Advertisement
১২ ডিসেম্বর ২০২৪
Boroli Fish

বোরোলি বাড়ন্ত তোর্সা ও তিস্তায়

স্বাদের খ্যাতি যখন দেশ-বিদেশে ক্রমশই ছড়িয়ে পড়ছে। সেই সময়ই টান পড়েছে বোরোলির ‘ভাঁড়ারে’। পর্যটকেরা ডুয়ার্স বা কোচবিহারে এসেই খোঁজ করছেন বোরোলির।

বোরোলি মাছ।

বোরোলি মাছ। —ফাইল চিত্র।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৩২
Share: Save:

কথায় আছে, মাছের রাজা ‘ইলিশ’।

উত্তরবঙ্গ কিন্তু অন্য কথা বলে! সেখানে কান পাতলেই শোনা যায়, মাছের রাজা ‘বোরোলি’।

আকারে ছোট হলেও খাবারের পাতে ইলিশকে টেক্কা যে বোরোলি দেয়, সে কথা দাবি করেন উত্তরের অনেকেই। তা সে ভাপা হোক বা সর্ষে বাটা। আর যদি মচমচে ভাজার কথা বলা হয়, তবে বোরোলির ধারেকাছে আসতে পারবে না কেউ। শোনা যায়, কোচবিহারের মহারানি ইন্দিরা দেবী থেকে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রিয় মাছ ছিল বোরোলি। মহারানি যখন কলকাতা বা মুম্বইয়ে থাকতেন, তখন বিমানে করে বোরোলি পৌঁছে যেত সেই সব শহরে। এমনকি, রাষ্ট্রপতি ভবনেও যাত্রা করেছিল বোরোলি। রাজ্যের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য উত্তরবঙ্গ সফরে এলেই পাতে রাখতেন বোরোলি মাছ। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও প্রিয় মাছের তালিকায় রয়েছে বোরোলি।

তার স্বাদের খ্যাতি যখন দেশ-বিদেশে ক্রমশই ছড়িয়ে পড়ছে। সেই সময়ই টান পড়েছে বোরোলির ‘ভাঁড়ারে’। পর্যটকেরা ডুয়ার্স বা কোচবিহারে এসেই খোঁজ করছেন বোরোলির। অথচ, অনেক হোটেল-রেস্তোরাঁ হাত তুলে দিয়ে বলছেন, “বোরোলি আউট অব স্টক।’’ যাঁরা হাত তুলেছেন তাঁদের রান্নাঘরে খোঁজ মিলছে গঙ্গার বোরোলির।

তা হলে কোথায় গেল তোর্সা, তিস্তার বোরোলি?

উত্তরবঙ্গের বাজারে তোর্সা, তিস্তার বোরোলির কদরই বেশি। স্বাদে-গন্ধে দুই নদীর বোরোলি ‘অতুলনীয়’ বলেই মাছপ্রেমীদের দাবি। তুলনায় তোর্সার বোরোলি কিছুটা এগিয়ে বলেও অনেকের দাবি। এক সময় দুই নদী থেকে কেজির পরে কেজি বোরোলি মাছ উঠত। এখন অবশ্য বোরোলির দেখা পাওয়া খুব ভার। তোর্সার পারে বসবাস বহু মৎস্যজীবী পরিবারের। তাঁদের অনেকেই জানান, রাতভর জাল ফেলে এক কেজির বেশি বোরোলি মাছ পাওয়া যায় না। এমনকি, ভরা মরসুমেও জালে পড়ে বড়জোর দুই কেজি বোরোলি। কোনও কোনও দিন আবার একটি বোরোলিও জালে ধরা পড়ে না।

মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, বছর দশেক আগেও তোর্সায় মাসে অন্তত পক্ষে ১২৬ কেজির বেশি বোরোলি মাছ পাওয়া যেত। বর্তমানে পনেরো কেজির বেশি বোরোলি মাছও পাওয়া যায় না। মৎস্য দফতরের আধিকারিকেরা জানান, বোরোলি মাছের চাহিদা ও দাম বেশি থাকায় তা ধরতেই বেশি নজর সবার। যে কোনও উপায়ে ওই মাছ ধরতে গিয়ে বোরোলির ক্ষতি করে দেওয়া হয়েছে। বোরোলি মাছ ধরতে মশারি জাল ব্যবহার করা হচ্ছে। তাতে মাছের ডিম ও পোনার ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। কীটনাশক ব্যবহার করেও নদীতে মাছ ধরা হয়। এ ছাড়া, নদী দূষণও একটি বড় কারণ।

কোচবিহার জেলার ভারপ্রাপ্ত মৎস্য আধিকারিক প্রণব বিশ্বাস বলেন, “এক বার পুকুরে বোরোলি চাষ শুরু করা হয়েছিল, তা ফলপ্রসূ হয়নি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Cooch Behar Teesta River
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy