল মাস পর্যন্ত পর্যটনের ভরা মরসুম থাকে উত্তরবঙ্গে। এই সময় প্রচুর পর্যটক পাহাড়ের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের জঙ্গলেও ঘুরতে আসেন। যে জঙ্গলগুলির অন্যতম জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান। এখানে এসে মনের সুখে জঙ্গলের প্রাকৃতিক শোভা উপভোগ করার পাশাপাশি হাতির পিঠে চেপে জঙ্গল ঘুরে দেখা কিংবা বন্যপ্রাণীদের কাছ থেকে দেখার চাহিদাও নেহাত কম নয়। কিন্তু চলতি সপ্তাহে জলদাপাড়ায় একের পর এক গন্ডার মৃত্যুর জেরে জলদাপাড়ার হাতিদের সুরক্ষিত রাখতে তাদের শরীরে কিছু প্রতিষেধক প্রয়োগ করা হচ্ছে। শনিবারও এই কাজ চলেছে। এর ফলে হাতিগুলিকে দিনকয়েকের বিশ্রামে পাঠানোরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই সাফারি বন্ধের নির্দেশ।
বন দফতর সূত্রের খবর, গত মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত এই জাতীয় উদ্যানে পাঁচটি গন্ডারের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর কারণ অ্যানথ্রাক্স বলেই প্রথমে বিভিন্ন মহল থেকে সন্দেহ করা হচ্ছিল। যদিও শনিবার গন্ডারদের মৃত্যুর কারণ অ্যানথ্রাক্স নয় বলে এআরডি দফতর তাঁদের জানিয়েছে বলে দাবি করা হয় বন দফতরের তরফে। কিন্তু তার অপেক্ষায় না থেকে শুক্রবার থেকে গন্ডারদের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের প্রতিষেধক দেওয়া শুরু করে বন দফতর। সেইসঙ্গে ওইদিন থেকেই অজানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা আটকাতে এক ধরনের প্রতিষেধক কুনকি হাতিদেরও দেওয়া শুরু হয়।
তবে এই গন্ডার মৃত্যুর কারণে অবশ্য জলদাপাড়ায় যে জায়গাগুলিতে পর্যটকদের ঘুরে বেড়ানোর অনুমতি রয়েছে তাতে আপাতত কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে না। শুধু বন্ধ থাকবে হাতি সাফারি। উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, ‘‘জঙ্গলের যে জায়গায় সংক্রমণের উৎপত্তি সেটা পর্যটন এলাকার মধ্যে পড়ে না। ফলে জলদাপাড়ায় পর্যটকদের ঘুরে বেড়ানো নিয়ে আমরা কোনও বিধি-নিষেধ আরোপ করছি না। তবে সাফারির সঙ্গে যুক্ত হাতিদেরও প্রতিষেধক দিতে হচ্ছে। সেজন্যই রবিবার থেকে কয়েকদিনের জন্য তা বন্ধ রাখা হবে।’’ বনকর্তাদের কথায়, ওই প্রতিষেধক দেওয়ার পর হাতিদের তিনদিন বিশ্রামে রাখতে হয়। সেই জন্যই এই সিদ্ধান্ত।
বন দফতর সূত্রের খবর, জলদাপাড়ার জঙ্গলে প্রতিদিন ভোর থেকে তিনটি শিফটে হাতি সাফারি হয়। আপাতত দিন চারেক যা উপভোগ করতে পারবেন না পর্যটকরা। তবে জলদাপাড়ার ডিএফও কুমার বিমল বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার থেকেই ফের হাতি সাফারি শুরু হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy