প্রতীকী ছবি
বাড়ি বাড়ি রংয়ের কাজ করি। দৈনিক মজুরি হিসেবে টাকা পাই। তার সঙ্গে পুজো-পার্বণে ঢাক বাজাতাম। নিজে বেশি পড়তে পারিনি, তাই ভেবেছিলাম ছেলেমেয়েদের পড়াব। কিন্তু এই অভাবের জন্যই দুই ছেলেকেও ঠিক করে পড়াশোনা করাতে পারলাম না। কিন্তু এর মধ্যেই এল করোনা। সেই ২২ মার্চ থেকে শুরু। কাজকর্ম সব বন্ধ হয়ে আছে। সবাই বলছে নির্দিষ্ট সময়ে বাইরে বেরিয়ে, ভিড় এড়িয়ে খাবার কিনে আনতে। কিন্তু আমার মতো যাঁরা রোজের মজুরিতে কাজ করেন, আমাদের তো রোজগারই বন্ধ। আর টাকাই নেই, তা হলে কী কিনব, কী খাব?
সংসারের এই অবস্থা দেখে বড় ছেলে শঙ্কর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পরই কাজের খোঁজ শুরু করে দেয়। এখন ও বিয়ে বাড়িতে কামেরাম্যানের সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করেছে। ছোট ছেলেও দ্বিতীয় শ্রেণির পর থেকেই দাদার সঙ্গে কাজ শুরু করে দেয়। এখন তো ওদের কাজও বন্ধ হয়ে আছে। ছোট মেয়ে সঞ্চিতা মিলনময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। বড় আশা করে ওকে পড়াচ্ছিলাম। কিন্তু এর পর জানি না কী হবে। ছেলেমেয়েগুলোর মুখের দিকে তাকাতে পারি না।
রং মিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে কাজ করে দিনের শেষে ৩০০ টাকা মতো পেতাম। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল ছেলেদের রোজগার। তাই দিয়েই বছর দুয়েক ধরে পাঁচ জনের সংসার মোটামুটি চলে যাচ্ছিল। কিন্তু এই করোনাভাইরাসের জন্য লকডাউনে সব হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেল। ঘরে যা টাকা, চাল, ডাল মজুত ছিল দিন দশেকের মধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন খাবারের উৎস বলতে রেশনের চাল-গম। কালিয়াগঞ্জ পুরসভার তরফেও একবার ত্রাণ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শুধু ভাত-রুটি তো খাওয়া যায় না। আনাজও লাগে। টাকার অভাবে সেটাও কিনতে পারছি না। বড় ছেলে এক জনের কাছ থেকে ৫০০ টাকা ধার নিতে গিয়েছিল। উনি ধার দেননি, অবশ্য ওঁকেও আর দোষ দেব কী ভাবে, সবার তো একই অবস্থা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy