ফাইল চিত্র।
যে কোনও প্রবীণ নাগরিকের তাঁর নিজের বাড়িতে শান্তিতে থাকার অধিকার রয়েছে। সেই অধিকারে সন্তান কোনও ভাবেই বাধা হতে পারেন না বলে মন্তব্য করল কলকাতা হাই কোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিটের সিঙ্গল বেঞ্চ। গত শুক্রবার এ সংক্রান্ত একটি মামলার নির্দেশ প্রসঙ্গে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বক্তব্য, প্রবীণ নাগরিকের বাড়িতে তাঁর পুত্র, পুত্রবধূ এবং তাঁদের সন্ততিদের থাকার ‘লাইসেন্স’ বা অনুমতি থাকে ততক্ষণই, যতক্ষণ না সেই প্রবীণের শান্তিভঙ্গ বা কোনও সমস্যা হচ্ছে। তাঁদের কারণে কোনও প্রবীণ নাগরিকের অস্বস্তি বা সমস্যা হলে সেই ‘লাইসেন্স’-এর মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।
এই মন্তব্য করে ওই মামলার এক নির্দেশে বিচারপতি দু’দিনের মধ্যে ওই প্রবীণ নাগরিকের বাড়ি থেকে পুত্রবধূকে চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন। ভক্তিনগর থানার পুলিশকে বিচারপতির নির্দেশ, পুলিশ যেন ওই প্রবীণ নাগরিকের শান্তিতে বসবাসের অধিকার রক্ষায় আদালতের নির্দেশ পালন করে।সার্কিট বেঞ্চে দায়ের করা একটি মামলায় এক প্রবীণ নাগরিক অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর পুত্রবধূ জোর করে ঢুকে তাঁর বাড়ি দখল করেছেন। সেই সময়ে তিনি বাড়িতে ছিলেন না বলে দাবি অভিযোগকারী ওই প্রবীণের। তাঁর আরও অভিযোগ, তাঁর ছেলে বিয়ের পর পুত্রবধূকে নিয়ে আলাদা বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন। পরে তাঁদের সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় ছেলে আবার বাড়িতে ফিরে এসেছেন। পুত্রবধূর পাল্টা অভিযোগ, শ্বশুর ও তাঁর স্বামী মিলে তাঁকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা চলছে।
গত শুক্রবার জলপাইগুড়ি সার্কিটের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি মামলাটির নিষ্পত্তি করে তাঁর নির্দেশে বলেছেন, পুত্র এবং পুত্রবধূর বিবাহ সংক্রান্ত বিবাদে আদালত ঢুকছে না। তবে ওই প্রবীণ নাগরিকের শান্তিতে বসবাসের অধিকার রয়েছে। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, যে বাড়িটি নিয়ে বিবাদ, সেটি প্রবীণ নাগরিকের নামেই রয়েছে। যদিও বিবাহ সংক্রান্ত বিবাদ নিয়ে কোনও নির্দেশ বা পর্যবেক্ষণ আদালতের নেই বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। পুত্রবধূর যে অভিযোগগুলি তাঁর শ্বশুরবাড়ির পরিবারের বিরুদ্ধে রয়েছে সেগুলি দেওয়ানি এবং ফৌজদারি যা-ই হোক না কেন, সেগুলি নিয়ে পরবর্তী কালে প্রক্রিয়া চলতে পারে এবং সেগুলি নিয়ে আদালত পর্যবেক্ষণ দেয়নি বলে নির্দেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাজ্য সরকারের তরফে আইনজীবী ছিলেন বিক্রমাদিত্য ঘোষ। তিনি বলেন, “হাই কোর্ট জানিয়েছে, পুত্রবধূর দাবি নিয়ে পৃথক ভাবে আইনি প্রক্রিয়ায় দ্বারস্থ হওয়া যেতে পারে। তবে প্রবীণ নাগরিকের শান্তিতে বসবাসের অধিকার রয়েছে। সেটা নিশ্চিত করতে বলেছেন বিচারপতি। এবং প্রবীণ নাগরিকের বাড়িতে পুত্র বা পুত্রবধূর থাকার লাইসেন্স আছে মাত্র এবং সেটিরও মেয়াদ ফুরোতে পারে, এটাই গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy