নিহতের বাড়িতে মৌসম ও রব্বানি। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
গণপিটুনির জেরে মৃত সেনাউল শেখের দেহ নিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন কয়েকশো বাসিন্দা। রবিবার সকালে বৈষ্ণবনগরের ১৭ মাইল এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। অংশ নেন চকশেরদি কেতাবপাড়া এলাকার বাসিন্দারা।
অবরোধকারীদের দাবি, গণপিটুনির ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এদিকে, অবরোধের জেরে জাতীয় সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। সেইসময় সেখানে হাজির হন জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলম ও সুজাপুরের কংগ্রেসি বিধায়ক ইশা খান চৌধুরী-সহ একটি প্রতিনিধি দল। তাঁরাও সেই উত্তেজিত জনতাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। প্রায় একঘণ্টা টানাপড়েনের পর অবশ্য অবরোধ তুলে নিয়ে বাসিন্দারা মৃতদেহটি কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। কংগ্রেস নেতারা মৃত ওই যুবকের পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেন। এদিকে, সন্ধ্যা নাগাদ মৃত ওই যুবকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান পঞ্চায়েত দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী তথা তৃণমূলের মালদহ জেলার অন্যতম পর্যবেক্ষক গোলাম রব্বানি। ওই গণপিটুনির প্রতিবাদে বিকেল ৫টা থেকে কালিয়াচক চৌরঙ্গি মোড়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বসেন স্থানীয় কয়েকশো যুবক। তাঁরাও ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানায়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের খবর, গত ২৬ তারিখ দুপুরে মালদহের বৈষ্ণবনগর বাজারে সেনাউল শেখ নামে এক যুবককে বাইকচোর সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়া হয়। তাঁর বাড়ি বৈষ্ণবনগর থানারই চকশেরদি কেতাবপাড়া গ্রামে। খবর পেয়ে বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার স্থানীয় বেদরাবাদ গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করান। কিন্তু শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। কিন্তু এখানেও শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে সেইদিন রাতেই স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই গণপিটুনির ঘটনার পরই সেনাউলের মা সরিফা বিবির অভিযোগে একটি মামলা রুজু করে বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ।একজনকে গ্রেফতারও করা হয়।
এ দিকে, শুক্রবার কলকাতায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর জেরে পুলিশ সেই মামলার সঙ্গে খুনের মামলার ধারাও রুজু করে। এদিকে ওই যুবকের মৃত্যুর পর থেকেই সেই গণপিটুনির সময়ে তোলা ভিডিও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে শুরু করে। এর জেরে জোর উত্তেজনাও ছড়ায়। এদিকে, এদিন সকালে কফিনবন্দি সেনাউলের মৃতদেহ ফেরে বাড়িতে। তার আগেই গ্রামের কয়েকশো বাসিন্দা সেই মরদেহ নিয়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন।
সুজাপুরের বিধায়ক ইশা খান চৌধুরী বলেন, “চুরির অপবাদ দিয়ে সেনাউলকে নিষ্ঠুর ভাবে প্রহার করা হয়েছে সেদিন। যার জেরেই তাঁর মৃত্যু হয়। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করা উচিত। আমরা পুলিশের কাছে সেই দাবি জানিয়েছি।” কংগ্রেসের জেলা সভাপতিও একই দাবি জানান। এদিকে, সন্ধ্যা নাগাদ সেনাউলের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন মন্ত্রী গোলাম রব্বানি। তিনি বলেন, “সন্দেহের বশে আইন হাতে তুলে নেওয়া ঠিক নয়। পুলিশ বিষয়টি দেখছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।” পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy