প্রতীকী ছবি।
জলপাইগুড়ি পুরসভার দেনা বাড়তে বাড়তে ১৪ কোটি ছুঁয়েছে। মুদি দোকানের সরবরাহকারী থেকে ঠিকাদার— বাকি রয়েছে সব খাতেই। পুরসভা সূত্রের খবর, কর্মীদের বেতন থেকে কেটে রাখা প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ)-এর টাকা জমা না দিয়ে প্রায়ই তা ব্যবহার করা হচ্ছে ধার শোধ করতে। দেনার পরিমাণ এতটাই যে, তাতেও কুলোচ্ছে না বলে দাবি। পিএফ তহবিলের টাকায় তৈরি হয়েছে রাস্তা, নর্দমা। মেটানো হয়েছে মুদিখানার বিলও। এমনই দাবি পুরকর্মীদের একাংশের। পিএফ বকেয়া রাখার প্রবণতা শুরু কবে থেকে, তা নিয়ে বাম-কংগ্রেস-তৃণমূলের মধ্যে চাপান-উতোরও শুরু হয়েছে।
রাজ্য বা কেন্দ্রের বাঁধা-ধরা প্রকল্প ছাড়া, রাস্তা, নর্দমা থেকে বাড়ি— পুরসভা নিজের পরিকল্পনায় যা-ই তৈরি করুক না কেন, তার জন্য বোর্ডে প্রস্তাব পাশ করাতে হয়। কোনও প্রকল্প বোর্ডে অনুমোদন করাতে হলে, টাকার উৎসও দেখাতে হয়। যদিও পুরকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, নিজেদের ইচ্ছেমতো কাজ করাতে বা পছন্দের সংস্থাকে কাজ পাইয়ে দিতে অনুমোদন ছাড়া, দেদার কাজ শুরু হয়েছে। সে কাজের টাকা কোথা থেকে আসবে, তার হিসাব করা হয়নি। উদাহরণ— গত বছর পুরভোটের আগে পুরসভার প্রশাসক বোর্ড তড়িঘড়ি প্রায় পাঁচ কোটি টাকার কাজের বরাত দিয়েছিল। যার কোনও অনুমোদনই ছিল না। এই সব ‘অপরিকল্পিত’ এবং কার্যত ‘অনুমোদনহীন’ প্রকল্পের খরচ মেটাতেই কর্মীদের পিএফ তহবিলে হাত পড়েছে বলে অভিযোগ। পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী সংগঠনের সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কর্মীদের টাকা কেটে অনুমোদনহীন প্রকল্পে খরচ করাটা অপরাধ।’’
চলতি আর্থিক বছরের শেষের মুখে পুরসভার মোট দেনার পরিমাণ ১৪ কোটি টাকার ঘর ছুঁতে চলেছে। এই টাকা কী ভাবে শোধ হবে, তার রূপরেখা পুরসভার কাছে নেই বলেই দাবি। যদিও পছন্দের লোককে অনুমোদনহীন ভাবে কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ না মেনে পুরপ্রধান তৃণমূলের পাপিয়া পালের মন্তব্য, ‘‘আর্থিক সঙ্কট রয়েছে। বাম-আমলে মোটা দেনা করা হয়। আগের ঋণের বোঝা বইতে হচ্ছে। চেষ্টা করছি, স্বচ্ছতার সঙ্গে পুরসভা পরিচালনা করে সব দেনা শোধ করতে।’’
অভিযোগ উঠেছে আগের বাম এবং কংগ্রেস বোর্ডের বিরুদ্ধে। সিপিএম জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা প্রাক্তন সাংসদ জিতেন দাস বলেন, ‘‘বাম-আমলেও হয়তো পিএফ বকেয়া ছিল, কিন্তু পরিমাণ অল্প। হয়তো শোধ করতে দেরি হয়েছে। কিন্তু কর্মীদের টাকা কেটে পিএফে জমা করব না, তৃণমূলের মতো এমন মানসিকতা ছিল না।’’ জেলা কংগ্রেস সভাপতি পিনাকী সেনগুপ্ত উপ-পুরপ্রধান ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘দায়িত্ব নিলে, দায়ও নিতে হয়। ১৯৯৫ সালে কংগ্রেস যখন বোর্ডের দায়িত্ব নিয়েছিল, তখনও বাম বোর্ডের পাঁচ কোটি টাকা দেনার দায়িত্ব নিয়েছিলাম আমরা এবং সেই দেনা মিটিয়েছি। তৃণমূল অনুমোদন ছাড়াই কাজ করেছে, যা ঘোরতর অনিয়ম। এখন যা অবস্থা, তাতে হয়তো পুরসভা নিলাম করে দেনা শোধ করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy