প্রতীকী ছবি।
শহরে পুলিশের ঘরে আগেই ঢুকেছিল করোনা সংক্রমণ। এ বারে খোদ শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারি অর্থবের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জ্বরের সঙ্গে কিছু উপসর্গ থাকায় গত শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশ কমিশনারের লালারস কাওয়াখালি কোভিড হাসপাতালের মাধ্যমে টেস্টের জন্য পাঠানো হয়। বেশি রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি ল্যাব থেকে রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে।রাতেই বিষয়টি পুলিশ কমিশনার-সহ বিভিন্ন স্তরে জানিয়ে দেওয়া হয়। রাতেই তাঁকে বাংলোয় আলাদা করে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রবিবার তাঁর জ্বর অনেকটা কমেছে। আপাতত ক’দিন তিনি চিকিৎসকদের নজরদারিতে থাকছেন। প্রয়োজন হলেই তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হতে পারে। গত বৃহস্পতিবার আর এক আইপিএস শিলিগুড়ির প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার, বর্তমানে রাজ্য সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরবঙ্গের আইজি চেলিং সিমিক লেপচা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁকেও হোম আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। এর মধ্যে কমিশনারেটে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শিলিগুড়ি পুলিশের এক এসিপি-ও মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। কমিশনারেটের পুলিশ লাইনেও আক্রান্তের খবর রয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বিভিন্ন বাহিনীতে। বেংডুবি সেনা ছাউনিতে আক্রান্ত শতাধিক। সব মিলিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে প্রশাসনিক মহলে।
রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুলিশ মার্চ মাস থেকে ফ্রন্ট লাইনার হিসেবে কাজ করছে। সংক্রমণ যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে পুলিশকর্মীরা যে বাদ পড়বেন না, সেটা বোঝাই যাচ্ছিল। নিচু তলা থেকে উপর তলা অবধি অনেকেই আক্রান্ত হলেন। তবু আমরা কর্মীদের মনোবল চাঙা রাখতে বলছি। মানুষের স্বার্থে আমাদের কাজ করে যেতে হবে।’’
পুলিশের করোনা সেল এবং প্রশাসন সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি পুলিশে এখনও অবধি ৯১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ৭৫ জনের মতো হাসপাতাল থেকে ছু’টি পেয়ে বাড়িতে রয়েছেন। অনেকেই আবার কাজেও যোগ দিয়েছেন। এসিপি থেকে ইন্সপেক্টর, সাব ইন্সপেক্টর বা কনস্টেবল— সব স্তরেই সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ডগ স্কোয়াডের এক কনস্টেবলের সংক্রমণ দিয়েই পুলিশ কমিশনারেটে করোনা আক্রান্তের খবর সামনে আসে। এর পরে পুলিশ কমিশনারের দফতরের নীচে আইনি সেলেও আক্রান্ত হন একজন। ধীরে ধীরে শিলিগুড়ি, ভক্তিনগর, এনজেপি, প্রধাননগর থানা-সহ মাল্লাগুড়ি পুলিশ লাইন থেকে সংক্রমণের রিপোর্ট আসতে শুরু করে। একটা সময় পুলিশ কমিশনার নিজেই সরষের তেল নাকে ঘষে, দু’বেলা গরম জলে গার্গল করে একাধিক বার লাল চা খেয়ে পুলিশকর্মীদের কাজ করার পরামর্শ দেন। এবার তিনি নিজেই আক্রান্ত।
কমিশনারের বাংলো, অফিসে নিযুক্ত কর্মীদের পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। একই রকমভাবে সশস্ত্র বাহিনীতেও সংক্রমণ ছড়িয়েছে। সেখানকার অফিস বা কর্মীদের সঙ্গে কাজ করার সুবাদেই আইজি আক্রান্ত হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রের খবর, কমিশনারের শরীর গত কয়েক দিন ধরে ভাল যাচ্ছিল না। তিনি কমই অফিসে আসছিলেন। বাড়ির অফিসে নিয়মিত বসে কাজ করছিলেন।
পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীতেও সংক্রমণের ঘটনা বাড়ছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বেংডুবি থেকে বেশি সংক্রমণ ছড়ানোর রিপোর্ট আসছে। এলাকায় সেনা ছাউনি ছাড়াও বিরাট এলাকা জুড়ে সেনা আবাসন রয়েছে। গত বুধবার একদিনে ২৮টি সংক্রমণের রিপোর্ট আসে। তার আগে এবং পরে মিলিয়ে সংখ্যাটা রোজই বাড়ছে। ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী এবং প্রশাসনের তরফে এলাকায় বিশেষ নজরদারি চালু করা হয়েছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy