Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
quarantine

ঘরে নেই কোয়রান্টিন সুবিধা, নেই সচেতনতা

পরিযায়ী শ্রমিক, দিনমজুরেরা অনেকে হোম কোয়রান্টিনের অর্থ বোঝেন না। আলাদা থাকা, আলাদা শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই।

আতঙ্কে: স্ক্রিনিং টেস্টের পরে ভিন্‌ রাজ্য থেকে আগতদের হাতে লিখে দেওয়া হচ্ছে এইচকিউ। গোয়ালপোখরে। নিজস্ব চিত্র

আতঙ্কে: স্ক্রিনিং টেস্টের পরে ভিন্‌ রাজ্য থেকে আগতদের হাতে লিখে দেওয়া হচ্ছে এইচকিউ। গোয়ালপোখরে। নিজস্ব চিত্র

মেহেদি হেদায়েতুল্লা
শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২০ ০২:৪৭
Share: Save:

ভিন্ রাজ্য থেকে উত্তর দিনাজপুরে ফেরা পাঁচ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে হোম কোয়রান্টিনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে বেশির ভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে স্ক্রিনিং টেস্টের পরে তাঁদের তথ্য লিপিবদ্ধ করে হাতে লিখে দেওয়া হচ্ছে ‘এইচকিউ’ অর্থাৎ হোম কোয়রান্টিন। তাঁদের বাড়িতেও সাঁটিয়ে দেওয়া হচ্ছে পোস্টার। কিন্তু অভিযোগ, তার পরেও এর মানেই বুঝতে পারছেন না অনেকে, ফলে নিয়মও মানছেন না। তাঁদের ধারণা, স্বাস্থ্য দফতর থেকে থার্মাল স্ক্রিনিং টেস্ট করিয়ে নেওয়া মানে তাঁদের শরীরে করোনা জীবাণু মেলেনি। ফলে অনেকেই বাইক নিয়ে দাপানো শুরু করছেন। কেউ বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে অবাধে মেলামেশা করছেন। একসঙ্গে আড্ডাও দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, বেশির ভাগ বাড়িতে কোয়রান্টিনে থাকার মতো পরিকাঠামোও নেই। এতেই উদ্বেগে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ।

উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ, ইটাহার, গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া, করণদিঘি এবং ইসলামপুর ও চোপড়া ব্লকের বেশ কিছু বাসিন্দা দিল্লি, মুম্বই, কেরল, বেঙ্গালুরু থেকে ফিরেছেন। কেউ নির্মাণ শ্রমিক, কেউ হোটেল-রেস্তরাঁয় কাজ করেন। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, গত সাত দিনে অন্য রাজ্য থেকে এই জেলায় ফিরেছেন কয়েক হাজার মানুষ। তাঁদের ১৪ দিন নজরদারিতে থাকতে বলা হয়েছে। কারও শরীরে করোনা উপসর্গ মিললে পাঠানো হবে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে।

কিন্তু তার পরেও বেশ কিছু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে— প্রশ্ন এক, পরিযায়ী শ্রমিক, দিনমজুরেরা অনেকে হোম কোয়রান্টিনের অর্থ বোঝেন না। আলাদা থাকা, আলাদা শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, তাঁরা তো পরিবারের সঙ্গেই থাকছেন। আর পরিবারেরর লোকজন বাইরে যাচ্ছেন। এখানেই ভয়। অনেকেই সতর্কতার বিধি পালন করছেন না। ফলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকছে। এ ধরনের মেলামেশা প্রতিরোধের করার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।

প্রশ্ন দুই। বাড়িতে পরিকাঠামো না থাকলে সরকারি কোয়রান্টিনে থাকার কথা বলা হচ্ছে। কিন্ত সরকারি কোয়ারান্টিন পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়নি। সে ভাবে তার প্রচারও হচ্ছে না।

অবশ্য জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের দাবি, প্রতিটা ব্লকে সরকারি কোয়রান্টিন ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রশ্ন তিন। স্ক্রিনিং টেস্ট করার সময় উপসর্গ হয়তো পাওয়া যায় না। কিন্তু করোনা জীবাণু থাকলে তার সংস্পর্শে এলে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এতে বিপদের সম্ভাবনা অনেক বেশি।

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, হোম কোয়রান্টিনের সঙ্গে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের থাকতে হলে তাঁদের বিপদ আরও বেশি। কারণ বয়স্কদের প্রতিরোধ করার ক্ষমতা সেই ভাবে থাকে না। এই বিষয়টি গুরত্ব দিয়ে দেখা উচিত। হোম কোয়রান্টিন বিষয়ে আরও সচেতন প্রয়োজন।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক আরএন প্রধান বলেন, “বাসিন্দাদের সচেতন করা হচ্ছে। বাইরে ঘুরলে কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে। যাঁদের বাড়িতে কোয়রান্টিন পরিকাঠামো নেই তাঁদের সরকারি কোয়রান্টিনে থাকার কথা বলা হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়মিত নজরদারি করছেন। হেল্প লাইন নম্বর দেওয়া হচ্ছে। তৈরি হয়েছে কুইক রেসপন্স টিম”।

অন্য বিষয়গুলি:

Home Quarantine Migrated Labours Novel Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy