প্রতীকী ছবি।
কলকাতা হাইকোর্ট বলছে, পুজো মণ্ডপে এ বার কন্টেনমেন্ট জ়োন। পুলিশের নজরদারি, নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে ব্যারিকেড তৈরির কথাও বলা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকেরই প্রশ্ন, রাস্তা-বাজারে যে ভিড় হচ্ছে এখন, তা নিয়ন্ত্রণ না হলে কি করোনা সংক্রমণ কমবে? এই সংশয় উস্কে দিয়ে মঙ্গলবার, চতুর্থীর দিন সন্ধ্যাতেও শিলিগুড়িতে দেখা গেল বাজারে ভিড়, মণ্ডপ এলাকায় মোটরবাইক, টোটোর সারি। হাইকোর্টের নির্দেশ শোনার পরে অনেকেই পুজোর বাজারের সঙ্গে ঘুরে আসছেন মণ্ডপের কাছে। অভিযোগ, বেশিরভাগ জায়গায় এখনও ব্যারিকেড, নিয়ম নীতির বালাই নেই।
ঘোঘোমারির বাসিন্দা, পেশায় কাঠের আসবাবের মিস্ত্রি রতন সাহা। বাইকের পিছনে বসে সাত বছরে ছেলে সুমন। রতনবাবুর মাস্ক থুতনিতে ঝুললেও সুমন অবশ্য সুতির কাপড়ের মাস্কে মুখে ঢেকে ছিল। দু’জনে দাঁড়িয়ে ছিলেন রথখোলার একটি ক্লাবের মণ্ডপের সামনে। পাশে সাইকেল, টোটো নিয়ে দাঁড়িয়ে আরও অনেকেই। প্রায় তৈরি মণ্ডপ ও ঠাকুর। সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে দেখছেন সকলেই। রতনবাবুর কথায়, ‘‘পুজোর চার দিন নাকি শুনছি মণ্ডপে আসা যাবে না। কোর্ট রায় দিয়েছে, বলছে সবাই। তাই ছেলের জুতো কেনার ফাঁকে কয়েকটা মণ্ডপ দেখিয়ে নিচ্ছি।’’
একই ছবিটা হায়দারপাড়ার একটি ক্লাবের মণ্ডপের সামনে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে দেবীকে বসিয়ে আলো জ্বেলে দিতেই প্যান্ডেলের সামনে লোকজনের ভিড় হয়। একেবারে বাজার এলাকার মধ্যে পুজো হওয়ায় অনেকেই বাজারে এসে পুজোও দেখে যান। ইসকন রোডের দিক থেকে এসেছিলেন রেবতী রাই, জ্যোতি কার্কিরা। দু’জনই কলেজ ছাত্রী। একজনের মুখেও মাস্ক নেই। নাম পরিচয় অনেক কষ্টে বলার পর দু’জনের দাবি, ‘‘মাস্কটা ব্যাগে আছে, পরে নেব। পুজোর সালোয়ার স্যুট দর্জির কাছে ঠিক করতে দেওয়া ছিল। বাইরে এসেছি, আরও বন্ধুরা আসছে। সবাই মিলে কয়েকটা মণ্ডপ ঘুরব। পরে তো আর দেখতে পাব না।’’
দুই জায়গাতেই ক্লাব বা পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা কিন্তু যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছেন। অন্যবারের মতো এ বার যাতে কেউ আর মণ্ডপে ঢুকতে না পারে, সেই জন্য বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করে ঘিরে দেওয়া হয়েছে মণ্ডপ। রবীন্দ্রনগরে পুলিশের ব্যারিকেড ব্যবহার হয়েছে। কিন্তু তাতে কী! মানুষের উচ্ছ্বাস যে করোনা থামাতে পারছে না, তা পরিষ্কার। এদিন রাত বাড়তেই বাসিন্দাদের স্কুটি, বাইক নিয়ে ঘোরাঘুরি গোটা শহরে নজরে এসেছে। যেমন ভিড় বাজারগুলিতে, তেমন ভিড় মণ্ডপগুলির আশেপাশে। রাতে এনজেপির সেন্ট্রাল কলোনির সামনে দাঁড়িয়ে শক্তিগড়ের বাসিন্দা নিমাই পালিত বলেন, ‘‘কবে আবার কী নির্দেশ হবে, কে জানে। শহরের বড় পুজো কেমন হচ্ছে, দেখিয়ে নিয়ে গেলাম বাড়ির সবাইকে।’’
মেলা, জমায়েতে রাজ্য সরকার নিষেধাজ্ঞা দিলেও শহরের বাঘাযতীন পার্ককে দেখে তা বোঝার উপায় নেই। প্রতি বছরের পুজোর মেলার মতো পরপর ফাস্ট ফুডের গাড়ি। আর চারপাশে তরুণ-তরুণীদের ভিড়, আড্ডা। করোনা স্বাস্থ্য বিধি বলে কিছু আছে, তা বোঝা দায়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy