লণ্ডভণ্ড: ঝড়ে ভেঙে গিয়েছে টিনের চালা। করণদিঘিতে। নিজস্ব চিত্র
বৈশাখের শুরুতেই কালবৈশাখীর দাপটে ক্ষতির মুখে উত্তর দিনাজপুর জেলা। মঙ্গলবার সাতসকালে ঝড়বৃষ্টিতে নষ্ট হল জেলার অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল— ভুট্টারও। করোনা-আতঙ্কের মধ্যেই তাতে উদ্বেগ বাড়ল। পাশাপাশি গৌড়বঙ্গের অন্য দুই জেলা, মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুরে লকডাউনে ঊর্ধমুখী আলুর দাম। এক মাসের মধ্যেই কেজি প্রতি আলুর দাম বেড়েছে পাঁচ-ছয় টাকা। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্য কাঁচা আনাজের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকায় একটু স্বস্তিতে সাধারণ মানুষ।
উত্তর দিনাজপুর
কালবৈশাখী ঝড়ে জেলার বিভিন্ন ব্লকে ভুট্টা চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আম ও লিচুরও আংশিক ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝড়ে জেলার প্রায় দু’হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত। অনেকে খোলা আকাশের নীচে রয়েছেন। শুরু হয়েছে ত্রাণ বিলি।
এ দিকে, ভুট্টা কাটার ঠিক আগে ঝড়বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতিতে মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের। তাঁরা জানিয়েছেন, কোথাও ঝড়ে গাছ খেতে নুইয়ে পড়েছে, কোথাও ঝরে পড়েছে পাকা ভুট্টা। কোথাও খেত প্রায় ডুবুডুবু বৃষ্টির জলে। কয়েক দিন ধরেই জমিতে ভুট্টা কাটতে শুরু করেছেন চাষিরা। তবে যে পরিমাণ ভুট্টা কাটা হয়েছে তা খুব সামান্যই। লকডাউনের জেরে ভুট্টা কাটার লোক না মেলায় এমনিতেই চিন্তায় ছিলেন চাষিরা। ফসল কাটার মুখে ক্ষতির মুখে পড়ে কার্যত দিশাহারা তাঁরা।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, উত্তর দিনাজপুরে ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়। করণদিঘির ভুট্টা চাষি রাজেন সিংহ দু’বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘খেতে গাছ নুইয়ে পড়েছে। লকডাউনে ফসল কাটার শ্রমিক পাইনি। শেষ সময়ে যা হল তাতে পথে বসতে হবে।’’
জেলা কৃষি দফতরের আধিকারিক বিপ্লব ঘোষ বলেন, ‘‘এই সময়ে ঝড়ে গাছ খেতে নুইয়ে পড়লে বা ভুট্টা ঝরে পড়লে ক্ষতি হবে। খেতে জল জমলে তো আরও বেশি ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। বিভিন্ন ব্লকের রিপোর্ট পেলেই ক্ষতির পরিমাণ বোঝা যাবে।’’ গোয়ালপোখরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী গোলাম রব্বানি বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
দক্ষিণ দিনাজপুর
মার্চ মাসে আলুর খুচরো দর ছিল ১৫-১৬ টাকা প্রতি কেজি। লকডাউনের মধ্যে রাজ্য সরকার স্কুলে মিড-ডে মিল হিসেবে পড়ুয়াদের চালের সঙ্গে আলু বিতরণ করার কথা ঘোষণা করে। সরকার সেই আলুর দর ঠিক করে কেজি প্রতি ১৮ টাকা। অভিযোগ, তার পরে খুচরো বাজারেও আলু ১৮ টাকায় পৌঁছে যায়৷ লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির জেরে বাসিন্দাদের মধ্যে খাবার মজুত করার ধুম পড়ে। আলুর চাহিদাও বেড়ে যায়। মিড-ডে মিল এবং ত্রাণের জন্যও প্রচুর পরিমাণ আলুর প্রয়োজন পড়ে। জেলাবাসীর একাংশের নালিশ, এ সবের জেরে এখন আলুর দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি কেজিতে ২০-২২ টাকা। ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, এখনই আলুর দামে নাগাল না পড়ালে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তা ৩০ টাকা ছুঁয়ে যাবে এমনিতেই লকডাউনে কাজ হারিয়ে অনটনে পড়েছেন অনেকে। তার উপরে আলুর মতো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় আনাজের দাম বেড়ে গেলে প্রবল সমস্যায় পড়তে পারেন তাঁরা। এই অবস্থায় ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে দ্রুত আলুর দর নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের তরফে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy