শোকার্ত: নিহত জওয়ান রাজীব থাপার বাড়ির সামনে ভিড়। রবিবার কালচিনির মেচপাড়ায়। ছবি: নারায়ণ দে
দু’দিন ধরেই জমছিল আবেগ। রবিবার সকালে গ্রামের প্রিয় ছেলেকে কফিনবন্দী অবস্থায় সেনা জওয়ানদের কাঁধে চেপে হেলিকপ্টার থেকে নামতে দেখে সেই আবেগেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটল কালচিনির মেচপাড়ায়। চোখ মুছতে মুছতেই মাঠে তৈরি অস্থায়ী হেলিপ্যাডে জমা হওয়া ভিড় আওয়াজ তুলল, ‘‘ভারত মায়ের বীরপুত্র রাজীব থাপা অমর রহে। ভারত মাতা কি জয়!’’
শুক্রবার কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখায় ডিউটি করার সময় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করা পাক-সেনার গুলিতে নিহত হন গোর্খা রেজিমেন্টের জওয়ান রাজীব থাপা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও তাই এ দিন বারবার স্লোগানের মাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দেয় জনতা। বেংডুবির সেনা ছাউনি থেকে মেচপাড়ায় তৈরি অস্থায়ী হেলিপ্যাডে পৌঁছয় সেনার কপ্টার। কপ্টার থেকে দেহ নামিয়ে গান স্যালুট দেওয়ার পর রাজীবের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় দেহ। বাড়ির সামনে রাজীবের দেহ রাখার জন্য স্থানীয়রা অস্থায়ী একটি মঞ্চও তৈরি করেছিলেন।
তবে সেনা জওয়ানরা প্রথমেই রাজীবের দেহ তাঁদের বাড়ির একটি ঘরে নিয়ে যান। সেই ঘরে তখন তিলধারণের জায়গা নেই। শোকে পাথর হয়ে বসে রয়েছেন রাজীবের স্ত্রী খুশবু থাপা, মা রিনা থাপা ও বাবা কুমার থাপা। সেইসঙ্গে রাজীবের দিদিরা। রাজীবের দশ মাসের শিশুকন্যাকে কোলে নিয়ে বাড়ির নানা দিকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অন্য আত্মীয়রা। দেহ ঘরে নামাতেই কান্নার রোল পড়ে যায় গোটা বাড়িতে। বারবার জ্ঞান হারাতে থাকেন রাজীবের স্ত্রী। প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট ঘরে রাখার পর তাঁর দেহ বাড়ির সামনে অস্থায়ী মঞ্চে রাখা হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে সেখানে রাজীবকে শ্রদ্ধা জানান উপস্থিত নানা দলের নেতা-মন্ত্রীরা, আরও অসংখ্য সাধারণ মানুষ।
এরপরই রাজীবকে নিয়ে কাতারে কাতারে মানুষের শেষযাত্রা শুরু হয়। সেখানেও রাজীবের নামে জয়ধ্বনি তোলে জনতা। বাসরা নদীর শ্মশানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসন ও পুলিশের কর্তারা। তারপর সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় রাজীবের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy