খেরকাটা জঙ্গলে অসুস্থ জংলি হাতি। নিজস্ব চিত্র।
অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে জংলি হাতি। রাগে দলের অন্য দুই হাতি তান্ডব চালালো জঙ্গল থেকে ৫ কিলোমিটার দূরের জনপদে! ঘটনাটি ঘটেছে বানারহাট ব্লকের অন্তর্গত নাথুয়া বাজারে। সোমবার গভীর রাতে বাজারে ঢুকে পর পর দু’টি দোকানের শাটার ভেঙ্গে চালের বস্তা ভেতরে থাকা বিভিন্ন সামগ্রী নষ্ট করে দু’টি হাতি।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন থেকেই নাথুয়া রেঞ্জের অন্তর্গত পার্শ্ববতী খেরকাটা জঙ্গলে অসুস্থ অবস্থায় পরে রয়েছে একটি জংলি হাতি। যাকে রোজ রাতে তার সঙ্গীরা পাহারা দেয়। এমনকি মাঝেমধ্যে ওই দুই সঙ্গী খাবার জোগাড় করে এনেও তাকে খাওয়াচ্ছে বলেই বনকর্তা থেকে এলাকাবাসীর একাংশের দাবি। গ্রামবাসীরা দীর্ঘ দিন থেকেই জঙ্গলের সেই অসুস্থ হাতিটিকে নিয়মিত খাবার পৌঁছে দিচ্ছিলেন নিজেদের সাধ্যমত। পাশাপাশি নজর রাখছিলেন তার উপর। কিন্তু সোমবারের ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারাও। তবে কি সঙ্গী হাতির অসুস্থতা নিয়ে ক্ষোভেই এভাবে বাজারের মধ্যে ঢুকে পড়ছে বুনো হাতি?
নাথুয়া ব্যাবসায়ী সমিতির সহ সম্পাদক সজল নাগ জানান, ডুয়ার্স জুড়ে প্রচণ্ড বন্য জন্তুর আনাগোনার ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যথেষ্ট বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘মঙ্গলবার ভোররাতে নাথুয়া চৌপথীতে দু’টি হাতি এসে ব্যাবসায়ী রমেন সাহা ও সুরেশ প্রসাদ রস্তগীর দোকানের শাটার ভেঙ্গে স্বমহিমায় চাল, ডাল খেয়ে নেয়। সঙ্গে প্রচুর জিনিস তছনছ করে চলে যায়। স্বাভাবিক ভাবেই এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়।’’
ডুয়ার্সের পরিবেশ প্রেমী সংস্থা ন্যাসের কর্মকর্তা নফসার আলির মতে, হাতির স্মৃতিশক্তি খুবই মারাত্বক। ঘটনার পাশ্ববর্তী জঙ্গলেই দীর্ঘদিন ধরে একটি অসুস্থ হাতি রয়েছে। এর আগে শোনা গিয়েছে তার সঙ্গীরা হাতিটিকে পাহারা দিয়ে রাতের বেলা খাবার নিয়ে দিত। এর পর গ্রামবাসীরাও ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন খাবার দিতেন। বর্তমানে মুমূর্ষ অবস্থায় রয়েছে সেই হাতিটি। বন দফতরের কড়া নজরদারিতে রয়েছে হাতিটি। তাই গ্রামবাসীরা সেখানে প্রবেশ করে খাবার দিতে পারছেন না।
মরাঘাট রেঞ্জের রেঞ্জার রাজকুমার পাল বলেন, ‘‘গত রাতে অসুস্থ হাতির দুই সঙ্গী নাথুয়া বাজারে ঢুকে পড়েছিল। তারা দোকান ঘর ভেঙেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারেরা বন দপতরের নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করলে ক্ষতিপূরণ পাবেন।’’ তিনি আরও জানান অসুস্থ হাতিটির পাশে এখনও নিয়মিতভাবে তার দুই সঙ্গী এসে পাহারা দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘হাতিদের মধ্যে এটা হয়েই থাকে। হাতিরা সহজে দলত্যাগ করে না। সঙ্গীদের ছেড়ে যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy