Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

থাবা এ বার ফালাকাটায়

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এই চারজনের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ বলে জানানো হয়।

ষষ্ঠীর-বাজারে: বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারে। ছবি: নারায়ণ দে

ষষ্ঠীর-বাজারে: বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারে। ছবি: নারায়ণ দে

দেবব্রত ঘোষ ও পার্থ চক্রবর্তী
ফালাকাটা ও আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২০ ০৩:০২
Share: Save:

এ বার করোনার থাবা আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটায়। আক্রান্ত হলেন ওই ব্লকের চার বাসিন্দা। যাঁদের তিনজনকে দশদিন আগেই কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। বাকি একজন কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে ছাড়া পান বুধবার। ফলে এই চারজনের সংস্পর্শ থেকে বাকিদের কতটা সংক্রমণ ছড়িয়েছে তা নিয়ে আশঙ্কা শুরু হয়েছে। সেইসঙ্গে রিপোর্ট দেরিতে আসা কিংবা রিপোর্ট আসার আগেই কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে আবাসিকদের ছাড়া নিয়েও কোনও কোনও মহল প্রশ্ন তুলছে। এদিকে প্রশাসনের আবার দাবি, বৃহস্পতিবার চারজনকে শিলিগুড়িতে পাঠানোর আগে ট্রুন্যাট মেশিনে লালারস পরীক্ষা করে দেখা যায়, এই মুহূর্তে তাঁরা করোনা নেগেটিভ।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এই চারজনের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ বলে জানানো হয়। যাঁদের মধ্যে দুজন মহিলা ও দুজন পুরুষ। ফালাকাটা ব্লকের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের আলাদা আলাদা এলাকার বাসিন্দা তাঁরা। তাঁদের মধ্যে এক যুবক পরিযায়ী শ্রমিক, দিল্লিতে কাজ করতেন। ১৩ মে তিনি ফালাকাটা ফেরেন। একইদিনে বাকি তিনজন উত্তর দিনাজপুর, ময়নাগুড়ি ও বক্সিরহাটে নিজেদের আত্মীয়দের বাড়ি থেকে ফেরেন। সকলকেই কোয়রান্টিন সেন্টারে রাখা হয়। ১৬ মে তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর ১৯ মে রাজ্যের তিন জায়গা থেকে আসা দুই মহিলা-সহ তিনজনকে কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ, বাড়িতে ফিরে তাঁরা অনেকের সঙ্গে মেলামেশাও করেন। অন্যদিকে, বুধবার দিল্লি ফেরত যুবক কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে ছাড়া পেয়ে পেশায় ফল বিক্রেতা এক আত্মীয়ের বাড়ি যান। জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে বুধবারও তিনি ফল বিক্রি করেন বলে অভিযোগ।

বুধবার রাতে ১৬ মে পাঠানো লালারসের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল থেকে জেলায় পৌঁছয়। যাতে এই চারজনের রিপোর্ট পজ়িটিভ বলা হয়। এরপরই প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের অন্দরে হইচই শুরু হয়ে যায়। ওই চারজনের পাশাপাশি তাঁদের আত্মীয় আরও ২৪ জনকে বাড়ি থেকে তুলে ফালাকাটা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। বৃহস্পতিবার সেখান থেকে আক্রান্ত চারজনকে শিলিগুড়ির করোনা হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকিদের গ্রামীণ হাসপাতালেই কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। ফালাকাটার বিডিও সুপ্রতীক মজুমদার জানান, এদিন ফালাকাটার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ট্রুন্যাট মেশিনে ফের একবার চারজনের লালারস পরীক্ষা করা হয়। তাতে রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।

সেজন্য অবশ্য নতুন কোন ঝুকি নিতে চাইছে না প্রশাসন বা স্বাস্থ্য দফতর। বরং এই চারজন যে এলাকার বাসিন্দা সেই এলাকাগুলোকে কন্টেনমেন্ট জ়োন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, "শিলিগুড়ির করোনা হাসপাতালে ওই চারজনের আবার পরীক্ষার পর যে রিপোর্ট আসবে, সেটাই চূড়ান্ত বলে ধরা হবে।"

এই ঘটনায় মেডিক্যাল কলেজ থেকে রিপোর্ট দেরিতে আসা কিংবা রিপোর্ট আসার আগেই প্রত্যেককে কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে ছেড়ে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জেলার এক স্বাস্থ্য কর্তা বলেন, "এতদিন কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে কেউ এলে হোম কোয়রান্টিনের কথাই রাজ্য থেকে বলা হয়েছিল। কিন্তু ব্যতিক্রম হিসেবে আলিপুরদুয়ারে ছ’দিন কোয়রান্টিনে রাখা হচ্ছিল। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁদের ১৪ দিন কোয়রান্টিনে রাখা হচ্ছে। কিন্তু রিপোর্ট কবে আসবে, তার অপেক্ষা করে ১৪ দিনের বেশি তো কাউকে কোয়রান্টিনে রাখা সম্ভব নয়!

এর আগে আলিপুরদুয়ারে পরীক্ষার পর পাঁচজনের শরীরে করোনা ধরা পড়েছিল।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy