জলের জন্য লাইন। নিজস্ব চিত্র।
বাড়ছে শিলিগুড়ি শহর। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পানীয় জলের চাহিদা। বাম জমানায় ৩০টি ওয়ার্ডে সাড়ে তিন লক্ষ বাসিন্দার জল সরবরাহের জন্য যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল, তা দিয়েই বর্তমানে ৪৭টি ওয়ার্ডে ১০ লক্ষ মানুষকে জল সরবরাহ করা হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই চাহিদার তুলনায় জোগান অর্ধেক হওয়ায় একাধিক ওয়ার্ডে বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চাহিদামতো জল না পেয়ে। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘অম্রুত’ প্রকল্পের অধীনে নতুন জল প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও শেষ হতে সময় লাগবে। তাই সমস্যা কত দিন চলবে তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে নাগরিকদের।
নতুন প্রকল্পে দৈনিক ১৩৯ মিলিয়ন লিটার জল সরবরাহ সম্ভব হবে। বর্তমানে শিলিগুড়ি পুর-এলাকায় প্রতিদিন পানীয় জলের চাহিদা ১০০ মিলিয়ন লিটার। কয়েক বছর আগেও যে চাহিদা ছিল ৭০-৮০ মিলিয়ন লিটারের মতো। তাই ভবিষ্যতে বর্তমান নতুন প্রকল্পের মাধ্যমেও জলের চাহিদা মেটানো সম্ভব নয় বলেই মনে করা হচ্ছে।
শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘নতুন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। প্রথম পর্যায়ের পরে, দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজও দ্রুত শুরু হচ্ছে। এই প্রকল্প হলে পানীয় জলের সমস্যা মিটবে।’’ মেয়রের সংযোজন, ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাঁরা তৃতীয় প্রকল্পের ভাবনাচিন্তাও শুরু করেছেন।
বাম জমানায় করা ফুলবাড়ি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে প্রতিদিন ৫৫ মিলিয়ন লিটার জল মেলার কথা। বাস্তবে ৫২-৫৩ মিলিয়ন লিটারের বেশি মেলে না। তা ছাড়া, ওই প্রকল্পে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে শহরে জল পাঠানোর বিকল্প দ্বিতীয় পাইপলাইন নেই। নেই কয়েক দিনের জন্য জল মজুত করে রাখার মতো জলাশয়ও। সেই সঙ্গে দ্বিতীয় কোনও জল উত্তোলন কেন্দ্র (ইনটেক ওয়েল) ছিল না। তাতে ফুলবাড়িতে তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানাল, যেখান থেকে জল তোলা হয় তা সংস্কার করতে বা ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মেরামতির করতে হলে জল সরবরাহ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। শহরবাসীকে একাধিক বার তেমন দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। সম্প্রতি বর্তমান পুরবোর্ড বিকল্প ‘ইনটেক ওয়েল’ চালু করেছে। কয়েকটি ওয়ার্ডে গভীর নলকূপ বসেছে।
সিপিএমের শিলিগুড়ি পুরসভার পরিষদীয় নেতা মুন্সি নুরুল ইসলামের দাবি, ‘‘২০০৯ সালের আগে আমরা ২৮২ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের পরিকল্পনা রাজ্যকে পাঠাই। সে কাজ আমরা করতে পারিনি।’’ ২০০৯ সালে শিলিগুড়ি পুরবোর্ডে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসে। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলে তৃণমূল ক্ষমতায় আসে। পরের বছর তৎকালীন জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় শিলিগুড়িতে পানীয় জলের নতুন প্রকল্পে ৩০০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। নুরুল ইসলাম বলেন, ‘‘সে টাকা তৃণমূল সরকার দেয়নি। ২০১৫ সালে আমরা পুরসভায় ফিরে এলে মেয়র অশোক ভট্টাচার্য কেন্দ্রের কাছে পাঠানোর জন্য জল প্রকল্প রাজ্যকে দেন। কিন্তু রাজনীতি করতে সেই প্রকল্প পাঠানো হয়নি কেন্দ্রের কাছে। মানুষকে বঞ্চনা করা হয়েছে।’’
বিরোধী দলনেতা অমিত জৈনের অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্রের অধীনে যে নতুন জল প্রকল্পের কাজ শিলিগুড়িতে হচ্ছে তা কী করে শিলিগুড়ি পুরসভা করবে, বুঝতে পারছি না। কারণ, পুরসভার সেই পরিকাঠামো নেই। আদৌ শিলিগুড়ির মানুষ এই প্রকল্পের জল পাবেন কি না জানা নেই।’’ মেয়রের দাবি, কাজের জন্য পুরসভায় বাস্তুকার নিয়োগ করেছে রাজ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy