উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।—ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দিল্লি থেকে কেউ ফিরলে তাকে কোয়রান্টিনে রাখা বাধ্যতামূলক— এই নির্দেশ দিয়েই দায় সেরেছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাস্তবে তা মানা হচ্ছে কিনা, তা দেখার লোক কোথায়? ফলে অভিযোগ উঠেছে, এই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখানোই এখন দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত শুক্রবার মুম্বই থেকে ফেরা দুই ক্যান্সার রোগী এবং সঙ্গে যাওয়া সব মিলিয়ে ৩ জনকে খড়িবাড়ি ব্লক স্বাস্থ্য দফতর থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠানো হয়। তাঁদের ‘কোয়রান্টিন’-এ থাকার কথা লিখেও দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে কোয়রান্টিনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়নি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল থেকে। বাধ্য হয়ে তাঁরা বাড়িতে ফিরে আসেন। তা নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। বাসিন্দাদের চাপে একদিন পর (শনিবার) ব্লক প্রশাসন থেকে তাঁদের বাতাসি কোয়রান্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে খড়িবাড়ির খোলটা বাজারের বাসিন্দা, ক্যান্সার আক্রান্ত এক মহিলার শরীরে সোমবার করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। তাতেই
টনক নড়েছে স্বাস্থ্য দফতরের। এখন তাঁর সংস্পর্শে কারা এসেছেন, তা খুঁজতে দৌঁড়ঝাপ শুরু হয়েছে। কোয়রান্টিনে রাখার নিয়ম কার্যকর করতে প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের উদাসীনতায় আতঙ্কে বাসিন্দারাও।
স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ধরনের সন্দেহভাজন রোগীদের আনা নেওয়ার জন্য একটি ১০২ অ্যাম্বুল্যান্স উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালকে দেওয়া হয়েছে। এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার বিষয়টি দেখভাল করবেন বলে ২১ মে নির্দেশ দেয় মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষই। তা হলে সেই গাড়িতে কেন ওই তিন জনকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হল না, তার কোনও সদুত্তর মেলেনি। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘কেন ওই রোগীদের পাঠানো হল না, বুঝতে পারছি না। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ উত্তরবঙ্গে করোনা মোকাবিলার বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘কেন এমন হল, খোঁজ নেব।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খড়িবাড়ির বাসিন্দা ওই মহিলা, তাঁর ছেলে এবং এলাকার আরেক জন ক্যান্সার রোগীর সঙ্গে ফাঁসিদেওয়ার আরও দু’জন মুম্বই গিয়েছিলেন। তাঁদের এক জনও ক্যান্সারের রোগী। তাঁরাও একই সঙ্গে ফিরে ফাঁসিদেওয়ার ঘোষপুকুরের আমবাড়ি এলাকায় তাঁদের বাড়িতে চলে যান। তাঁদের স্বাস্থ্য বা লালারস পরীক্ষা, কিছু হয়নি বলে দাবি। কোয়রান্টিনেও পাঠানো হয়নি বলে অভিযোগ। খড়িবাড়ির মহিলা এবং অন্য এক ব্যক্তি ক্যান্সার আক্রান্ত থাকায় কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে পরে তাঁদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছিল।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল থেকে ব্যবস্থা না-নেওয়ায় তাঁরা বাড়িতে ফিরলে মহিলার পরিচিতরা তাঁকে দেখতে বাড়িতে আসেন। অন্য ব্যক্তি বাজারেও ঘুরেছেন বলে অভিযোগ। তা নিয়ে এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত। মহিলার করোনা পজ়িটিভ জানার পরেও মঙ্গলবার এলাকায় ব্লক প্রশাসন বা স্বাস্থ্য দফতরের কাউকে বেলা পর্যন্ত দেখতে না পেয়ে
অসন্তোষ ছড়ায়। নিজেরাই এলাকায় বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে যাতায়াত বন্ধ করতে তৎপর হন বাসিন্দারা। এলাকায় যান মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি তাপস সরকার। তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসন, মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ দায়সারা কাজ করছেন।’’ প্রশাসনের তরফে কেউ কিছু বলতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy