প্রতীকী চিত্র।
মৃত ব্যক্তির নামে জমি বদলের অভিযোগ উঠেছে শিলিগুড়িতে। আরও অভিযোগ, সেই নামে অন্য একজনকে সাজিয়ে আনা হয়েছে সরকারি অফিসে। যার জমির নাম বদল হচ্ছে বলে অভিযোগ, তিনি তখন দেশেই ছিলেন না, দাবি করছে তাঁর পরিবার। এসব নাম বদলের কাজে নোটিস, শুনানি সব মিলিয়ে সাধারণত কয়েক মাস সময় লাগে। এখানে অভিযোগ, জমির নাম বদলের নোটিশ, শুনানি এবং নথিভুক্তকরণ সবই একদিনের মধ্যে হয়েছে। পরে আবার সেই জমি নতুন করে হাত বদলের চেষ্টারও অভিযোগ উঠেছে।
জমির যিনি আসল দাবিদার, তিনি সেই সময় ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে। তাঁর পাসপোর্টের তথ্যও বলছে সেই কথা। ফলে নাম বদলের নোটিস পাওয়া, হাজিরা দেওয়ার কোনও বিষয় তিনি জানতে পারেননি। পরে দেশে ফিরে সব জানতে পেরে হতবাক হয়ে যান তিনি। প্রতারণা করে জমি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, এমন অভিযোগ তুলে জেলা ভূমি রাজস্ব দফতরে চিঠি দেয় তাঁর পরিবার। বিচার না পেয়ে তিনি চলে যান কলকাতার ল্যান্ড ট্রাইব্যুনালে। তারপরে শিলিগুড়ির দুই মাইল লাগোয়া এলাকায় প্রায় ৩ কোটি টাকার ওই জমির বেআইনি হাতবদলের চেষ্টার সমস্ত তথ্য উঠে আসে। ওই ঘটনার জেরে শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত।
সম্প্রতি কলকাতায় রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের কাছেও অভিযোগ পৌঁছয়। তারপরে নড়েচড়ে বসে পুলিশও। অবশেষে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতির নির্দেশে রাজগঞ্জ ব্লকের প্রাক্তন এক ভূমি রাজস্ব আধিকারিকের নামে রাজগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের হয়। মামলার নথিতে অভিযুক্ত হিসেবে রাজগঞ্জ ব্লকের বিএলআরও-এর উল্লেখও রয়েছে। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর (কেস নম্বর ৩৩৫/১৮) পুলিশ ওই দুই আধিকারিক এবং আরও সাত জনের নামে প্রতারণা, নাম বদল করে জালিয়াতি এবং ষড়যন্ত্রের মামলা শুরু হয়েছে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েই মামলা রুজু হয়েছে। দু’জন ভূমি রাজস্ব আধিকারিক অন্যতম অভিযুক্ত।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগকারী হরমিত কৌর শহরের সেবক রোড এলাকার ব্যবসায়ী পরিবারের বধূ। শহরে তাঁদের একটি সিনেমা হলও রয়েছে। হরমিতের দাবি, ১৯৯৫ এবং ১৯৯৬ সালে তিনি এবং তাঁর স্বামী যশপাল সিংহ (বর্তমানে মৃত) রাজগঞ্জ ব্লকের ওই ২২ কাঠা জমি একমাত্র ছেলে প্রভজ্যোত সিংহের নামে কেনেন। রেজিস্ট্রি এবং জমি খতিয়ানভুক্তও হয়। ২০১৪ সালের এপ্রিল প্রভজ্যোত পড়াশুনোর জন্য সিডনি যান। পরে সেখান থেকে সিঙ্গাপুরে চলে যান। ২০১৫ সালে জুন মাসে তিনি দেশে ফেরন। এরমধ্যে যশপাল সিংহ মারা যান। নিজেদের জমির খোঁজ করতে করতে গিয়ে প্রভজ্যোত জানতে পারেন, ওই জমিটি অন্যের নামে নথিভুক্ত হয়ে গিয়েছে। দীর্ঘ দিন ভূমি রাজস্ব দফতরের চক্কর খাওয়ার পরে গত অগস্টে পরিবারটি স্টেট ল্যান্ড ট্রাইব্যুনালে যান। সেখানে সব পক্ষকে ডাকা শুরু হয়। সেখানে যার নামে জমিটি কেনা হয় বলে ভূমি রাজস্ব দফতর দাবি করছিল, তাঁর আত্মীয়েরা জানিয়ে দেন ওই ব্যক্তি ১৯৮৬ সালে মারা গিয়েছেন। তাঁর নাম ব্যবহার করে একাধিক দালাল ওই বেআইনি কারবারের চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
সরকারি কর্মীদের মধ্যে প্রথম অভিযুক্ত রাজগঞ্জের প্রাক্তন বিএলআরও প্রতিমা সুব্বা এখন কোচবিহারে কর্মরত। আর দ্বিতীয় অভিযুক্ত হিসাবে রাজগঞ্জের বিএলআরও লেখা হয়েছে। ওই পদে এখন আছেন রূপক চন্দ্র ভাওয়াল। দুই জনেরই বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে পারছি না।’’ হরমিত কৌরের আইনজীবী অভ্রজ্যোতি দাস বলেন, ‘‘অনেকের নাম তদন্তে আসবে। সকলের গ্রেফতার হওয়া উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy