প্রতীকী ছবি।
নমুনা পরীক্ষা বাড়িয়ে করোনা আক্রান্ত এবং তাঁদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে কোয়রান্টিন করতে হবে। জেলায় জেলায় করোনা নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এমনই। অভিযোগ, তা কার্যকর করতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে নমুনা পরীক্ষার হার আশানূরূপ বৃদ্ধি করতে না পারা।
শুরুতে দু’টি আরটিপিসিআর যন্ত্র ছিল ভরসা। সঙ্গে দু’টি ট্রুন্যাট এবং সিবিন্যাট যন্ত্রে হাতেগোনা জরুরি কিছু নমুনা পরীক্ষা হতো। তা দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ১৫০০-১৬০০টি নমুনা পরীক্ষা করা হতো উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ভাইরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড ডায়গন্যাস্টিক ল্যাবরেটরিতে। রোগ প্রতিরোধে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি করতে এরপর ক্রমেই পরিকাঠামো বাড়ানো হয়েছে এই ল্যাবরেটরির। অটোমেটেড আরএনএ এক্সট্রাক্টর আনা হয়েছে জুন মাসের আগেই। জুলাই মাসের মাঝামাঝি অটোমেটেড আরটিপিসিআর যন্ত্র এসেছে। তবে সেই তুলনায় পরীক্ষা বাড়েনি বলে অভিযোগ।
উল্টে, জুলাই মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রতিদিন নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছিল ৮০০টির মতো। গত এক সপ্তাহ ধরে তা বেড়ে প্রতিদিন ১৭০০-র মতো নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু সেটাও প্রয়োজনের তুলনায় কম। কারণ করোনা প্রতিরোধে বেশি সংখ্যায় নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করাটাই লক্ষ্য। সেই মতো উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পরিকাঠামো বাড়ানো হয়েছে। দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিক জানিয়েছিলেন, র্যাপিড কিট না-পেলেও প্রতিদিন যাতে আড়াই থেকে তিন হাজার নমুনা পরীক্ষা করা যায় সেই ব্যবস্থা করার জন্যই নতুন যন্ত্র আনা হয়েছে। অথচ তারপরেও পরীক্ষার হার বাড়েনি। ভিআরডিএল-এর চিকিৎসকদের একাশের দাবি, আগে পুল টেস্ট করে বেশি সংখ্যায় পরীক্ষা করা যেত। কয়েকজনের লালা মিশিয়ে একটি পুল করা হতো। পুল নেগেটিভ হলে সমস্ত নমুনা নেগেটিভ। কিন্তু পুল পজিটিভ হলে নমুনাগুলি আলাদা করে পরীক্ষা করে দেখতে হয়। কিন্তু পজিটিভ রোগী বাড়তে থাকায় পুল টেস্ট সম্ভব হচ্ছে না বলে চিকিৎসকদের একাংশের দাবি। মাঝে জেলাগুলো থেকে লালার নমুনা কম আসছিল। উপসর্গ নেই এমন সন্দেহভাজনদের পরীক্ষা করানো হচ্ছে না।
ব্যাপক হারে নমুনা পরীক্ষা বাড়াতে গত তিন দিন ধরে র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিটেও পরীক্ষার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। তবে তাতেও এখনও গতি আসেনি। উত্তরবঙ্গে করোনা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা আাধিকারিক তথা চিকিৎসক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘বেশিরভাগ জেলাগুলোতে ব্যবস্থা করে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। অ্যান্টিজেন কিটের মাধ্যমে পরীক্ষা চালু হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। আগের থেকে নমুনা পরীক্ষা অনেকটাই বেড়েছে। আরও বাড়বে।’’ তাঁর দাবি স্বাস্থ্য দফতর প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থাই করছে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রাক্তন প্রধান তথা অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক সমীর দাশগুপ্তের কথায়, ‘‘নমুনা পরীক্ষার হার বাড়িয়ে আক্রান্ত এবং তাঁর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে কোয়রান্টিন করতে হবে। তা না করতে পারলে রোগ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে। দিল্লিতে এই পদ্ধতিতেই রোগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে ‘অ্যাসিম্পটোমেটিক’ তথা উপসর্গহীন হয়ে যারা ঘুরে বেড়াচ্ছে তাঁদের চিহ্নিত করে আলাদা করা দরকার। পরীক্ষা যত বেশি করা যায় ততই ভাল।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy