ঢিলেঢালা: স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগের সামনে রোগীর পরিজনদের অপেক্ষা। শনিবার সকালে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
মোটে আট মাস আগের কথা। ভুটান লাগোয়া আলিপুরদুয়ার জেলার জয়গাঁয় প্রতিদিনই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এমন সময় জ্বরে আক্রান্ত হল একই বাড়ির দুই শিশুকন্যা। বড়টির বয়স খুব বেশি হলে দশ। ছোটটি আট ছুঁই ছুঁই। দুই শিশুকে নিয়ে বাড়ির লোকজন ছুটলেন কালচিনির উত্তর লতাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখান থেকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে। সেখানেই বড়বোনের ধরা পড়ল ডেঙ্গি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে নিয়ে বাবা-মা ছুটলেন শিলিগুড়িতে। আর ছোট বোন পড়ে রইল জেলা হাসপাতালের বেডে।
গত বছর অগস্টের এই ঘটনার কথা এখনও মনে পড়ে জয়গাঁ গ্রাম পঞ্চায়েতে কর্মরত এক যুবকের। তাঁর কথায়, “বাচ্চা দুটো মেয়েকে নিয়ে সেই সময় কম হয়রানি হয়নি গোটা পরিবারটির। বড়মেয়েকে নিয়ে তো বাবা-মা ছুটে গিয়েছেন শিলিগুড়িতে। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে জেলা হাসপাতালে ভর্তি ছোট মেয়েটির দেখাশোনা এতদূর থেকে কে করবে, সেটাই বোঝা যাচ্ছিল না। শেষপর্যন্ত প্রতিদিন শিশুর বয়স্ক দিদিমাকে বাড়ি থেকে হাসপাতালে ছোটাছুটি করতে হয়।”
২০১৮ সালে ডেঙ্গি মারাত্মক আকার নিয়েছিল জয়গাঁয়। মশাবাহিত ওই রোগে এই ছোট্ট শহরে আড়াই হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হন। সরকারি ভাবে মৃত্যু হয় চারজনের। কিন্তু জয়গাঁ গ্রাম পঞ্চায়েতে কর্মরত ওই যুবক থেকে শুরু করে এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ২০১৮ সালের শিক্ষা নিয়েও জয়গাঁয় স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নতিতে কোনও পদক্ষেপই করেনি জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
ভুটান সীমান্ত লাগোয়া জয়গাঁ কার্যত উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় ‘বাণিজ্য শহর’ হিসেবে পরিচিত। খাতায়-কলমে যে জায়গায় বাস প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষের। কিন্তু বাস্তবে সেখানে থাকেন তারও কয়েকগুণ বেশি লোক। ভুটানের অনেক নাগরিকও এখানে বাড়ি ভাড়া করে থাকেন। গুরুত্বের কথা মাথায় রেখেই জয়গাঁয় একটি উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করে রাজ্য সরকার। তৈরি হয় আলাদা পুলিশ মহকুমা। কিন্তু এলাকার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, এখানে সাধারণ মানুষের ভরসা কেবল একটা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তাও সেখানে ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা মেলে না বলে অভিযোগ। যেতে হয় ২৫ কিলোমিটার দূরের উত্তর লতাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে। অভিযোগ, একটু গুরুতর সমস্যা হলে সেখান থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয় রোগীকে।
করোনাভাইরাসের কোনও লক্ষণ এখনও পর্যন্ত জয়গাঁয় নেই। আলিপুরদুয়ার জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘জয়গাঁয় একটি ৫০ শয্যার সাধারণ হাসপাতাল তৈরির প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy