Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Sushil Modi

রাজ-ইতিহাস নিয়ে সুশীলের মন্তব্যে শুরু শোরগোল

কোচবিহারে বুধবার সাংগঠনিক কর্মসূচিতে আসেন সুশীল। কর্মসূচির ফাঁকে কোচবিহার রাজবাড়ি ঘুরে দেখেন। সেখানেই রাজ-ইতিহাস সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

An image of the protest

প্রতিবাদ: সুশীল মোদীর বক্তব্যের প্রতিবাদে আন্দোলনে তৃণমূল। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৩ ০৮:২১
Share: Save:

কোচবিহারে এসে সকালে রাজবাড়ি ঘুরে দেখে রাজ-ইতিহাস সম্পর্কে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ সুশীল মোদী। তবে তাঁর মন্তব্য নিয়ে তৃণমূল আন্দোলনে নামতে, সন্ধ্যায় প্রায় ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন তিনি।

কোচবিহারে বুধবার সাংগঠনিক কর্মসূচিতে আসেন সুশীল। কর্মসূচির ফাঁকে কোচবিহার রাজবাড়ি ঘুরে দেখেন। সেখানেই রাজ-ইতিহাস সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সে সময় ওই নেতার পাশে থাকা কোচবিহারের দুই বিজেপি বিধায়কও মৌনী ছিলেন বলে অভিযোগ। জেলা বিজেপি নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, সুশীল মোদীর বক্তব্যের ‘ভুল ব্যাখ্যা’ হচ্ছে। সুশীলও পরে দাবি করেন, তিনি কোচবিহারের রাজাদের প্রসঙ্গে কিছু বলেননি।

সুশীল সকালে বলেন, “ওই জমানায় অধিকাংশ মহারাজার জনগণের ব্যাপারে ভাবনা ছিল না। তাঁরা জনগণের থেকে জোর করে কর আদায় করে নিজেরা বিলাসবহুল জীবন যাপন করতেন।” কোচবিহারের রাজকন্যা তথা জয়পুরের মহারানি গায়ত্রী দেবীর নির্বাচনে লড়া নিয়েও ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ।

কোচবিহারের রাজবাড়ি চত্বরে দাঁড়িয়ে তাঁর সে সব মন্তব্য জানাজানি হতেই আসরে নামে তৃণমূল। রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “কোচবিহারের মহারাজারা ছিলেন প্রজাবৎসল। প্রজাদের স্বার্থে তাঁরা কোচবিহারকে সাজিয়ে তুলেছেন, পরিকল্পনা করেছেন। মহারাজাদের নিয়ে মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করেছেন ওই বিজেপি নেতা।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, “কোচবিহারে রাজপ্রাসাদের সামনে দাঁড়িয়ে প্রজাবৎসল মহারাজাদের নিয়ে অসম্মানকর বক্তব্য করেছেন সুশীল মোদী। গায়ত্রী দেবী সম্পর্কেও কুরুচিকর মন্তব্য করা হয়েছে। তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে। না হলে, ভয়ঙ্কর আন্দোলন হবে। পাশে দুই বিধায়ক মৌনী ছিলেন। তাঁদেরও ছেড়ে কথা বলা হবে না।”

বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক সুকুমার রায় ছিলেন সুশীল মোদীর সঙ্গে। তাঁর দাবি, “ওই বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। রাজাদের আয় বিষয়ক প্রশ্নের উত্তরে করের কথা বলা হয়। সেটাও অন্য রাজাদের প্রসঙ্গে। কোচবিহার নিয়ে বলেননি।” সুশীলের এক সঙ্গী বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “কোচবিহারের মহারাজাদের প্রজাবৎসল হিসেবেই জানি। উনি তাঁদের কথা বলতে চাননি। অন্য রাজাদের প্রসঙ্গে বলেন। কারও ভাবাবেগে আঘাত লেগে থাকলে, আমরা দুঃখিত।” বিজেপির জেলা সম্পাদক অজয় সাহা সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘কোচবিহারের মহারাজাদের ইতিহাস না জেনে বলায় এক জন নাগরিক হিসেবে লজ্জিত। প্রকৃত বিজেপি কর্মী হিসেবে কোচবিহারবাসীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী’।

এ দিন সন্ধ্যায় রাজবাড়ির সামনে এবং শহরের স্টেশন মোড়ে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। মিছিলও করে তারা।

রাতে বিজেপির কোচবিহার জেলা কার্যালয়ে সুশীল মোদী সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেন, ‘‘আমি কোচবিহারের মহারাজাদের সম্পর্কে বলিনি। তাঁরা কর প্রজাদের কল্যাণে খরচ করেছেন। দেশে খুব কম মহারাজা প্রজাদের জন্য এত কাজ করেছেন।’’ তাঁর দাবি, তিনি অন্য মহারাজাদের নিয়ে সাধারণ ভাবে একটি মন্তব্য করেছেন। এ দিন মাথাভাঙা ২ ব্লকের নিশিগঞ্জ নেতাজি সুভাষ সদনে বিজেপির মাথাভাঙা বিধানসভার সংযুক্ত মোর্চার সম্মেলন হয়। সেখানেও সুশীল বলেন, ‘‘কোচবিহারের রাজকন্যা গায়ত্রী দেবী সাংসদ হয়েছেন। তিনি জয়পুরে রাজমাতা হিসাবে পরিচিত।’’

তৃণমূলের অবশ্য দাবি, সুশীল মোদী এব‌ং বিজেপির জেলা নেতাদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। সুশীল মন্তব্যেরঅন্য ব্যাখ্যা করলেও, জনতা যা বোঝার, বুঝে গিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Sushil Modi controversy TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy