Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

ডিম আনবেন, ছেলেকে বলেও ফিরলেন না 

ঘটনাস্থল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের মনোহরপুর। নিহতের বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর পাওয়ার হাউস লাগোয়া লখনউপাড়ায়। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার কাজ সেরে বাড়িতে ফেরার পর সন্ধেয় ফের বের হন উত্তম।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

বাপি মজুমদার
হরিশ্চন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৩৩
Share: Save:

ডিমের ঝোল দিয়ে ভাত খাবে বলে মায়ের কাছে বায়না ধরেছিল ছেলে। বাড়িতে ডিম না থাকায় তার বাবাকে আনতে বলার জন্য ছেলের হাতে ফোন ধরিয়ে দিয়েছিলেন মা। বাবাকে ফোন করে চারজনের জন্য চারটি ডিম নিয়ে আসতে বলেছিল ছেলে। সেটাই শেষ কথা। তারপর সারা রাতেও আর বাড়ি ফেরেননি বাবা উত্তম সাহা। বুধবার সকালে তাঁর ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ মিলল বাড়ি থেকে দূরে। পুলিশ জানিয়েছে, পেশায় দিনমজুর উত্তমকে খুন করা হয়েছে।

ঘটনাস্থল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের মনোহরপুর। নিহতের বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর পাওয়ার হাউস লাগোয়া লখনউপাড়ায়। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার কাজ সেরে বাড়িতে ফেরার পর সন্ধেয় ফের বের হন উত্তম। ঘণ্টাখানেক পর ছেলে হরি বাবাকে ফোন করে ডিম নিয়ে আসার আবদার জানায়। কিন্তু রাত বাড়তে থাকায় তিনি না ফেরায় তাঁকে ফোন করেন স্ত্রী রুক্মিণী। কিন্তু তখন আর ফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তারপর এ দিন সকালে বাড়ি থেকে সাত কিলোমিটার দূরে মাখনার জলাশয়ে তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। তাঁকে খুন করে জলাশয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

পরে মায়ের সঙ্গে থানায় হাজির হয় হরিও। বারবার তাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘বাবা তো ডিম নিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরবে বলেছিল। তাহলে বাবা মরে গেল কীভাবে।’’ সেই উত্তর খুঁজছে পুলিশও। নিরীহ এক দিনমজুরকে কে বা কারা খুন করল তা নিয়ে ধন্দে তারা। টাকাপয়সার গন্ডগোল, ত্রিকোণ প্রেম, নাকি অন্য কোনও কারণে তাঁকে খুন করা হয়েছে, সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার জেরে নিহতের পরিবারের পাশাপাশি এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি সঞ্জয়কুমার দাস বলেন, ‘‘মৃতের শরীরের একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ফলে উত্তমকে যে খুন করা হয়েছে তা নিশ্চিত। তবে ওঁকে কে বা কারা কেন খুন করল তা এখনও নিশ্চিত নয়। মোবাইল ফোনের কললিস্ট সহ পুলিশ সবকিছুই খতিয়ে দেখছে।’’

উত্তমের ১০ বছরের মেয়ে পুষ্পা ও ছেলে হরি। স্ত্রী রুক্মিণী বলেন, ‘‘ছেলেটা ডিম খাবে বলে বায়না ধরায় ফোন করতে বলেছিলাম। ওটাই শেষ কথা। তারপর কী এমন হল কে জানে। পুলিশ দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দিক এটাই চাই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Harishchandrapur Murder Daily Labourer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy