Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

দূষণে বাড়ছে রোগ, আশঙ্কা

ইন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘শিলিগুড়িতে তো সে অর্থে কল-কারখানা নেই। তবুও ধোঁয়া-দূষণ বাড়ছে। ফলে রোগও বাড়ছে।’’

ধোঁয়া: শিলিগুড়ির রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র

ধোঁয়া: শিলিগুড়ির রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৮ ০৮:৪৫
Share: Save:

একটা সময় ছিল যখন বর্ষা এলেই পেটের রোগের বাড়াবাড়ি হতো শিলিগুড়িতে। সে সময়েই মশা বাহিত রোগের প্রকোপও বাড়ত। জঞ্জাল-জল জমে শিলিগুড়ির সেই চেহারা পাল্টে গিয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।

বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলছেন, এখন সারা বছরই পেটের রোগের প্রকোপ দেখা যায়। কারও মতে, ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়াও কম বেশি বছর জুড়েই থাকে। বর্ষার সময়ে তা কখনও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। গোটা শিলিগুড়িতে শিশু-কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও বেড়ে চলেছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কয়েকজন বিশেষজ্ঞে। শহরবাসীকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তাঁরা।

যেমন, সেবক রোডের একটি হাসপাতালে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ইন্দ্রনাথ ঘোষ জানান, বায়ু দূষণের জন্য শিলিগুড়িতে শ্বাসনালিতে সংক্রমণের ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। যাঁরা ধূমপান করেন না, তাঁদের অনেকেই শ্বাসকষ্টের রোগে ভুগতে শুরু করেছেন বলে জানান তিনি। এমনকী স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যেও হাঁপানির ঘটনা তুলনামূলকভাবে বাড়ছে। ইন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘শিলিগুড়িতে তো সে অর্থে কল-কারখানা নেই। তবুও ধোঁয়া-দূষণ বাড়ছে। ফলে রোগও বাড়ছে।’’

শিলিগুড়ির মেডিসিন বিভাগের বিশিষ্ট চিকিৎসক শেখর চক্রবর্তীর অভিজ্ঞতাও উদ্বেগজনক। তিনি বলেন, ‘‘বাড়ির সামনে জঞ্জালের প্যাকেট ছুঁড়ে দিলাম। ঝামেলা চুকে গেল ভাবার দিন শেষ। মনে রাখতে হবে, নর্দমায় জঞ্জাল জমলে জল দাঁড়িয়ে যাবে। সেখানে মশার আঁতুড়ঘর তৈরি হবে। সেই মশা জঞ্জাল যিনি ছুঁড়েছেন, তাঁর ঘরে ঢুকেও ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি ছড়াতে পারে।’’ পুরসভাকেও সচেতনতা বাড়ানোর দিকে জোর দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

শহরের ডাম্পিং গ্রাউন্ড, যথেচ্ছ জঞ্জালের স্তূপ জমা, নিকাশি ব্যবস্থা ঠিকমতো সাফাই করা না হলে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক শঙ্খ সেন। তিনি বলেন, ‘‘গত বছর ডেঙ্গির প্রকোপ মারাত্মক হয়েছিল। এ বারও আমরা ভীষণ দুশ্চিন্তায় রয়েছি। জঞ্জাল, জল জমে থাকলে এ সব রোগের প্রকোপ কয়েকগুণ বাড়ার আশঙ্কা থাকে। পুরসভা, প্রশাসন তো বটেই, শহরবাসীকেও মাথায় রাখতে হবে।’’

শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের দাবি, বর্ষার কথা মাথায় রেখে নিকাশির হাল ফেরাতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় সমস্যা হচ্ছে।’’ রাজ্য সেই টাকা দিচ্ছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন।

যদিও কটাক্ষ করেছেন পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার। তিনি বলেন, ‘‘টাকা-টাকা করেই সব সমস্যা, ব্যর্থতা আড়াল করা যায় না। শহরে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার প্রকোপ কোনওদিন মহামারির আকার নিলে পুরসভা তার দায় এড়াতে পারবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Pollution Disease Road
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy