পরীক্ষা কেন্দ্রে হাসিনা খাতুন। নিজস্ব চিত্র।
স্বামী মারা গিয়েছেন অনেকদিন আগে। কোনোমতে সংসার চালান ভিক্ষাবৃত্তি করে। সে ভাবেই প্রতিবন্ধী মেয়েকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসালেন মা মাসেদা বেওয়া।
মেয়ে হাসিনা খাতুন উঠে দাঁড়িয়ে চলাফেরা করতে পারে না। তবু মনের জোরে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে। সেই মনের জোরকে ভর করেই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসেছে মালদহের গাজলের দেওতলা অঞ্চলের তরিকুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী হাসিনা।
গজোল দলতলা অঞ্চলের কুলি পুকুর অঞ্চলের বাসিন্দা মাসেদার একমাত্র মেয়ে হাসিনা। তাঁর এক ছেলেও রয়েছে। স্বামী মারা যাওয়ার তিনি ছেলে-মেয়েকে বড় করে তোলার জন্য ভিক্ষাবৃত্তিকেই বেছে নেন। মাসেদার কথায়, ‘‘ মেয়ের পড়াশুনার খুব ইচ্ছা ছিল। তাই ওকে হাজার কষ্টের মধ্যে দিয়েও পড়াচ্ছি।’’ পরীক্ষা চলাকালীন প্রতিদিন মেয়েকে পৌঁছে দিয়ে ভিক্ষা করতে যান মাসেদা ফিরে মেয়ে নিয়ে বাড়ি ফেরেন।
গাজোল হাজী মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ে সে পরীক্ষা দিচ্ছে। প্রতিদিন টোটো করে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য হাজির হচ্ছে সে। স্কুলের ভেতর পর্যন্ত টোটো নিয়ে যাওয়া ব্যবস্থা করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তার পর কোলে করে মা পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিচ্ছেন। পুলিশ তাঁদের সাহায্য করছে বলে জানিয়েছে মাসেদা।
হাসিনার অভিযোগ, ‘‘কোনও সরকারি সাহাষ্য পাইনি। মা-ই ভিক্ষা করে আমাকে পড়াচ্ছেন।’’ তবে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে পুলিশ ও স্কুল সহযোগিতা করেছে বলে সে জানিয়েছে।
গাজল হাজী মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক জীবন কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, ‘‘আমরা খবর পাই প্রতিবন্ধী ছাত্রী পরীক্ষা দেবে আমাদের পরীক্ষা কেন্দ্রে। আমরা নানাভাবে তাকে সহযোগিতা করছি যাতে তার পরীক্ষা দিতে কোনও অসুবিধা না হয়।’’
ভিক্ষা করে ছেলেকেও পড়াচ্ছে মাসেদা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy