নিশীথ প্রামাণিক। — ফাইল চিত্র।
যে নিশীথ প্রামাণিককে এক সময়ে দল থেকে বহিস্কার করেছিল তৃণমূল, তাঁকেই আবার দলে যোগদানের জন্য ‘আহ্বান’ জানানো ঘিরে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। ঘটনার সূত্রপাত নিশীথের একটি বক্তব্য ঘিরে। নিশীথ বর্তমানে কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী। শনিবার বিজেপির কোচবিহার জেলা পার্টি অফিসে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান হয়। সেখানে নিশীথ তৃণমূলের কোচবিহার জেলার বর্তমান সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব কোচবিহার জেলার নেতাদের উপরে আস্থা রাখতে পারছেন না। তাই দলে বার বার পরিবর্তন আনছেন। তবে এখন যাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, অভিজিৎ দে ভৌমিক, হিপ্পি দা, তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছি। তিনি ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন। আশা রাখি আগামী প্রজন্মকে আমরা স্বচ্ছ রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম দিতে পারব। যুব সমাজ যাঁরা দেশের জন্য কিছু করতে চান, তাঁরা প্ল্যাটফর্ম পাবেন।’’ নিশীথ তৃণমূলের কোচবিহার জেলার পুরনো নেতৃত্বের সমালোচনাও করেন।
নিশীথের ওই বক্তব্যের পরেই হইচই শুরু হয়। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, ‘‘নিশীথ প্রামাণিক যদি আমার সৌজন্যে আস্থা রাখেন, তাহলে আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করে দলে যোগদান করুন।’’
রবিবার কোচবিহার সার্কিট হাউজ়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্রর সঙ্গে দেখা করেন তৃণমুলের রাজ্য সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দলের জেলা সভাপতির উপর যদি আস্থা রাখেন, তাহলে তিনি (নিশীথ) আমাদের দলে যোগদান করুন। তবে এটুকু বলতে পারি, বিজেপি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছে। আগামীদিনে অস্তিত্ব থাকবে না।’’
নিশীথ এক সময়ে যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তখন দলে গোষ্ঠী বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। মূল তৃণমূল ও যুব তৃণমূলের বিরোধ ঘিরে অস্থির হয়ে ওঠে কোচবিহার। পরে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন নিশীথ। কোচবিহার আসনে নিশীথকে প্রার্থী করে বিজেপি। ভোটে জিতে তিনি সাংসদ ও পরে মন্ত্রী হন। তখন কোচবিহারে বিজেপির সংগঠন শক্তিশালী হয়। অনেকে দাবি করেন, বিজেপি শক্তিশালী ও তৃনমূলের দুর্বল হয়ে পড়ার পিছনে নিশীথের বড় ভূমিকা রয়েছে। সেই নিশীথের গলায় এ বার তৃণমূল জেলা সভাপতির প্রশংসা শোনা গিয়েছে। বিজেপির অবশ্য দাবি, নিশীথ তৃণমুলের সমালোচনা করেছেন। তৃণমূল যে আর বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারবে না, তা উল্লেখ করেন তিনি। কোচবিহারে তৃণমূল যে ভাবে খারাপ রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করেছে, তাদের পুরনো বেশ কয়েকজন নেতার অহঙ্কার ও অসৌজন্যমূলক আচরণ তৈরি হয়েছিল, তার বিরুদ্ধে বলেছেন। তার তুলনা করতে গিয়েই অভিজিৎ সে রাস্তায় যাবে না বলে আশা প্রকাশ করেছেন। বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, ‘‘আমাদের মন্ত্রী স্পষ্টই সব বলেছেন।’’ তৃণমূলের কোচবিহার জেলার এক নেতা বলেন, ‘‘কেউ পুরনো ভুল সংশোধন করে দলে ফিরলে তো অসুবিধার কিছু নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy