ফাইল চিত্র
দেশজোড়া লকডাউনে স্তব্ধ দেশ। হচ্ছে না কাজ, হাতে নেই টাকাও। তাই ভিন্রাজ্যে আটক শ্রমিকদের দিন কাটছে আধপেটা, একবেলা খেয়েই। সাহায্যের আশায় তাঁরা বারবার দ্বারস্থ হয়েছেন প্রশাসনের, আর্জি জানিয়েছিলেন সোশ্যাল মিডিয়াতেও। অনেকেই ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু শ্রমিকরা বলছেন, ‘‘তাতে তো আর পেট ভরে না।’’ এ অবস্থায় এরপর যদি লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়ে তা হলে কী হবে— প্রমাদ গুণছেন তেলঙ্গানায় আটক মালদহের প্রায় দেড়শো পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘সরকার তো সব বন্ধ করে দিল, কিন্তু আমাদের কথা কেউ ভাবল না। আমাদের কী করে চলবে, আর আমাদের পরিবারেরই বা কী হবে?’’
বাসিন্দারা জানালেন, এলাকায় কাজের অভাব, কিন্তু সংসার তো চালাতেই হবে। তাই মালদহের কালিয়াচকের মোজমপুর, সুজাপুর, বামনগ্রামের এই প্রায় ১৫০জন শ্রমিক বহুতল নির্মাণের জন্য তেলঙ্গানার রামচন্দ্রপুর থানার তেল্লাপুরে যান। পাঁচ মাস বা এক বছর আগে সেখানে গিয়ে কেউ রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করেছিলেন, কেউ আবার যোগানদার হিসেবে কাজ করতেন। যে সংস্থার হয়ে তাঁরা বহুতল নির্মাণ করছেন সেই সংস্থাই থাকার জন্য ঘর দিয়েছে। এক-একটি ঘরে অন্তত ১০ জন করে থাকেন। খাবারের ব্যবস্থা শ্রমিকদের নিজেদেরই করতে হয়।
শ্রমিকরা জানাচ্ছেন, এ ভাবে যে আচমকা দেশজুড়ে সব লকডাউন হয়ে যাবে তা তাঁরা ভাবতে পারেননি। লকডাউনের আগে বেশিরভাগ শ্রমিকই সংসার চালানোর জন্য ব্যাঙ্ক মারফত কিছু টাকা পাঠিয়েছিলেন। বাকি টাকা তাঁদের কাছেই ছিল। হঠাৎ কাজ বন্ধ হওয়ায় এখন সেই জমানো টাকা দিয়েই খাওয়া-খরচ চলছে। কিন্তু সেটাও প্রায় শেষ। কয়েকজনের হাতে সামান্য টাকা রয়েছে। তা দিয়েই কোনওমতে চলছে। কিন্তু এ ভাবে ক’দিন চলবে, এটাই প্রশ্ন তাঁদের।
মোজমপুরের শ্রমিক মোতাহার শেখ বলেন, ‘‘শুনলাম লকডাউন আরও বাড়বে। তাতে হয়ত রোগটা ছড়াবে না, কিন্তু আমরা কী করব!’’ আরিফ খান, কামালউদ্দিন শেখরা জানালেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে সব এলাকায় বিপদগ্রস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা প্রশাসন দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তাঁদের ক্ষোভ, তাঁদের পাশে কেউ নেই, নিজের রাজ্যই তাঁদের খোঁজ নিচ্ছে না। তাই তাঁদের দাবি, যে কোনও ভাবে তাঁদের তেল্লাপুর থেকে বাড়িতে ফিরে আনার ব্যবস্থা করা হোক।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা রাজ্য প্রশাসনের কাছে ভিন্রাজ্যে থাকা সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের তথ্য পাঠিয়েছি। রাজ্য প্রশাসনের তরফে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিতে যোগাযোগ করা হয়েছে। এই শ্রমিকদের বিষয়টি ফের জানানো হবে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy