উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসারের দফতরের সামনে বিক্ষোভ অস্থায়ী কর্মীদের। ছবি: স্বরূপ সরকার।
আচার্য তথা রাজ্যপালের এক নির্দেশের জেরে মঙ্গলবার তুমুল উত্তেজনা ছড়াল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। কর্মসমিতির বৈঠকে উপাচার্য এবং আচার্যের প্রতিনিধিকে ঘেরাও করে রেখে, হুমকি এবং চাপ দিয়ে অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বাড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল গত ১৯ ফেব্রুয়ারি। ওই ঘটনার চার দিন পরে উপাচার্যকে পাঠানো এক নির্দেশে বেতন বৃদ্ধির সেই নির্দেশিকা বাতিল করেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পাশাপাশি, উপাচার্যকে ও আচার্যের প্রতিনিধিকে আটকে রেখে জোর করে বেতন বাড়ানোর বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষাকর্মী সংগঠনের দুই নেতার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ আসে রাজভবন থেকে। প্রয়োজনে উপাচার্য সিএম রবীন্দ্রন চাইলে তাঁদের ‘বরখাস্ত’ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এ দিন আচার্যের ওই নির্দেশিকার খবর জানাজানি হতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে হইচই শুরু হয়। উপাচার্য বা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কেউ না-থাকায় বিকেল ৫টা থেকে ফিনান্স অফিসার সুরজিৎ দাসকে দফতরে ঘেরাও করে সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি। পরে ফিনান্স অফিসারের ফোনের স্পিকার ‘অন’ করে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত ২৯ ফেব্রুয়ারি দিল্লি থেকে ফিরে আন্দোলনকারীদের আলোচনায় বসার কথা জানালে দু’ঘণ্টা পরে অবস্থান ওঠে। আজ, বুধবার থেকে কর্মবিরতি রেখে আন্দোলনের কথা জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘কাজে দিল্লিতে রয়েছি। আচার্যের দফতর থেকে নির্দেশ পেয়ে উপাচার্য সেই মতো ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। অস্থায়ী কর্মীদের ১০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি এবং অস্থায়ী শিক্ষকদের ন্যূনতম বেতন ৫৭ হাজার ৭০০ টাকা করার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তা বাতিল হচ্ছে। আন্দোলনকারীদের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা বিষয়ে ফিরে গিয়ে আলোচনা হবে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানো সম্ভব বলে মনে করি।’’
শিক্ষাবন্ধু সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক রঞ্জিত দাস এবং আনওয়ার আলি-সহ আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে অবৈধ কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে নির্দেশিকায়। ওই দুই যুগ্ম আহ্বায়ক জানান, আচার্যের কাছে যে অভিযোগ গিয়েছে তা ভিত্তিহীন। তাঁকে তাঁরা এখানে এসে বাস্তব পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নিতে অনুরোধ করবেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বেতন বৃদ্ধির নির্দেশ দেওয়ার পরেও তা নিয়ে নোংরামো করা হচ্ছে বলেও তাঁদের অভিযোগ। তাঁরা আরও জানান, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁরা হস্তক্ষেপ চেয়ে অনুরোধ করবেন।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কর্মসমিতির বৈঠক ডাকা হয়েছিল। উচ্চ শিক্ষা দফতর অস্থায়ী উপাচার্য থাকায় ওই বৈঠক নিষেধ করেছে জানিয়ে পরে তা বাতিল করা হয়। শিক্ষাবন্ধু সমিতি বৈঠকের বিরোধিতায় এবং অস্থায়ী কর্মীদের ১৬ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে। ন্যুনতম বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে নামে অস্থায়ী শিক্ষকেরাও। ওই বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন আচার্য প্রতিনিধি তথা ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল ধীরাজকুমার ত্রিবেদী আটকে পড়েন। পরে তাঁকে ছাড়া হলেও উপাচার্যকে দফতরে রাত পর্যন্ত আটকে রাখা হয়। ৮টা নাগাদ বৈঠক করে অস্থায়ী কর্মীদের ১০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির নির্দেশ দেন উপাচার্য। পরে অস্থায়ী শিক্ষকদের দাবিও মেনে নেওয়ার কথা জানানো হলে ঘেরাও ওঠে। ২০ ফেব্রুয়ারি সেই মতো বেতন বৃদ্ধির নোটিসও দেওয়া হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy