লকডাউনে: রায়গঞ্জে চলছে বিক্রিবাটা। (ডান দিকে) মিষ্টির দোকান খোলায় দোকানিকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। বালুরঘাটে। ছবি: চিরঞ্জীব দাস, অমিত মোহান্ত
পূর্ণ লকডাউনের দ্বিতীয় দিনেও ঘরবন্দি মালদহ ও দুই দিনাজপুরবাসী। তবে কিছু বাসিন্দার রাস্তায় বার হওয়ার প্রবণতা চলছেই। তাঁদের ঘরবন্দি করতে কোথাও লাঠি পেটা, কোথাও আবার চলছে পুলিশি ধরপাকড়ও।
মালদহ
ইংরেজবাজার: শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের লকডাউনের সকালে ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে শুনশান শহরের প্রাণকেন্দ্র রথবাড়ি। মুখে মাস্ক ছাড়াই হিন্দি গানের সুরে শিস দিতে দিতে সাইকেল প্যাডেল করছেন এক যুবক। উর্দিধারীরা পথ আটকাতই তাল কাটল। কোথায় যাচ্ছেন স্যর? যুবকের নিষ্পাপ জবাব, “একেই লকডাউন। তার উপরে বৃষ্টিতে মনোরম পরিবেশ। তাই রাস্তায় বেড়িয়েছি।” উত্তর শুনেই তাঁকে আটক করল পুলিশ। শহর মোটামুটি শুনশান থাকলেও ভোরের আলো ফুটতেই মোড়ে মোড়ে খুলে যায় চায়ের দোকান। পুলিশের টহল শুরু হতেই অবশ্য বন্ধ হয় দোকানের ঝাঁপ।
চাঁচল: কেটলিতে ফুটছে চা। আর গরম চায়ে চুমুক দিচ্ছেন কয়েক জন যুবক। লকডাউন চলছে তো? পুলিশ দেখেই বিক্রেতার উত্তর, ‘‘দু’দিন লকডাউন তা বেমালুম ভুলে গিয়েছিলাম।’’ তাঁর কথায় কান না দিয়ে সিলিন্ডার বাজেয়াপ্ত করে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চাঁচলের জালালপুরের মতো এমন ছবি লকডাউনের দ্বিতীয় দিনেও দেখা গিয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর, রতুয়া, পুখুরিয়া থানার একাধিক গ্রামীণ বাজারগুলিতে। তবে সকাল থেকেই সক্রিয় ছিল পুলিশ। লকডাউন ভাঙায় মহাকুমায় গ্রেফতার হয়েছেন ৬০ জন।
উত্তর দিনাজপুর
রায়গঞ্জ: মিষ্টি, আলুর দমের সঙ্গে হাতে গরম পরোটা। স্বাভাবিক দিনের মতোই পূর্ণ লকডাউনেও রায়গঞ্জ শহরে গরম পরোটার সুবাস ভাসতেই দোকানে হাজির পুলিশ। আর পুলিশ দেখে চম্পট দোকানি। লকডাউনের প্রথম দিনের তুলনায় এ দিন রাস্তায় মোটরবাইক, টোটো, ই-রিকশার সংখ্যা বেশি ছিল বলে অভিযোগ। এমনকি, মাস্ক না পরেই রাস্তায় দেখা যায় বহু মানুষকে। যদিও কড়া নজরদারি হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ইসলামপুর: ফুটপাতে আনাজের পসরা সাজিয়ে বসেছেন একদল বিক্রেতা। তাঁদের কারও মুখে মাস্কই নেই, কারও মাস্ক থুতনিতে। অভিযোগ, শহরের প্রধান দোকান-বাজার, রাস্তা-ঘাট বন্ধ থাকলেও ফুটপাতে অবাধে চলে কেনাবেচা। অলি-গলি দিয়ে দেদার চলে মোটর বাইক, টোটোয় যাতায়াত। পুলিশের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হন একাংশ শহরবাসী। যদিও দিনভর টহলদারি চালানো হয় বলে দাবি করেছেন পুলিশ কর্তারা।
দক্ষিণ দিনাজপুর
বালুরঘাট: রসগোল্লা মুখে দিতেই হাজির পুলিশ। পালাতে না পেরে পুলিশের জালে ধরা পড়ে গেলেন এক যুবক। শহরের সাধনা মোড়ে রসগোল্লা খেয়ে গ্রেফতারের ঘটনা এখন মুখে মুখে ফিরছে শহরবাসীর। গ্রেফতার হয়েছেন মিষ্টির দোকানের মালিকও। এ দিন সকাল থেকেই রাস্তায় নামে পুলিশ। গার্ডরেল দিয়ে ব্যারিকেড করে বিভিন্ন এলাকা আটকে দেওয়া হয়। সকালের দিকে রাস্তায় কিছুটা ভিড় থাকলেও বিকেলের পর শুনসান হয়ে যায় শহর। গ্রেফতার হয়েছেন ৩০ জন।
গঙ্গারামপুরঃ ‘‘টানা ২৪ ঘণ্টা বাড়িতে থেকে হাঁপিয়ে গিয়েছি। তাই সকালে একটু বেরিয়েছি।’’ ‘‘করোনা সংক্রমিত হতে না চাইলে এখনই ঢুকে পড়ুন বাড়িতে। একবার সংক্রমিত হলে ২৪ ঘণ্টা নয়, দিনের পর দিন ঘরবন্দি থাকতে হবে’’, পুলিশের মুখে এ কথা শুনে বাড়ির পথে হাঁটা দেন বুনিয়াদুপুরের বাসিন্দা রতন দেবনাথ। জটলা করে আড্ডা দিতে দেখা যায় অনেক যুবককে। পুলিশের অভিযান শুরু হতেই উধাও হয়ে যায় আড্ডা।
তথ্য সহায়তা: অভিজিৎ সাহা, বাপি মজুমদার, গৌর আচার্য, অভিজিৎ পাল, অনুপরতন মোহান্ত, নীহার বিশ্বাস
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy