প্রতীকী ছবি।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ফের বেসামাল পরিযায়ী শ্রমিকেরা। কেউ কেউ টিকা নিয়ে আবার ফিরে গিয়েছেন, কেউ বা কাজে ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু বেশ কয়েকটি রাজ্য ফের কার্যত লকডাউন ঘোষণার পর ফের দিশেহারা তাঁরা। আবার কয়েক হাজার পথ হেঁটে বা রিকশা, সাইকেল চালিয়ে ফিরতে হবে না তো? যাঁরা ফিরে আসছেন, তাঁরাও রোজগার নিয়ে দুশ্চিন্তায়।
ইদের চার দিন আগে ছেলে-মেয়েদের জন্য নতুন পোশাক কিনে ভিন্ রাজ্য থেকে বাড়ি ফিরেছেন কালিয়াচকের বাসিন্দা খলিল শেখ। ইদ মিটতেই ফের ভিন্ রাজ্যে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। খলিল বলেন, “হাতে টাকা-পয়সা নেই। লকডাউনে বাড়িতে বসে সংসার চালানোই মুশকিল।” তাঁর মতোই দিশাহারা মালদহের লক্ষাধিক পরিযায়ী শ্রমিক। কালিয়াচক থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল থেকে বৈষ্ণবনগর- জেলার অধিকাংশ ব্লকেই বড় অংশের শ্রমিক ভিন্ রাজ্যে কাজ করে সংসার চালান। ইদের জন্য অধিকাংশ শ্রমিকই বাড়ি ফিরে এসেছেন। অনেকে আবার একাধিক ভিন্ রাজ্যে লকডাউন শুরু হতেই বাড়ি ফিরে আসেন মাস খানেক আগেই। হরিশ্চন্দ্রপুরের বাসিন্দা মতিউর শেখ বলেন, “ইদের জন্য বাড়ি ফিরে এসেছি। না হলে গতবারের মতো ভিন্ রাজ্যেই থাকতে হত।” রাজ্যের সেচ ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “ভিন্ রাজ্যে কোনও শ্রমিক আটকে রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জের বাসিন্দা বিষ্ণু রায় তিন মাস আগে গুজরাতে শ্রমিকের কাজে ফিরেছেন। লকডাউনের সময় প্রচুর টাকা খরচা করে প্রাণ হাতে করে ঘরে ফিরেছিলেন। কিন্তু এখানে কাজ না থাকায় ফের ভিন্ রাজ্যে পা বাড়াতে হয়েছে। কেবল বিষ্ণুই নয়, স্থানীয় সূত্রে খবর, জাকিরপুর, সমজিয়া, মোল্লাদিঘি এবং কুতুবপুর মিলিয়েই প্রায় হাজার দশেক শ্রমিক ফের পাড়ি দিয়েছিলেন মুম্বই, গোয়া এবং গুজরাতের দিকে। এবং ফের লকডাউনে সমস্যায় পড়েছেন। গত বছরের বিভীষিকার ছবিই ফের তাঁদের সামনে।
সাত মাস বাড়িতে থাকার পরে উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ার সূর্যাপুরের রঞ্জন মণ্ডল দিল্লিতে ফেরেন। জমে যাওয়া বাড়ি ভাড়া শোধ করেন ধার করে। কিন্তু আবারও বিপত্তি। তাঁর কথায়, ‘‘কারখানায় কম কাজ হচ্ছে। কাঁচামাল শেষ হয়েছে। ফলে কাজ বন্ধ। এলাকার এমন ৩০ জন শ্রমিক এখন সমস্যায়। পকেটে জমা টাকাও ফুরিয়ে গেছে। শেষ পর্যন্ত কী হয়, দেখা যাক!’’ গোয়ালপোখরের দেবীগঞ্জের রহিমুদ্দিন ফিরেছেন মুম্বই থেকে। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘গত বারের মতোই অবস্থা। মাস্ক, স্যানিটাইজ়ারও পাইনি।” ইদের পরে অনেকেই কাজে ফিরবেন বলে টিকিট কেটেও যেতে পারছেন না লকডাউনের জন্য।
তথ্য সহায়তা: শান্তশ্রী মজুমদার, অভিজিৎ সাহা এবং মেহেদি হেদায়েতুল্লা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy