প্রতীকী ছবি।
প্রশাসনিক আধিকারিক থেকে পাচার রোধে কর্মরত এনজিওর শীর্ষস্থানীয় অনেক কর্তাদের মতে, শিশু পাচারে উত্তরবঙ্গের অন্যতম করিডর শিলিগুড়ি। নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ থেকেও শিলিগুড়ি হয়ে শিশু পাচারের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় থাকা নিউ জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি জংশন রেল স্টেশন এবং বাগডোগরা বিমানবন্দর হয়ে পাচারের সময় উদ্ধার হয়েছে বহু শিশু। তাই শিশু সুরক্ষায় এ বার শিলিগুড়ির জন্য পৃথক চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি (সিডব্লিউসি) তৈরি করছে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন। কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বলেই জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী।
প্রতি জেলায় একটি করে সিডব্লিউসি থাকে। সেই মতো এত দিন দার্জিলিং সিডব্লিউসির অধীনেই ছিল শিলিগুড়ি। কিন্তু গত প্রায় দু’বছর দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে কোনও সিডব্লিউসি নেই। সম্প্রতি দুই জেলার কাজকর্ম দেখভাল করত আলিপুরদুয়ার সিডব্লিউসি। এখন সে দায়িত্বে রয়েছে জলপাইগুড়ি।
অনেক এনজিও কর্তার মতে, এর ফলে কার্যত মুখ থুবড়ে পরেছে শিশু পাচার রোধের কাজ। সরকারি নিয়ম অনুসারে পাচারের সময় উদ্ধার করা শিশুদের প্রথমে সিডব্লিউসি-র কাছে পেশ করতে হয়। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তারা সিদ্ধান্ত নেয় শিশুটিকে কোন হোমে পাঠান হবে। দার্জিলিং, কালিম্পংয়ে সিডব্লিউসি না থাকায় সে সব এলাকায় উদ্ধার হওয়া শিশুকে জলপাইগুড়িতে নিয়ে যেতে হচ্ছে। দার্জিলিং জেলা লিগ্যাল এইড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকার বলেন, ‘‘অনেক সময় উদ্ধার হওয়া শিশুকে নিয়ে দুই জেলায় ঘুরপাক খেতে হচ্ছে। পুলিশও দায়িত্ব নিতে চাইছে না। ফলে শিশুকে কোথায় রাখা হবে তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হচ্ছে।’’ এই সব কারণেই উদ্ধার কাজে আগ্রহ দেখাচ্ছে না দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলি। রাজ্য পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘একটি শিশু উদ্ধারের পর তাকে হোম পর্যন্ত পাঠানোর ক্ষেত্রে অনেক আইনি পদক্ষেপ রয়েছে। সেগুলির একটির ক্ষেত্রেও ব্যাঘাত হলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। তাই অন্য জেলায় ঘুরপাক খাওয়ার ভয়ে অনেকেই দায়িত্ব এড়াতে চাইছেন।’’
প্রশাসনিক কর্তারা জানাচ্ছেন, শিলিগুড়ি সিডব্লিউসি তৈরি হলে এনজেপি বা শিলিগুড়ি কমিশনারেটের মধ্যে থাকা জলপাইগুড়ির অংশের শিশু সুরক্ষার কাজ তাঁরাই দেখভাল করবেন বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান এনজিও কর্তারাও। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘শিলিগুড়িতে আলাদা সিডব্লিউসি তৈরি হলে খুব সহজেই অনেক জটিলটা এড়ানো সম্ভব হবে।’’ অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কমিটি তৈরির জন্য আমি নিজে উদ্যোগী হয়েছি। বিশেষজ্ঞদের ফোন করে সদস্য হওয়ার জন্য আবেদনপত্র পাঠাতে বলেছি। সরকারি প্রক্রিয়া মেনে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা কমিটি গঠন করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy