সচেতন: তরাই এলাকার একটি চা-বাগানে দূরত্ব বজায় রেখে শ্রমিকরা দাঁড়িয়ে। নিজস্ব চিত্র
শুরু থেকেই বিরোধিতায় সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, তাঁদের এবং স্থানীয় প্রশাসনকে অন্ধকারে রেখে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের কর্তারা সারি হাসপাতালে মৃত্যু হওয়া রোগীর শেষকৃত্য তোর্সার চরে করার সিদ্ধান্ত নেন। গ্রামবাসীদের দাবি, সে জন্যই রবিবার রাতে এত বড় ঘটনা ঘটে গেল শালকুমারের প্রধানপাড়ায়।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রবিবার দুপুরে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে কালচিনির বাসিন্দা এক বৃদ্ধকে আলিপুরদুয়ার আয়ুষ বা সারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বিকেলে বৃদ্ধের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। সোমবার অবশ্য সেই নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর।
কিন্তু শালকুমার-১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানপাড়ার তোর্সার চরে ওই বৃদ্ধের শেষকৃত্যের জন্য পুলিশ এলাকায় পৌঁছাতেই তাদের সঙ্গে জনতার খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। এর ফলে ২২ জন পুলিশ জখম হন। তাঁদের মধ্যে এক থানা ও এক ফাঁড়ির ওসি আছেন। এক সাব ইন্সপেক্টরের জখম গুরুতর। উত্তেজিত জনতা পুলিশের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। মাটি কাটার যন্ত্রটিও ভাঙচুর করা হয়। বেগতিক দেখে পুলিশ গুলি চালায় বলে অভিযোগ। তাতে সাহারুক আলম নামে স্থানীয় এক যুবক জখম হন বলেও দাবি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রধানপাড়ায় রবিবার রাতে হওয়া গোলমালের বীজটা লকডাউনের পরপরই রোপন করা হয়ে গিয়েছিল। স্থানীয় শালকুমার-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান বাবুল কারজি-র অভিযোগ, “আমি এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান। অথচ, আমাকে অন্ধকারে রেখে দিন পঁচিশ আগে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা সিদ্ধান্ত নেন, করোনা সন্দেহে কারও মৃত্যু হলে শেষকৃত্য হবে তোর্সার চরে একটি নির্দিষ্ট জায়গায়। তারও দশ-বারো দিন পর আবার তাঁরা এলাকায় আসেন। তখন আমায় বিষয়টি জানানো হয়। কিন্তু আমার সামনেই গ্রামবাসীরা বিষয়টি নিয়ে তাঁদের আপত্তির কথা জানিয়ে দেন। তখন প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছিল, শালকুমারে কেউ করোনা সন্দেহে মারা গেলে তাঁর শেষকৃত্যই শুধু ওখানে হবে। কিন্তু বাসিন্দাদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে এর প্রতিবাদে স্মারকলিপিও দেন।”
শালকুমার-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গণপতি নার্জিনারি বলেন, এত মানুষের আপত্তি সত্বেও রাতের অন্ধকারে এলাকায় এ ভাবে পুলিশের এক বৃদ্ধের দেহ শেষকৃত্যের জন্য যে ভাবে নিয়ে এসেছে, তা মানা যায় না। পুলিশ-প্রশাসনের উচিত ছিল, আগে সাধারণ মানুষকে বোঝানো। কিন্তু গত ২৫ দিনে তাঁরা সে সব করেননি।’’
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের থেকে পাওয়া রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই বিষয়টিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। বাসিন্দাদের আপত্তি নিয়ে এই মুহূর্তে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তারও তদন্ত করে দেখা হবে।’’ তবে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় কাউকে রেয়াত করা হবে না বলে জানিয়ে আলিপুরদুয়ারের এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘আইন তার নিজের পথেই চলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy